বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন গুলো আমাদেরকেই পূরণ করতে হবে, তরুণদের আরো এগিয়ে আসতে হবে  এমন আহ্বান করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। আজ ২৫ নভেম্বর বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিসিসি অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলন এবং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী সকল তরুণদের জানা প্রয়োজন। উদ্যোক্তা হতে চাইলে কিভাবে সুদুরপ্রসারী চিন্তা করতে হয় তা বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ জানলেই জানা সম্ভব। তাতে তারা  আরো উজ্জীবিত হবে এবং এই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়তে “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট” প্রতিবছর আয়োজন করা হবে”।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ২০২০ সালে দেশব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে। মুজিব বর্ষ আয়োজনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে “উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প(iDEA)” থেকে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট” সংক্ষেপে “বিগ” আয়োজন।

বিগ এর আওতায় (iDEA) প্রকল্প থেকে তরুণ উদ্যোক্তা অর্থাৎ স্টার্টআপদের নতুন উদ্ভাবনী ধারণাকে উৎসাহিত করে দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০২০-২১ সালে মুজিব শতবর্ষে ১০০ স্টার্টআপকে গ্র্যান্ট প্রদান করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ১৭ মার্চ ২০১৯ থেকে নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত iDEA প্রকল্প থেকে ৩২টি স্টার্টআপকে ১০ লক্ষ টাকা করে গ্র্যান্ট প্রদানের জন্য প্রকল্পের সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয় যা প্রকল্প কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। মুজিব শতবর্ষে “বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন-২০২০” আয়োজনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে দেশীয় স্টার্টআপদের পাশাপাশি বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তির ভিত্তিক ও ইনোভেটিভ পণ্য বা সেবা সমৃদ্ধ স্টার্টআপদের নির্বাচন করে অনুদান প্রদান করা হবে।

বিগ আয়োজনটিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ২০২০-২১ সালে তিনটি আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্টেকহোল্ডার অ্যাক্টিভেশন ক্যাম্পেইন, টিভি রিয়েলিটি শো এবং আন্তর্জাতিক রোড শো সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উদ্ভাবক, প্রফেশনাল, স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন দেশের হাই কমিশন ও এম্বাসি, স্টার্টআপ এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দেশি-বিদেশি কমিউনিটি ও ক্লাব, ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনসহ শতাধিক প্রতিনিধিরা এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন। এ আয়োজনে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, কন্ট্রোলার অব সার্টিফায়িং অথরিটিজ (সিসিএ), এটুআই, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-কে এ ইভেন্টের পার্টনার হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন যথা বেসিস, বাক্য, বিসিএস, ইক্যাপ, আইএসপিএবি, বিআইজেএফ-কে উক্ত ইভেন্টের পার্টনার হিসেবে সংযুক্ত আছে। সর্বশেষে বলা যায়, এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে আইসিটি ক্ষেত্রে নতুন ভাবে উপস্থাপিত হবে।

আজ থেকেই আগ্রহীগণ নিবন্ধন করতে পারবেন নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ভিজিট করে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২৫ জানুয়ারি এবং জাতীয় পর্যায়ে ২৫ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখের মধ্যে যেকোনো তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উদ্যোক্তা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন। ৮টি বিভাগেই অনলাইনে এবং অফলাইনে অ্যাক্টিভেশন ক্যাম্পেইন করা হবে। এ ক্যাম্পের অংশ হিসেবে দেশের প্রায় ৫০ টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ সংগঠন যুক্ত করা হয়েছে। প্রচারণা থাকবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। প্রাথমিকভাবে ২০০টি উদ্ভাবনী স্টার্টআপ এবং পরবর্তীতে সেরা ৬৫টি স্টার্টআপকে নির্বাচন করা হবে যাদের নিয়ে ৪দিনব্যাপী বুটক্যাম্প আয়োজন করা হবে। এবুট ক্যাম্প স্টার্টআপদের নিয়ে দিনব্যাপী ওয়ার্কশপ, মেন্টরিং, পিচিং ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া বিশেষ সেশন এর মাধ্যমে দেশের জনপ্রিয় এবং অভিজ্ঞ কর্পোরেট প্রফেশনাল এসকল উদীয়মান উদ্যোক্তাদের কাছে তাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন যা ভবিষ্যতে সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে তাদের সহায়তা করবে। পরবর্তীতে এই স্টার্টআপদের নিয়ে টেলিভিশন রিয়েলিটি শো আয়োজন করা হবে।

বিপ্লব আহসান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here