নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নীতি সহায়তা

0

“বাংলাদেশে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং জেন্ডার সংবেদনশীল নীতি” শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ প্রতিষ্ঠানসমূহে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রয়োজন বিদ্যমান জেন্ডার সংবেদনশীল নীতিমালার পর্যালোচনা |

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), ইউএন উইমেন এবং ইউএনসিডিএফ-এর যৌথ প্রকল্প উইমেনস এমপাওয়ারমেন্ট ফর ইনক্লুসিভ গ্রোথ (উইং) ঢাকার একটি হোটেলে সোমবার এই কর্মশালার আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে অনলাইনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, “সাংস্কৃতিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা প্রায়ই নারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে বাধা দেয়। আমরা নারী-বান্ধব নীতিগুলি অনুমোদনের প্রয়াস চালাচ্ছি যা তাদের সকল প্রকার সুযোগ এবং সুবিধা প্রাপ্তিতে সক্ষমতা প্রদান করবে।”

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত জনাব অ্যান ভ্যান লিউয়েন বলেন, “নারীদের মতামতকে শক্তিশালী করতে এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে এবং পরিবারের মধ্যে তাদের অবস্থান উন্নত করতে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন অপরিহার্য। নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সহায়তা করা শুধু জাতীয় অর্থনীতিকেই সাহায্য করে না, বরং তাদের ব্যক্তিগত চাহিদা, স্বার্থ এবং উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে।”

ইউএনডিপির ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রতিনিধি, ভ্যান ওয়েন বলেন, “সরকার গত কয়েক বছর ধরে নারী উদ্যোক্তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ, মূলধারার আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বাজারে প্রবেশাধিকার প্রদানের মাধ্যমে এসএমই-তে সহায়তা করছে। পাশাপাশি জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট এবং পরিকল্পনা প্রণয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।”

তিনি বলেন: আমরা বিদ্যমান জেন্ডার সংবেদনশীল নীতির সংস্কার এবং মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদারে আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যাতে অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তারা সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা পেতে পারে।

ইউএন উইমেন এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলি সিং বলেন, “কার্যকর জেন্ডার সংবেদনশীল বাজেট জাতীয় এবং স্থানীয় উভয় পর্যায়েই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি অংশগ্রহণমূলক বাজেট প্রক্রিয়া এবং শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা দ্বারা পরিপূরক হওয়া উচিত।”

“এছাড়াও, বাজেট বিষয়ক আলোচনা ও ফলাফলে অংশগ্রহণ নিশ্চিতে আমাদের নারী নেতৃবৃন্দ এবং সুশীল সমাজের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে,” বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে, উইং প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপক কাজল চ্যাটার্জি প্রকল্পের উপর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং অধ্যাপক ইফতেখারুল আমিন “জাতীয় আর্থিক নীতি পর্যালোচনা” বিষয়ে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।

ইউএনডিপির জেন্ডার অ্যানালিস্ট শারমিন ইসলাম নারী-নেতৃত্বাধীন সিএমএসএমই-এর নীতি পর্যালোচনার একটি অধিবেশন পরিচালনা করেন, যেখানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী সাখাওয়াত হোসেন, মোঃ হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মোঃ জাকের হোসেন, মহাব্যবস্থাপক, এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রাম বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, রুমানা খোরশেদ, উপসচিব, এনএসডিএ, ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সচিব, পিডি, এটুআই, আইসিটি বিভাগ, ড. সাঈদ শেখ ইমতিয়াজ, প্রফেসর, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নেন।

পরে উইং প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প ব্যবস্থাপক কাজল চ্যাটার্জি জেন্ডার সংবেদনশীল নীতিসমূহের পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া সম্পর্কিত স্থানীয় সরকার বিভাগের ভূমিকার উপর আরেকটি অধিবেশন পরিচালনা করেন। মোঃ হাবিবুর রহমান, যুগ্ম সচিব, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন শাখা, এলজিডি, মোঃ মাসুম পাটোয়ারী, যুগ্ম সচিব, উপজেলা শাখা, এলজিডি, মিস মুশফিকা সাতিয়ার, ঊর্ধ্বতন নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ডিডিএলজি মানিকগঞ্জ, শিউলি আক্তার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান – মানিকগঞ্জ, সাটুরিয়া, শারমিন আরা – উপজেলা নির্বাহী অফিসার – সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ জেন্ডার সংবেদনশীল নীতিসমূহের পর্যবেক্ষণে এলজিডি কর্তৃক গৃহীত উদ্যোগ বিষয়ে আলোচনা করেন।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), ইউএন উইমেন এবং ইউএনসিডিএফ, বাংলাদেশ সরকার এবং নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায়, উইমেনস এমপাওয়ারমেন্ট ফর ইনক্লুসিভ গ্রোথ (উইং) প্রকল্পটি ২০২০ সালের নভেম্বর মাস থেকে নারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিতে তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ এবং আনুষ্ঠানিক অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কাজ করছে।

ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here