উদ্যোক্তা তাস্ফিয়া তৃণয়

তাস্ফিয়া তৃণয় পিতা-মাতার তিন কন্যা সন্তানের মধ্যে প্রথম। পিতা অসুস্থ, কোনো কাজ করতে পারেন না। পরিবারে এমন কেউ নেই যে সংসারের হাল ধরবে। এ জন্য তিনি পরিবারের দায়িত্ব নেবেন, এটা ভেবেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন বুনতে শুরু করলেন।

টঙ্গী সরকারি কলেজে সমাজকর্ম বিভাগে অনার্স শেষ বর্ষে অধ্যায়নরত এই শিক্ষার্থী মাত্র ১০ হাজার টাকা একজন আত্মীয়র কাছ থেকে ধার নিয়ে নেমে পড়লেন উদ্যোক্তা হতে। পরিবার থেকে সকলের দারুণ সহযোগিতা পেলেন। কাজ শুরু করলেন দেশীয় থ্রি পিস, নিজের তৈরি হোম মেড ফেসপ্যাক পাউডার, বিভিন্ন অর্গানিক পণ্য ও পাটের তৈরি পণ্য নিয়ে। দিন-রাত পরিশ্রম করে তৈরি করতে থাকলেন বাহারি রকমের নান্দনিক সব পণ্য।

উদ্যোক্তা হওয়ার নেপথ্যের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো ভাই নাই বৃদ্ধকালে যেন আমার বাবা মার দায়িত্ব আমি নিজেই নিতে পারি। কিছু টাকা দেওয়ার জন্য যেন কারও কাছে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া না লাগে কিংবা কারো বড় কথা শোনা না লাগে এসব অনেক কিছু ভেবেই উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চাকরি পাব কিনা জানি না, বিয়ের পর শশুর বাড়ির লোক কেমন হবে তাও জানি না। তাই নিজের বাবা মাকে কিভাবে ভালো রাখবো সেটা আমাকেই ভাবতে হবে। এমন কিছু করবো যেন আমি আর আমার বাবা মা কারো কাছো ছোট না হন। সারাজীবন অনেক কষ্ট করেছেন তারা। এখন আমি তাদের ভালো রাখার চেষ্টা করছি মাত্র’।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নারী উদ্যোক্তাদের প্লাটফর্ম ইউমেন এন্ড ই-কমার্স গ্রুপে নিজের পণ্যের প্রচার শুরু করেন। খুব কম সময়ের মধ্যে তার পণ্য ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে এবং অল্প দিনের মধ্যেই লক্ষ লক্ষ টাকার পণ্য বিক্রি করেন। আজ তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা।

নিজের উদ্যোগ ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাইলে এই উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমার টাকার দরকার। তাই কি করলে হাতে টাকা আসবে পরিবারকে ভালো রাখতে পারবো এই চেষ্টায় থাকি। এ জন্য কয়েক রকম জিনিস নিয়ে কাজ করছি। অনেক বড় উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখি, যত বড় হলে আমি ৫০ জন গরিব ও অসহায় মানুষের সুষ্ঠুভাবে সেবা করতে পারবো। সমাজকর্ম নিয়ে পড়ছি, তাই সমাজকর্মীই হতে চাই। কিন্তু সমাজকর্মী তো শুধু চাকরি করলেই হয় না। ইচ্ছা থাকলে ব্যক্তিগতভাবেও হতে পারে’।

সাইদ হাফিজ
উদ্যোক্তা বার্তা, খুলনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here