প্রথম তিন মাস বিক্রি নেই, এখন মাসেই বিক্রি ৮ লাখ

0
উদ্যোক্তা মাহমুদুল হাসান

তখন করোনাকাল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। অন্য আর দশজনের মতো ঘরে বসে অলস সময় কাটাচ্ছিলেন মাহমুদুল হাসান। বেশিরভাগ সময় ফোন-ফেসবুক নিয়ে থাকতেন। ফেসবুকে ঘুরতে ঘুরতে প্রায়ই উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন কাজ দেখতেন। সেখান থেকেই ভাবলেন, আমিও দেখি কিছু করতে পারি কি না। ভাবনা থেকে কাজ। শুরু করলেন নতুন পথ চলা।

লেখাপড়া করা অবস্থায়ই তার উদ্যোক্তা জীবনের সূচনা। প্রথমে মাত্র ৫৪০ টাকা দিয়ে বগুড়া থেকে ২০ কাপ দই আনলেন। বিভিন্ন গ্রুপে নিজের পরিচিতিমূলক পোস্ট করতে থাকেন। প্রথম তিন মাস কোন বিক্রি ছিল না বললেই চলে। কিন্তু পরে আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দেড় বছর পর এখন প্রতিমাসে ৮-১০ লক্ষ টাকার মতো মিষ্টি বিক্রি হয়।

তার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘দেশী মিঠাই’। নামকরনের মূল উদ্দেশ্য দেশীয় সকল মিষ্টান্ন আইটেম নিয়ে কাজ করা। ‘দেশী মিঠাই’ এখন অনলাইন জগতে মিষ্টান্ন আইটেমের জন্যে একটি পরিচিত নাম। উদ্যোক্তা মূলত ডেজার্ট আইটেম নিয়ে কাজ করেন, যার মধ্যে দেশের সকল ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন আছে। যেমন: নাটোরের সন্দেশ ও কাঁচাগোল্লা, বগুড়ার দই, পাবনার গাওয়া ঘি। এছাড়া সিজনাল কিছু পণ্য আছে। যেমন: আখের গুড়, খেজুরের গুড়, আম, খেজুর এবং আমসত্ত্ব। সামনে আরো কিছু পণ্য যোগ হবে তার প্রডাক্ট লাইনে।

উদ্যোক্তা একাই উদ্যোগ শুরু করেছিলেন, তবে অনলাইন-অফলাইন মিলিয়ে তার প্রতিষ্ঠানে এখন আটজন কর্মরত আছেন। তার গোডাউন ও অফিস আছে। খুব তাড়াতাড়ি একটি পরিপূর্ণ কারখানা করার পরিকল্পনা আছে তার।

চার ভাই এক বোনের মধ্যে উদ্যোক্তা মাহমুদুল হাসান সবার ছোট। তার জন্ম নাটোরে। নাটোর সদরে তার পৈতৃক বাড়ি। মাত্র ৯ বছর বয়েসে তিনি কুরআন হিফজ করতে রাজশাহী জেলায় যান। কওমি মাদ্রাসা থেকে কুরআন হিফজ করে ময়মনসিংহ এবং ঢাকার দুটি মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস শেষ করেছেন।বর্তমানে উচ্চতর ফিকহ বিভাগে অধ্যয়নরত। পাশাপাশি এসএসসি এবং এইচএসসি’র পর এখন ঢাকা কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে অনার্স করছেন।

নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে মাহমুদুল হাসান জানান, তার পণ্য বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রান্তে পৌঁছে গেছে। প্রথমে মাসে ২০ কেজি সন্দেশও সেল হতো না, এখন প্রতিমাসে ১,১০০-১,২০০ কেজি শুধু সন্দেশই বিক্রি। সাথে প্রচুর পরিমাণ দই ও ঘি তো আছেই।

তিনি বলেন, ”আমার উদ্যোগ হলো হালালভাবে ব্যবসা করা, খাঁটি পণ্য মানুষের নিকট পৌঁছে দেওয়া। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। আমি মনে করি সবার মধ্যে প্রতিভা আছে, দরকার শুধু সঠিক গাইডলাইন, পরিশ্রমী মনোভাব ও নিজের প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা রাখা।”

স্বপ্না আক্তার
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here