উদ্যোক্তা - জাকারিয়া মোহাম্মদ জাকির

বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্য ও প্রযুক্তির যুগ। প্রতিদিন নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভব ঘটছে এবং সহজ করে দিচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা। আর বর্তমানে এই প্রযুক্তি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে শিল্পের উন্নয়নে। একটি দেশের উন্নয়ন তখনই হয় যখন তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়। এই উন্নয়নের গতি আরো বৃদ্ধি করতে গার্মেন্টস শিল্পকে ক্রেন্দ্র করে কাজ করে চলেছে জেএমজে (JMJ) প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা জাকারিয়া মোহাম্মদ জাকির।আসুন জেনে নেই এই ‍মানুষের গল্পটিঃ

জাকারিয়া মোহাম্মদ জাকির জন্মগ্রহণ করেছেন ময়মনসিংহের  গৌরীপুরে। পড়াশোনা করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিতে, বাংলাদেশ-এ এবং বর্তমানে পড়াশোনা করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বাবা মা দুইজনই শিক্ষক। ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটারের ওপর ভালবাসা জন্ম নেয় । ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শুরু করেন প্রোগ্রামিং শেখা। ইচ্ছে ছিল অটোমোবাইল নিয়ে কাজ করার কিন্তু নানা সমস্যার কারণে সেই স্বপ্নটা পূর্ণ করতে পারেননি জাকির। তবে স্বপ্ন দেখতেন অনেক বড় উদ্যোক্তা হওয়ার!

জেএমজে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিল্প; গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে। তারা একটি পণ্য তৈরির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছু দেখভাল করেন সফটওয়্যারের মাধ্যমে। ফলে যেখানে একটি কাজ  আগে দশ জন মানুষকে দিয়ে করাতে হত সেখানে ৩-৪ জন মানুষ দিয়ে কাজটি করানো যায়। এছাড়া এই কাজগুলো করতে আগে অনেক কাগজের দরকার হত কিন্তু এখন আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে এই কাজগুলো করার ফলে অনেক কাগজের দরকার পরে না।

উদ্যোক্তা হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলেন,পড়াশুনা শেষ করার পর ইয়ং গ্রুপ যোগদান করি, দায়িত্ব পাই ইআরপি ডেভেলপমেন্টে। বয়স ছিলো কম কিন্তু দায়িত্বটা ছিল বিশাল। তবে ইয়ং গ্রুপ এর সকলের সাহায্যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ডেভেলপমেন্ট শেষ করে ফেলি। চাকরির সময়েই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নটা লালন করে বড় করেছিলাম। কেননা অনেক আগে থেকেই যেহেতু স্বপ্ন ছিলো উদ্যেক্তা হওয়ার। তাই প্রায় তিন বছর ধরে গবেষণা আর কঠিন পরিশ্রমের পর ইয়ং গ্রুপ সহযোগিতা আর নিজের পরিচিত মানুষদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করি জেএমজে (JMJ) প্রতিষ্ঠানটি।

জেএমজে (JMJ) এর কাজ যেহেতু সফওয়্যার নিয়ে তাই এই বিষয়ের নিরাপত্তা সম্পর্কে জাকারিয়া মোহাম্মদ জাকির বলেন, প্রতি নিয়ত টেকনোলজি উন্নত হচ্ছে, সাথে বাড়ছে সাইবার ক্রাইমারদের ( ইন্টারনেটে তথ্য চুরি করে যারা) সংখ্যা। তাই আমরা আমাদের টেকনোলজিস্ট দ্বারা ঐসব শিল্প কারখানার কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেই এই টেকনোলজির ব্যাপারে। তাদেরকে আমরা কম্পিউটার চালানো শেখাই। কোন কোন  বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে সেই সম্পর্কে পরামর্শ দেই। কারণ একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি যখন এই টেকনোলজির ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারবে তখন কাজগুলো আরো বেশী ভাল হবে।

সফটওয়্যার খাতের সম্ভাবনাময় দিক সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রকৃতির একটা বড় সমস্যা সৃষ্টি করছে ট্যানারী শিল্প। এর পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ বলে আমি মনে করি এই শিল্পের আধুনিকায়ন না হওয়া। যদি আমরা সফটওয়্যার এর মাধ্যমে যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারি তাহলে এই শিল্পে আরও উন্নয়ন করা সম্ভব বলে মনে করি।

তিনি তার স্বপ্ন সম্পর্কে বলেন, আমার ইচ্ছা আছে স্বাস্থ্য এবং শিক্ষাখাতের উন্নয়ন করার। কেননা বাংলাদেশকে উন্নত করতে এই দুই খাতে উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। আমরা যখনই এই দুই খাতে কাজ করার সুযোগ পাই তখনই যতটা সম্ভব কম খরচে তা করে দেই। যেহেতু আমাদের কাজের মাধ্যমে আগের তুলনায় অনেক কম  কাগজ লাগছে তাই বাড়তি কাগজ তৈরির জন্য গাছ কাটার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যাবে একদিন। আর এভাবেই আমরা চাই বনায়ন বৃদ্ধি করতে, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য।
মো. হৃদয় সম্রাট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here