প্লাস্টিক হবে বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি খাত

0

প্লাস্টিক হবে বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি খাত। তবে এ খাতে কমপ্লায়েন্স জরুরি। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘প্লাস্টিক খাতে নিরাপত্তা ঝুঁকি: করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে এমন মত দেন বক্তারা। বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিপিজিএমইএ) এবং বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, দেশে পাঁচ হাজারের বেশি প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনের কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের ৫০টি কারখানার ওপর বিভিন্ন বিষয়ে জরিপ করেছে সিপিডি। এতে দেখা গেছে, কারখানাগুলো অগ্নিনিরাপত্তার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত করেছে। তবে ইলেকট্রিক্যাল ও অবকাঠামোগত কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে।

অভ্যন্তরীণ বাজারের পাশাপাশি রপ্তানিতে মনোযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২১ কোটি ডলার রপ্তানি আয় এসেছে এ খাত থেকে। তবে সম্ভাবনাময় এ খাত ভবিষ্যতে তৈরি পোশাকের মতো হবে। সে জন্য এখনই প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।

দুর্ঘটনারোধে পুরান ঢাকার প্লাস্টিক কারখানাগুলোকে প্লাস্টিকপল্লিতে স্থানান্তরে জোর দিয়ে তিনি বলেন, এ খাতে সরকার বিসিকের মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদে একটা প্রকল্প নিতে পারে। কারখানা নির্মাণে উদ্যোক্তাদের ১০ কাঠা করে জমি দিলে তাতে ৩ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। এ ঋণ পরিশোধে উদ্যোক্তাদের ২৫ বছর সময় দেওয়া যেতে পারে।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সার্ক চেম্বারের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, কারখানাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে পর্যবেক্ষণে গেলে মালিকরা ভয় পেয়ে যান। অনেক বড় কারখানা আছে, যেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষিত। নিরাপত্তা নিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নেই। তিনি বলেন, পুরান ঢাকা থেকেই প্লাস্টিক কারখানার যাত্রা শুরু। কিন্তু যখন আগুন লাগে তখন সেগুলো স্থানান্তর নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কয়েক দিন পর আবার সবাই চুপ হয়ে যান। প্লাস্টিক শিল্পনগরী স্থাপনে ১০০ একর জমি দিয়েছে সরকার। কিন্তু সেখানে এখনও কাজই শুরু হয়নি।

জসিম উদ্দিন বলেন, শিল্পনগরীতে অবকাঠামোগত উন্নয়নে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। কিন্তু এ টাকা ব্যয় করে পল্লি নির্মাণ তখনই সার্থক হবে যখন উদ্যোক্তাদের যথাযথ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের সক্ষমতাকে বিবেচনায় নিতে হবে।

আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টমো পুটিআইনেন বলেন, এ খাতের প্রতিটি কারখানাকে নিরাপত্তা ইস্যুতে এখনই জোর দেওয়া দরকার। এ ব্যাপারে পোশাক থেকে প্লাস্টিক খাত শিক্ষা নিতে পারে। কারখানায় পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা নিরসন করা দরকার। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে আইএলও সহায়তা করবে।

বিপিজিএমইএর সভাপতি সামীম আহমেদ বলেন, অর্থ সংকটে অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তাদের কারখানা প্লাস্টিকপল্লিতে স্থানান্তরে আগ্রহী হচ্ছেন না। তাই সরকারের ঋণ সহায়তা পেলে উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসবেন। ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে উদ্যোক্তারা সরকারের অর্থ ফেরত দিতে পারবেন।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মিনা মাসুউজ্জামান।

ডেস্ক রিপোর্ট,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here