‘বাজেট ২০২১-২২ : এসএমই খাতের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

0

আজ রোববার (২০ জুন) ‘বাজেট ২০২১-২২ : এসএমই খাতের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসএমই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা এবং লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান।

প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান, চেয়ারপার্সন, এসএমই ফাউন্ডেশন তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ তার স্বাধীনতার ৫০ তম বার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছে এই বছর, পাশাপাশি জাতীয় সংসদ-এ গত ৩ জুন মাননীয় অর্থমন্ত্রী স্বাধীনতার ৫০ বছরে ৫০ তম বাজেট উপস্থাপন করেছেন। এই বাজেটটি ছিল, ছয় কোটি তিন লক্ষ ছয়শো একাশি কোটি টাকার বাজেট। বর্তমান বাজেটের যে ক্রম বৃদ্ধি তা জাতির সাথে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্মারক হিসেবে ভবিষৎ প্রজন্ম মূল্যায়ন করবে। ২০১৯-এর কোভিড মহামারীর পর থেকে সারা পৃথিবী একটি গভীর রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে আছে।

এই সামাজিক, অর্থনৈতিক সমস্যা কাটিয়ে উঠার জন্য বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা, অর্থনৈতিক সাহায্য সহযোগিতা ও নিরাপত্তা বিধান করার মধ্যে দিয়ে অর্থিনীতির চাকাকে সচল রেখেছেন। সরকারি ও বেসরকারি খাতের যে অবস্থা করোনাকালীন হবার কথা ছিলো তার চেয়ে দেশের অবস্থা এখন অনেক ভালো। এই সংকট থেকে নিজেদের উত্তরণ করতে হলে সমন্বিত ভাবে সকলেরই একযোগে কাজ করতে হবে। সে-ক্ষেত্রে যে-কোনো দেশে এসএমই উদ্যোক্তারা মূল ভুমিকা পালন করে থাকে। বাংলাদেশের এসএমই উদ্যোক্তারা মূল ভুমিকা পালন করছে। আমাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তাতে বিনিয়োগ বাড়ানো, চাকরির সুযোগ তৈরী করা, অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে বৃদ্ধি করা ও বজায় রাখার সুযোগ তৈরী করাই হলো আমাদের মূল লক্ষ্য। এই কাজগুলো আমরা আগামী বাজেটের ভিতর করতে পারি তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক যে ধারা ও প্রবৃদ্ধি আছে সেটাকে আমরা সচল রাখতে পারবো”।

সভাপতি ড. মোঃ মফিজুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এসএমই ফাউন্ডেশন বলেন, “এ-বছর বাজেটের প্রধান বিষয় হচ্ছে, জীবন জীবিকার প্ৰধান্য দিয়ে সূদুর আগামীর পথে বাংলাদেশ। চমৎকার একটি স্লোগান কে সামনে রেখে ২০৪১ সাল এবং ডেল্টা প্লানের যে লক্ষমাত্রা তা এ-অর্জনকে সামনে রেখে এই বছরের বাজেট-এর সঙ্গে বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়েছে করোনা অতিমারী। এসএমই খাতের দেশিয় উন্নয়নের প্রতি লক্ষ রেখে প্রতি বছর এসএমই ফাউন্ডেশন কর্তৃক জাতীয় বাজেটের ট্যাক্স, ভ্যাট, ট্যারিফ, আর্থিক প্রণোদনা ইত্যাদি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব পরিকল্পনা, এনবিআর সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগে প্রেরণ করে থাকি। যা কিনা পরবর্তীতে ১৫ টি এসএমই প্রতিষ্ঠানও বিভিন্ন ট্রেডবডি থেকে ১০০-এর অধিক প্রস্তাবনা পাওয়া যায়। এই প্রস্তাবনা গুলি পাবার পর যাচাই বাছাই করে ৬৩টি প্রস্তাব চলতি অর্থবাজেটে প্রেরণ করা হয় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য। পরবর্তীতে বাজেট পাশ হবার পর ১৪টি প্রস্তাব ও তার কিছু আংশিক গৃহীত হয়েছে। এই ১৪ টি ক্ষেত্রে যারা এসএমই আছেন তাদের জন্য নানা ধরণের সুযোগ সুবিধার কথা বলা হয়েছে”।

তিনি বলেন, অক্টোবর ২০২০ থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশের এসএমই সংশ্লিষ্ট ১৫টি অ্যাসোসিয়েশন ও বাণিজ্য সংগঠনের থেকে ১০০টি প্রস্তাব পাওয়া যায়। যা পরবর্তী সময়ে আলোচনার মাধ্যমে ৬৩টি চূড়ান্ত করা হয়। যেখানে কাস্টমস বিষয়ে ৩১টি, মূসক ১১টি এবং আয়কর সংশ্লিষ্ট ২১টি প্রস্তাব ১১ মার্চ রাজস্ব বোর্ডের নিকট দেওয়া হয়েছিল। এর-মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটে ১৪টি প্রস্তাবকে আংশিক বা পুরোপুরি গ্রহণ করা হয়েছে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাজেট পরবর্তী সময়ে এসএমই সংশ্লিষ্ট ১৫টি অ্যাসোসিয়েশন এবং বাণিজ্য সংগঠনের সঙ্গে আবার বৈঠক করেছে সংস্থাটি। বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য আরও কিছু প্রস্তাব ২১ জুন এনবিআর-এ পাঠানো হবে।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, দেশের এসএমই খাত অনেকটা উৎসব কেন্দ্রিক। এছাড়া খাদ্য প্রক্রিয়া ও বিপণন কেন্দ্রিক শিল্প রয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে এই খাত অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি সংস্থার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এর প্রতিফলন বাজেটে পড়েছে বলে এসএমই ফাউন্ডেশন মনে করে।

করোনা মহামারির এই সময়ে দেশে তথ্য প্রযুক্তি সুবিধা থাকায় উদ্যোক্তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সঠিকভাবে করা সম্ভব হয়েছে। এজন্য এসএমই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here