রাজধানীতে যানজট নিরসন ও জ্বালানি সাশ্রয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বাস সেবা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। প্রথম ধাপে পাইলট প্রকল্প হিসেবে চারটি স্কুলের জন্য বাস সার্ভিস চালু হবে। স্কুলগুলো হচ্ছে: চিটাগং গ্রামার স্কুল-ঢাকা, স্কলাস্টিকা স্কুল, স্যার জন উইলসন স্কুল এবং বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটরিয়াল।
স্কুল বাস সার্ভিস চালু করার রূপরেখা ঠিক করতে প্রাথমিকভাবে উত্তর সিটির আওতাধীন ওই স্কুলগুলোর কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
বুধবার দুপুরে ডিএনসিসি কার্যালয়ে উত্তর সিটি এলাকাগুলোর স্কুলগুলোর জন্য বিশেষ স্কুল বাস সার্ভিস চালু সংক্রান্ত পথম মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেসময় মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন: ঢাকা শহরে স্কুল বাস চালু হলে ব্যাপকভাবে যানজট কমে যাবে। এর ফলে দূষণ কমবে, কার্বন নিঃসরণও অনেকাংশে কমবে। আমরা অংশীজনদের সাথে কথা বলছি। অনেক শিক্ষক একমত পোষণ করেছেন। এটি বাস্তবায়নে অভিভাবকদের সদিচ্ছাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরকে আরো সুন্দর ও বাসযোগ্য করতে স্কুল বাস সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। সবার আন্তরিক সহযোগিতায় প্রথম ধাপে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন এলাকার চারটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের জন্য স্কুল বাস চালু করা হবে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরের স্কুলগুলোতে, বিশেষ করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের সামনে শত শত গাড়ির কারণে যানজট বাড়ে। পরিবেশ রক্ষায় ও যানজট কমাতে তাই পর্যায়ক্রমে সব স্কুলের জন্য স্কুলবাস চালু করতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র জানান, শুরুতে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে চালু হলেও পর্যায়ক্রমে সকল স্কুলেই স্কুল বাস সার্ভিস চাল করা হবে।
তিনি বলেন: এটির সফল বাস্তবায়নে মাইন্ডসেট খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে অভিভাবকদের। স্কুলবাস সার্ভিস বাধ্যতামূলক করা হলে স্কুলের ১০০ গজের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বহন করা ব্যক্তিগত গাড়ি প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
প্রথম ধাপে যে স্কুলগুলোর জন্য বাস সার্ভিস চালু করা হবে, অনুষ্ঠানে ওই স্কুলগুলোর প্রিন্সিপাল এবং অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে স্কুলের প্রিন্সিপাল ও মেয়র তাদেরকে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দেন।
ডি্এনসিসি মেয়র বলেন, ‘সন্তানরা বাবা-মায়ের সবচেয়ে মূলবান সম্পদ। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ। স্কুল বাসগুলোতে সিসি ক্যামেরাসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। অ্যাপসের মাধ্যমে ট্র্যাকিং ব্যবস্থাও থাকবে। নিরাপত্তাকর্মী এবং স্কুল বাসের চালক ও স্টাফদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। একটি হটলাইন নাম্বার থাকবে যার মাধ্যমে অভিভাবকরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করতে পারবেন।
বাস রুট নির্ধারণের বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘সকল শিক্ষার্থীর বাসার ঠিকানা অনুযায়ী বাস রুট ঠিক করা হবে। রাইড শেয়ারিং এর মাধ্যমে একটি বাসে নির্দিষ্ট রুটের স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করবে। এর ফলে খরচ অনেক কমে আসবে।’
সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শরীফ উদ্দীন, চিটাগং গ্রামার স্কুল-ঢাকা’র প্রিন্সিপাল আছিয়া আলম চৌধুরী, স্কলাস্টিকা স্কুল, মিরপুর শাখার প্রিন্সিপাল নুরুন নাহার মজুমদার, স্যার জন উইলসন স্কুলের প্রিন্সিপাল সাবরিনা শাহেদ ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল টিউটরিয়ালের প্রিন্সিপাল লুবনা চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মেহনাজ খান,
উদ্যোক্তা বার্তা