নিজের কারুকাজে করা দেশীয় পণ্যে এগিয়ে যেতে চান উদ্যোক্তা-নীলিমা সরকার

পরিবারে কোনো রকম অস্বচ্ছলতা ছিলোনা ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া নীলিমার। নিজে কিছু করার তাড়না থেকেই বাসায় পড়ে থাকা হাতের কাজের বিভিন্ন সিল্ক ও সুতাকে নানান রকম গিট দিয়ে আর বেনী করে ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড বানিয়ে স্কুলের সামনের দোকানগুলোতে দিয়ে আসতেন। দোকানী যেই দামে বিক্রি করতো তার অর্ধেক টাকা তাকে দিয়ে দিতো।

শিল্পকলা ও সৃজনশীল শিক্ষা বিভাগে পড়াশুনার কারণে একাডেমিক ব্যবহারিকে ব্যস্ততা চলত সারাদিন

সেসময় থেকেই নিজের পোষাক নিজেই ডিজাইন করে বানাতেন বলে সবার নজর পড়তো, নীলিমার ডিজাইন করা ড্রেস আত্মীয়স্বজনরাও চাইতো। শখের বসেই ডিজাইন করে দিতেন।

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্পকলায় পড়তে এসে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের উৎসাহে ক্যাম্পাসে নিজের হাতে বানানো বিভিন্ন পণ্য নিয়ে প্রথমবার মেলায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। মেলা শুরু হওয়ার আধা বেলার মাঝেই প্রায় সব পণ্য বিক্রি হয়ে যায়, ভীষণ উৎসাহ পান নীলিমা।

অনিন্দ্য’র নন্দনে গড়া শাড়ি

নীলিমা বলেন, “টাঙ্গাইলের মেয়ে বলেই হয়তো শাড়ি পড়তে খুব ভালোবাসি। দেশের এত সুন্দর সুন্দর শাড়ি থাকতে মানুষ বিদেশী শাড়ি পড়ে এটা মোটেই ভালো  লাগতো না। তাই ২০১৬ এর শেষের দিকে শাড়ি নিয়ে কাজ করার চিন্তা থেকেই মাত্র ৪১০০ টাকা পুঁজি নিয়ে নিজের ডিজাইনের তাঁতের শাড়ি নিয়ে “অনিন্দ্য”র যাত্রা শুরু করি।

তিনি আরো বলেন, “নিজের ডিজাইন করা শাড়িগুলো হলে নিয়ে এসে শিক্ষক ও সহপাঠীদের কাছে বিক্রি করে সাড়া পেলাম ব্যাপক, এভাবেই চললো বেশকিছু দিন। এরমাঝে বিয়ের পিঁড়িতে বসি। বিয়ের পর আমার স্বামী বলতো তার বাসার কেউ যাতে না জানে আমার ব্যবসার কথা। এ নিয়ে খুব ভয়ে থাকতাম।”

অনিন্দ্য’র শাড়ি ও টিপে নান্দনিকতা

বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির আলাদা কোন চাপ না থাকলেও ব্যবসা, স্বামী, নিজের পড়াশোনা সবকিছু একসাথে সামলাতে কষ্ট হলেও থেমে থাকেননি নীলিমা। প্রথম দিকে ঢাকার বাইরে থেকে অনলাইনে শাড়ির অর্ডার পেলে কুরিয়ার করতেন। আর ঢাকার ভিতর তিনি নিজে গিয়ে ডেলিভারি দিতেন।

অনিন্দ্য’র শাড়িতে সন্তুষ্ট কাস্টমাররা

পণ্য ডেলিভারি দিতে গিয়ে বারংবার আশাহত হয়েছেন। কিন্তু ভেঙে পড়েননি। সুদিন আসবে বলেই অপেক্ষায় থেকেছেন। নীলিমা বিশ্বাস করেন, যে পথচলা “অনিন্দ্য” শুরু করেছে, একদিন তা সফলতার দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছাবেই।

 

সাদিয়া সূচনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here