পার্বত্য অঞ্চলে বাড়ছে সূর্যমুখী চাষ

0

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের গোলাবাড়ি ইউনিয়ন ও মহালছড়ি উপজেলার মাইসছড়ি জয়সেন পাড়া এলাকার কৃষকরা চাষ করেছেন সূর্যমুখী। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজের মাঝে তাই হলুদের সমারোহ।

কৃষকরা জানান, এবছর তারা নিজেদের অর্থায়নে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। বীজ ও সার ছাড়া ২০ শতক জমিতে সূর্যমুখী চাষ করতে খরচ দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।

তবে তারা বলছেন, আগত কিছু দর্শনার্থী সূর্যমুখী গাছ ভেঙে ফেলেন। ফুলও ছিঁড়ে ফেলেন। তাই দর্শনার্থীদের কাছে কৃষকের অনুরোধ, তারা যেন সূর্যমুখী গাছ ও ফুলের কোনো ক্ষতি না করেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাসহ বিভিন্ন জেলায় সূর্যমুখী চাষাবাদ দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাজারে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সূর্যমুখী ফুলের তেল কিনতে পাওয়া যায়। সূর্যমুখী ফুলের তেল বনস্পতি তেল নামে বেশি পরিচিত। ফুল থেকে তেল উৎপাদনের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে মধুও উৎপাদিত হচ্ছে।

জানা যায়, এবছর খাগড়াছড়িতে আগের বছরের চেয়ে বেশি সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। প্রতি কেজি বীজ থেকে ৩০০ গ্রাম সূর্যমুখী তেল পওয়া যায়। আবহাওয়া অনুকলে থাকলে এবছর সূর্যমুখী চাষীরা লাভবান হবেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, ছয় থেকে সাত ফুট লম্বা সুর্যমুখী গাছে ফুল ফুটে আছে। ফুলের সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। সুর্যমুখী ফুল দেখতে প্রতিদিনই আসছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ।

মাইসছড়ি ইউনিয়নের কৃষক চাই হ্লা, অংছাচিং মার্মা ও জেলা সদরের গোলাবাড়ি ইউনিয়নের মেম্বার রামকুমার ত্রিপুরা ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার গৌরি ত্রিপুরা বলেন, কৃষকরা এবছর কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। সূর্যমুখী চাষে খুব বেশি পরিশ্রম হয় না। শুধু বীজ বপণে একটু শ্রম দিতে হয়। এরপর দেখভাল করলেই চলে।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ডিসেম্বরের শুরুতে ক্ষেতে সূর্যমুখীর বীজ বপন করা হয়েছিল। ফসল ঘরে তোলা যাবে এপ্রিলে। চাষীদের চাষ করতে বিশেষ সমস্যা বা তেমন খরচ নেই। একজন চাষি বিঘা প্রতি চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা খরচ করে তৈলবীজ পেতে পারেন। বিশেষ করে এই তেল ক্ষতিকর কোলেস্টেরলমুক্ত। সূর্যমুখীর তেল শতকরা ১০০ ভাগ উপকারী ফ্যাটযুক্ত। এ তেলে আছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও পানি। হৃদরোগী, ডায়াবেটিসের রোগী, উচ্চ রক্তচাপের রোগী, কিডনি রোগীর জন্যও সূর্যমুখীর তেল নিরাপদ। দেশে তেলের ঘাটতি মেটাতে ব্যাপকভাবে সূর্যমুখী চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বারি-৩ জাতের নতুন সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে ব্যাপক আবাদের মাধ্যমে একদিন দেশের ভোজ্যতেলের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে।

ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here