নওগাঁ জেলার অসংখ্য নারীর জন্য তিনি গড়েছেন কর্মসংস্থান। বাবা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছেন কঠোর নিয়ম শৃঙখলায়। ভাগ্যের শৃঙ্খলা অনেক সময় বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল জীবনে চলার পথে। হার মানেননি, পাল্টে দিয়েছেন জীবনের মোড়। ব্যক্তিগত জীবনের গল্পে যখন সুন্দর স্মৃতি জমানোর কথা, পরিবারকে নিয়ে হেসে-খেলে সংসার সাজানোর কথা ঠিক সেই সময়ে ব্যাংক বন্ধজনিত জটিলতায় স্বামীর চাকুরি চলে যাওয়াই যেন বিধিবাম হলো।

কোলের ছোট্ট শিশুকে নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়ানোর গল্পের সূচনা হলো। আর কখনোই পেছনে ফেরার অবকাশ নেননি পারভীন আকতার। নিজের জীবনের যুদ্ধ জয় তাগিদ দিল অন্যের জন্য কিছু করবার। একজন নারী সংগঠক ও উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করছেন বিরতিহীন।

প্রভাতী নারী উন্নয়ন সংস্থা হয়ে উঠল শতশত নারীর নতুন এক সফল সকালের গল্প। একসময় নিজে যুব উন্নয়ন সংস্থা থেকে নিয়েছিলেন প্রশিক্ষণ। সেই প্রশিক্ষণে যা শিখেছিলেন তারই আলো আজও ছড়িয়ে পড়ছে নওগাঁ জেলার আনাচে-কানাচে। পারভীন আকতার, এবছর শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহন করেছেন। একজন অদম্য নারীর ইচ্ছাই পারে সমাজকে বদলে দিতে। তারই স্মারক হয়ে আজীবন বেঁচে থাকতে চান কর্মের ভূবনে। সাধারন জীবনে অসাধারন প্রাপ্তিটিও তাই কর্মোন্নয়নের হাতিয়ার।

তিন হাজার যুবনারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে তোলায় সাহস যুগিয়েছে নিজের চলার পথের বাধাগুলো। কোনো বিদেশী অনুদান গ্রহন না করে একজন স্বেচ্ছাসেবী সমাজকর্মী হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করেছেন। বিভিন্ন সম্মেলন ও ফোরামে এদেশের মাটি ও মানুষকে তুলে ধরেছেন। দুঃস্থ সহায়তা, নারীর ক্ষমতায়ন, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, অসহায় নারীদের আইনী সহায়তা প্রদান, বৃক্ষরোপণ, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মাদক প্রতিরোধ, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনা করছেন পারভীন আকতার। একটি জাতীয় স্বীকৃতি যেন আরো শাণিত করেছে এতোদিনের শ্রমকে। একদিন তাকে অনুসরণ করে দেশের যুব প্রতিনিধিরা দেশকে উন্নয়নে আরো এগিয়ে নেবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন এবং এই লক্ষ্যেই তিনি ব্যপকভাবে কাজ করে যেতে চান।

কোনোকিছুতে জয়লাভের জন্য সেখানে সকল প্রতিকূলতার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হয়। আর সকল যুদ্ধে যে ঢাল-তলোয়ার থাকতেই হবে এমনটি নয়। বরং মনন আর মেধাকে সাথে নিয়ে কর্মের যুদ্ধ হয় আরো বলিষ্ঠ। এমনই এক কর্মোদ্যমে বলিষ্ঠ নারী “প্রভাতীর প্রীতিলতা” যুব বেকারত্বের বিরুদ্ধে ছুড়েছেন কর্মসংস্থান তৈরীর চ্যালেঞ্জ। জিতে গেছেন এই চ্যালেঞ্জে। হয়েছেন অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।

সাদিয়া সূচনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here