সফলতার জন্য কেউ হাজার মাইল পথ পাড়ি দেয় আবার কেউ কেউ ঘরে বসেই নিজেকে প্রমাণ করে। তেমনি একজন শাহিদা সুলতানা ববি যিনি ঘরে বসে নিজেকে প্রমাণ করেছেন এবং হয়েছেন সফল। আজ বলব তার কথাঃ
শাহিদা সুলতানা ববি “জেবি’স ক্যাটারিং সার্ভিস” এর প্রতিষ্ঠাতা। কিন্তু খাবারের ব্যবসায় আসার আগে ২০১৪ সালে করেছেন জেবি ভার্সেটাইল নামে পাকিস্তানি ড্রেসের ব্যবসা, সফলতার মুখ ও দেখেছিলেন কিন্তু তার এই ব্যবসায় নিজের প্রতিভা বিকশিত না হওয়ার ফলে তা বন্ধ করে সংসারে মন দেন।
রান্না করতে এবং মানুষকে খাওয়াতে খুব ভালবাসতেন শাহিদা সুলতানা ববি । রান্নার প্রশংসা করত সবাই। আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে তার খাবারের সুনাম ব্যাপক ভাবে ছড়াতে থাকে। অনেকেই তাকে রেস্টুরেন্ট কিংবা ক্যাটারিং এর ব্যবসা করার পরামর্শ দেন।
২০১৮ সালে একদিন হুট করে ক্যাটারিং পেজ খুলে বসলেন ববি; পুঁজি মাত্র ৭০০০ টাকা। ১ম অর্ডারটি ছিল ১০/১৫ হাজার টাকার নিজ পরিবারের।
শুরুতেই এত বেশি সাড়া পেয়েছেন যে জেবি’স ক্যাটারিং ববির জীবনের লক্ষ্য এবং পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুব অল্প সময়ে ক্রেতাদের সাড়া পেয়ে খাবারের নতুন স্বাদে জয় করেছেন ক্রেতাদের মন।
ববি বলেন, ‘আমি এই ব্যবসাটিকে সেবা হিসেবে দেখেছি। এই ব্যবসার মাধ্যমে আমি মানুষকে তাদের রুচিসম্মত এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের সেবা দিতে পারছি। কিছু লোকের কর্ম-সংস্থানেরও ব্যবস্থা করতে পেরেছি।’
তার এই সফলতার পেছনের কারণগুলো হল (১) গুণগত মান রক্ষা (২) সঠিক পরিমাপ (৩) সুলভ মূল্য (৪) সময় মত ডেলিভারি (৫) সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবার এবং (৬) ভাল ব্যবহার। এই বিষয়গুলো খুব গুরুত্ব সহকারে মানা উচিত বলে মনে করেন ববি।
ক্রেতাদের সাড়া ভাল পাচ্ছেন বলে জানান উদ্যোক্তা ববি, এই ভেজাল এর ভিড়ে ববি মানুষকে টাটকা সুস্বাদু ভেজালমুক্ত খাবারের সেবা দিতে পেরে খুবই আনন্দিত।
ববি আরো জানান, ক্রেতাদের দোয়া এবং ভালবাসার কারণে আমি এবং জেবি’স ক্যাটারিং আজ সফলতার মুখ দেখেতে পেরেছি।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি মনে করি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে সৎ,কঠোর পরিশ্রমী এবং ধৈর্যশীল হতে হবে। ক্রেতাদের সাথে ভাল ব্যবহার করতে হবে। সময় নিয়ে কাজ করতে হবে।
ববির এই কাজে তিনি বাবার বাড়ির এবং শ্বশুর বাড়ির সহযোগিতা পেয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পেয়েছেন স্বামী আব্দুল্লাহ চৌধুরীর কাছ থেকে। ভবিষ্যতে অনেক বড় রেস্টুরেন্ট দেবেন বলে জানান এই উদ্যোক্তা।
জেবি’স ক্যাটারিং এ খাবারের অর্ডার দিতে হলে অল্প সংখ্যক মানুষের জন্য ২/৩ দিন আগে এবং বেশি সংখ্যক মানুষের জন্য ৫/৬ দিন আগে অর্ডার দিতে হয়। দেশি খাবার, পুরান ঢাকার সব রকম শাহী খাবার পাওয়া যায় জেবি’স ক্যাটারিং-এ। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহের অর্ডার নিয়ে থাকেন জেবি’স ক্যাটারিং। ক্রেতাদের কাছ থেকে কখনো খারাপ মন্তব্য পাননি এই উদ্যোক্তা। ক্যাটারিং পেজের মধ্যে সব থেকে বেশি পজিটিভ রিভিউ পেয়েছেন জেবি’স ক্যাটারিং।
৭০০০ টাকা দিয়ে শুরু করে আজ প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মালিক এবং একজন সফল উদ্যোক্তা শাহিদা সুলতানা ববি।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না