উদ্যোক্তা - শারমীন লায়লা রহমান

শারমীন লায়লা রহমান পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হোম ইকোনমিক্স কলেজ থেকে বস্ত্র-পরিচ্ছদ ও বয়ন শিল্প (ক্লদিং এন্ড টেক্সটাইল) বিষয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর। আজ শুনবো তাঁর কথা –

চাকরীও করেছেন একটা টেক্সটাইল কোম্পানিতে কিন্তু বাচ্চা হওয়ার কারণে চাকরী ছেড়ে দিতে হয়। পরবর্তীতে আবার সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন চাকরীর জন্য চেষ্টা করেন কিন্তু সফলতার মুখ দেখতে পান নি, মা ব্যাংকার তাই চাইতেন মেয়েও যেন ব্যাংকে চাকরী করে কিন্ত এই ক্ষেত্রেও সফলতার মুখ দেখতে পাননি এই উদ্যোক্তা। তাই বলে থেমে থাকেননি। শুরু করেছেন ব্যবসা এবং সফলতার মুখ দেখেছেন এই উদ্যোক্তা।

যেহেতু চাকরী করেছেন তাই চুপচাপ বসে থাকাটা মেনে নিতে পারছিলেন না উদ্যোক্তা শারমীন লায়লা রহমান। তাই শুরু করলেন ২০১৮ সালের ৭ ই এপ্রিল অনলাইন ব্যবসা।
পেজর নাম দিলেন তাঁর তিন বাচ্চার নামের কিছু শব্দ নিয়ে “সাফরিয়ানাস টাচ”। অনলাইন পেজ খুলে মাত্র ১০ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেন ব্যবসা।

শারমীন লায়লা জানান, আমি পেজ খুলে প্রথমে আমার কোনো পরিচিত মানুষ আমার কোনো ড্রেস কিনে নাই। অপরিচিত ক্রেতা থেকেই আমার ব্যবসা শুরু। প্রথম দিকে একটু কম বিক্রি হতো, নতুন পেজ; তারপরেও যতটুকু হতো আমি খুশি ছিলাম।
শারমীন লায়লা রহমান বলেন, যখন ক্রেতা খুশি হয় তখন আমি খুশি। আমি সৎ ভাবে কাজ করতে পছন্দ করি। আমি ক্রেতাদের কাছে কোনো লুকোচুরি করি না। যেই প্রোডাক্টটি যেমন, আমি ঠিক তেমনি বলি। যার কারণে ক্রেতারাও আমাকে পছন্দ করেন। তখন অনেক ভাল লাগে।
শারমীন লায়লা আরও জানান যে, তিনি এই ব্যবসাতে সেই রকম কোন বাধার সম্মুখীন হননি, শ্বশুড় বাড়ি এবং বাবার বাড়ি দুদিক থেকেই সাহায্য পেয়েছেন। হাসবেন্ডও অনেক সাহায্য করেছে। মা বেশি সাপোর্ট করেছে কারণ তিনি চাকরী করেন। তাই তিনি চেয়েছেন আমি যেন কিছু করি, বসে না থাকি অন্তত।

ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে বলেন, দেশী পণ্য নিয়ে কাজ করতে চাই এবং মেয়েদের কর্মসংস্থান করতে চাই। বড়দের জুতা ও ব্যাগ নিয়ে কাজ শুরু করবেন বলেও জানান এই উদ্যোক্তা।
 নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, যিনি যে বিষয়টা জানে, বোঝে, কাজ করতে ভালোবাসে এবং তার যেটাতে মনে হবে যে এই বিষয়টা আমি পারব, তার সেই দিক নিয়ে কাজ করা উচিত। কারো দেখে না;  নিজে যেইটা ভালো পারবে সেইটা নিয়ে নতুন ভাবে কাজ করতে হবে। যেইটা যার নাজানা সেইটা নিয়ে কাজ করা উচিত হবে না। তাহলে প্যাশনটা নষ্ট হয়ে যাবে।

সাফরিয়ানাস টাচে পাওয়া যায় শাড়ী, থ্রি-পিস, গহনা, বাচ্চাদের জুতা।
যার সর্বনিম্ন মূল্য ১২০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য ১৭ হাজার টাকার মধ্যে।
শারমীন লায়লা রহমানের ১০হাজার টাকার পুঁজি এখন এসে দাড়িয়েছে ৪ লাখ টাকায়।
মানুষের চেষ্টা কখনো বৃথা যায় না। এর প্রমাণ পাওয়া যায় এই উদ্যোক্তা শারমীন লায়লা রহমানকে দেখলে। বার বার হেরে গিয়েও সফলতার মুখ দেখেছেন এই উদ্যোক্তা। চেষ্টা এবং পরিশ্রম থাকলে কোন কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।

 

খাদিজা ইসলাম স্বপ্না  

 

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here