শহরের ফাস্টফুড গ্রামেও পৌঁছে দিচ্ছেন উদ্যোক্তা

0

গল্পটি যখন শুধুই তিন বোনের ভালোবাসার। যখন স্বপ্নগুলো সত্যি হয় তখনই গল্পটি হয়ে উঠে অসাধারণ। এই অসাধারন গল্পটি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামে। তিন বোন জাকিয়া আফরোজ চয়ন, জুলিয়া আফরোজ নয়ন, নুসরাত জেরিন অয়ন।

করোনাকালীন সময়ে সবার ঘরে আটকে পরা, শহরে যেতে না পারা, শহুরে খাবার খেতে না পারার যে হতাশা কাজ করছিল তাদের মধ্যে সেটাই তাদের ভাবিয়ে তুলেছিল। একটা পুরনো ওভেন ছিলো মনে হলো সেটা দিয়ে একটা কিছু করা যাবে। তাই সেই পুরনো ওভেনকে কাজে লাগিয়ে ইউটিউবে ফাস্টফুড রেসিপি দেখে শিখে নেয়া এবং উদ্যোক্তা হয়ে উঠা।

গ্রামের মানুষ বিশেষ করে তরুণ তরুণীদের শহুরে খাবারের প্রতি খুব আগ্রহ। আর তাই পিৎজা, বার্গারের অর্ডার চলে আসলো হুরহুর করে। মাত্র ২৫০০ টাকা নিয়ে শুরু করেন এই স্বপ্ন পুরনের যাত্রায়। তিন বোন আর বাবা মা মিলে শুরু করেন তামাই ফুড কার্ট (টিএফসি)।

গত বছর ৯ই ডিসেম্বর টিএফসির যাত্রা শুরু। বাসার কিচেন থেকে টিএফসি’র পথচলা শুরু। অনলাইনে অর্ডার আসলে বাবা ডেলিভারির কাজটি সামলাতেন। তিন বোন আর মা মিলে খাবার তৈরীর কাজটি করতেন। সেই টিএফসি তে এখন নিজেরা সহ আঠারো জন কর্মী। আলাদা একটি অফিসও নেয়া হয়েছে। টিএফসি তে তৈরী খাবার তামাই গ্রাম যেমন এনায়েতপুর, বেতিলের মধ্যে স্বীমাবদ্ধ থাকলেও এখন সিরাজগঞ্জ জেলা শহরেও হরহামেশাই ডেলেভারি হচ্ছে।

পিৎজা, বার্গারের সাথে যুক্ত হয়েছে নানা দেশীয় খাবার যেমন ভাত, বিভিন্ন রকম ভর্তা, খিচুড়ি, ইলিশমাছ। এ প্রসঙ্গে বড় বোন যিনি প্রধান শেফ হিসাবে কাজ করছেন জাকিয়া আফরোজ চয়ন জানান “আমি আসলে আবহাওয়া অনুযায়ী খাবার তৈরী করি তাতে করে আমার ক্রেতারা খুব খুশী হন।

ছোটবেলা থেকে বাবাকে দেখেছেন ব্যবসা করতে অনেক সময় বাবা ভালো করতো, অনেক সময় ব্যবসায় অনেক লস হতো। করোনাকালীন সময়ে বাবার ব্যবসাতে অনেক বড় লস হয় তাই এই টিএফসি তাদের পুরো পরিবারকে ঘুরে দাড়াতে সহায়তা করেছে। এখন পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে উদ্যোক্তা চয়ন জানান, তাকে দেখে অনেকে সাহস পাচ্ছেন তার জন্য এটাই অনেক কিছু। ইচ্ছাশক্তি প্রবল থাকলে সবই সম্ভব।গ্রামের মেয়েরা ফুড বিজনেস করবে এটা কেউ ভাবেনি আগে।

তার আউটলেট আছে এখন তামাই তে আর একটি আউটলেট উল্লাপাড়ায় হচ্ছে খুব শীগগিরই। তার ইচ্ছা সিরাজগন্জের বিভিন্ন উপজেলায় আউটলেইট দিবেন সেই সাথে সাথে উত্তরবঙ্গে অনেকগুলো আউটলেট দেয়ার ইচ্ছা। শুধুমাত্র ইচ্ছাশক্তির জোড়ে সবকিছু সম্ভব সেটা তিন বোন আবারও প্রমান করলেন।

মাসুমা শারমিন সুমি
উদ্যোক্তা বার্তা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here