রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, আমাদের মেধাবী তরুণেরা বাহিরে কাজ করছে, কিন্তু তাদের যথাযথ কাজের সুযোগ তৈরি করে দিলে তারা দেশেই কাজ করবে।

বৃহস্পতিবার রাতে ১৬তম বেসিস সফটএক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

ট্রান্সফর্মিং লাইফ থ্রু ইনোভেশন স্লোগান নিয়ে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি)-তে শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী দক্ষিণ এশিয়ার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতভিত্তিক সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ১৬তম বেসিস সফটএক্সপো ২০২০। প্রদর্শনীটি চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, স্থানীয় সফটওয়্যার অর্থাৎ মেইড ইন বাংলাদেশ ধারণাকে উৎসাহিত করতে হবে। সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে দাতা সংস্থার সহায়তার বাস্তবায়িত প্রকল্পে স্থানীয় সফটওয়্যার কোম্পানি গুলোকে সুযোগ দিতে হবে।

একইসাথে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি ছোট বড় প্রকল্পে স্থানীয় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে সুযোগ দিতে হবে, এ ব্যাপারে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়েরও এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি প্রযুক্তির অপব্যবহার, সাইবার ক্রাইম বিষয়ে সকলকে কার্যকারী পদক্ষেপ নিতে ও সচেতন হতে এই আয়োজন আমাদের সহযোগিতা করবে।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন: তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব এখন এগিয়ে যাচ্ছে। এর সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহণ করেছে, এবং তা বাস্তবায়ন করছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সাথে তাল মেলাতে আমাদের তরুণ সমাজকে কাজে লাগাতে হবে কারণ তারাই আমাদের সম্পদ। আমাদের মেধাবী তরুণরা বাহিরে কাজ করছে , যথাযথ সুযোগ তৈরি করতে পারলে এরা দেশেই কাজ করতে পারবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বেসিসের এই আয়োজন সরকারের জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ তৈরির কাজে এগিয়ে যাবে। দেশে তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ছে আর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদেকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে। বর্তমানে দেশের ৯৬ শতাংশ পরিবারে মোবাইল ব্যবহার করছে। বাঙালীরা মেধাবী, বিশ্বের দরবারে বাঙালীরা তাদের মেধার পরিচয় রেখেছে।

তিনি আরও বলেন, সফটওয়্যার রপ্তানির পরিমাণ বাড়বে। আইটিতে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি হলে তা দিয়ে দেশের বাইরে জনশক্তি রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন সম্ভব। আমাদের ভৌগলিক সুবিধা এবং তরুণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আউটসোর্সিংয়েও বাংলাদেশ আরও ভালো করতে পারবে।

জানা যায়, প্রদর্শনী এলাকাকে দশটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ জোন এবং এক্সপেরিয়েন্স জোন বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরবে। রয়েছে ভ্যাট জোন, ডিজিটাল এডুকেশন জোন, ফিনটেক জোন, উইমেন জোন এবং বরাবরের মতো রয়েছে সফটওয়্যার সেবা প্রদর্শনী জোন, উদ্ভাবনী মোবাইল সেবা জোন, ডিজিটাল কমার্স জোন, আইটিইএস ও বিপিও জোন। থাকবে ৩০টিরও বেশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সেমিনার, যেখানে বক্তব্য রাখবেন শতাধিক দেশি-বিদেশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।

এবারের বেসিস সফটএক্সপোতে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্যে থাকছে বি-টু-বি ম্যাচমেকিং সেশন, যার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা নিজেদের খুব সহজেই ব্যবসার প্রসার করতে পারবেন। এ বছর সুইডেন, জাপান, নেদারল্যান্ডস থেকে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বিটুবি ম্যাচমেকিং সেশনে অংশ নেবে। পাশাপাশি অন্য খাত থেকে বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সফলভাবে বিটুবি সেশন সম্পন্ন করা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে শীর্ষ ১০টি প্রতিষ্ঠানকে ‘বেসিস টপ টেন ডিজিটাল-রেডি কোম্পানিকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।

এছাড়াও দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প। রয়েছে ৪৫টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ইনোভেটিভ প্রজেক্ট শো-কেসিং, যাদের মধ্যে প্রথম তিনটি ইনোভেটিভ প্রজেক্টকে পুরষ্কৃত করা হবে। থাকছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আউটসোর্সিং কনফারেন্স। দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে সিএক্সও লিডারশিপ মিট। পাশাপাশি থাকছে মিউজিক্যাল কনসার্টও।

অনুষ্ঠানে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, সহ-সভাপতি (অর্থ) ও বেসিস সফটএক্সপোর আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমান এবং বেসিস সফটএক্সপো ২০২০’র প্লাটিনাম স্পন্সর ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড- ডিবিবিএল’র চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বেসিস এর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারহানা এ রহমান, সহ-সভাপতি (প্রশাসন) শোয়েব আহমেদ মাসুদ, পরিচালক তামজিদ সিদ্দিক স্পন্দন ও পরিচালক দিদারুল আলম।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here