'শিল্প মেলা-২০১৯' উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

আজ রবিবার ৩১ মার্চ সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দেশে প্রথমবারের মত আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী ‘জাতীয় শিল্প মেলা-২০১৯’ এর উদ্বোধন হয়। ফিতা কেটে মেলার শুভ উদ্বোধন করেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারিখাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শিল্পপ্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.আব্দুল হালিম, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যগণ, সংসদ সদস্যগণ, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, বিদেশি কূটনিতিক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, দেশী ও বিদেশী উদ্যোক্তা এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

এ মেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে- দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রচার, প্রসার, বিক্রয় ও বাজার সম্প্রসারণ এবং ছোট ও বড় উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন, যোগাযোগ ও সেতুবন্ধ তৈরিতে সহায়তা করা।

জাতীয় শিল্প মেলায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

মেলায় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন সেসময় দেশীয় উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্যের প্রশংসা করেন এবং মেলা প্রসঙ্গে বক্তৃতা কালে অনেক বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে এবারই প্রথম এধরণের একটি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে এবং নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির ক্ষেত্রে এই মেলা যথেষ্ট অবদান রাখবে। ক্ষুদ্র কুটির শিল্পে আমাদের মেয়েরা খুব দক্ষ হয়ে থাকে। তাঁদেরকে একটু সুযোগ এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিলে তারা অনেক কিছু ঘরে বসেই তৈরি করতে পারে”। তাই ব্যাংক ঋণে সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসা, শিল্পোক্তাদের নতুন নতুন প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে দেশে এবং বিদেশে বাজার সৃষ্টি করা এবং নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিভাবে শিল্পায়ন ঘটাতে পারে সে বিষয়ে বলেন এবং দেশের জনগণকে মেধাবী আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “ডিজিটাল ডিভাইস তৈরি এবং রপ্তানীর ক্ষেত্রে আমরা এই মেধাকে কাজে লাগাতে পারি। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। দেশে যে বিশাল তরুণ সমাজ রয়েছে তাদের সবার কর্মসংস্থান করাই আমাদের মূল লক্ষ্য”।

উদ্বোধন শেষে বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এজন্য প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য শিল্পের বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে দেশ-বিদেশে বাজার সৃষ্টির জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত্ব করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এসময় তিনি বলেন, “বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশ এখন এক উন্নয়নের বিস্ময়। বর্তমান বাংলাদেশ কৃষি নির্ভর অর্থনীতি থেকে শিল্প নির্ভর অর্থনীতিতে রুপান্তরিত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন শুধুমাত্র তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল নয়, আমাদের রপ্তানি তালিকায় নতুন নতুন পণ্যের নাম যুক্ত হচ্ছে। চামড়া শিল্পকে দ্বিতীয় শিল্প রপ্তানি খাত হিসেবে গড়ে তুলার লক্ষ্য নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করছে”।

স্টল পরিদর্শনের সময় পণ্যের বিন্নিতা দেখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ওছাড়াও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল হালিম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।

অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কর্মকান্ডের ওপর একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদোগে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী এই জাতীয় শিল্প মেলায় সারাদেশের বড়, মাঝারি, ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র, কুটির, হস্ত, কারু এবং হাইটেকসহ মোট ৩০০টি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। তারা ৩০০টি স্টলে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করছেন উদ্যোক্তাদের মধ্যে ১১৬ জন নারী উদ্যোক্তা এবং ১০৭ জন পুরুষ উদ্যোক্তা রয়েছেন। অর্থাৎ মেলায় ৫২ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করছেন বলে শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।

মেলা দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য এবং সেবা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রচার, প্রসার, বিক্রয় ও বাজার সম্প্রসারণে সহায়তা করবে। এ ছাড়া বৃহৎ, মাঝারি, ক্ষুদ্র, মাইক্রো, কুটির, হস্ত ও কারু এবং হাইটেক শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন, যোগাযোগ এবং সেতুবন্ধন তৈরিতে সহায়তা করবে। সর্বোপরি শিল্প খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করবে বলে সকলে আশা ব্যক্ত করেন।

 

বিপ্লব আহসান

ছবি-পিআইডি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here