এমবিএ কৃষক রিপন খান

0
উদ্যোক্তা মোঃ রিপন খান

একটা সময় ছিল যখন লেখাপড়া শিখে কৃষকের সন্তানও কৃষিতে আগ্রহ দেখাতেন না। সেই যুগ আর নেই। নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কৃষির অভাবনীয় সাফল্যে সেসব এখন পৌরাণিক গল্পের মতো। এখন কৃষিতে ঝুঁকছেন উচ্চশিক্ষিতরা। কৃষি ও কৃষি উদ্যোগে সম্পৃক্ত হয়ে স্বাবলম্বীও হচ্ছেন অনেকে। এরকম একজন তরুণ মোঃ রিপন খান, যার প্রতিষ্ঠানের নাম স্বস্তি (“SHOSTI”)।

উদ্যোক্তা রিপনের বাবা একজন ব্যবসায়ী এবং মা গৃহিণী। চার ভাইবোনের মধ্যে রিপন দ্বিতীয়। গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের কাওখালী উপজেলায়, সেখানেই বড় হয়েছেন। ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে বিবিএ এবং এমবিএ শেষ করে কিছুদিন একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন।

কিন্তু, ছোটবেলা থেকেই তার একজন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্নর ছিল। স্বপ্ন পূরণে এগ্রো প্রোজেক্ট শুরু করেন। তার মূল উদ্দেশ্য কম খরচে অরগানিক খাবার সরবরাহ।

তিনি বলেন, ‘করোনাকালীন নিজের পরিবারের জন্য কিছু ফসল উৎপাদন করতে শুরু করেছিলাম। যখন দেখতে পারি যে ফসল ভালোই উৎপাদন হচ্ছে, তখন মাথায় ভাবনা আসলো যে এই প্রকল্প বড় করে শুরু করতে পারলে নিজেরা ভালো থাকার পাশাপাশি আশেপাশের সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারবো। সেই লক্ষ্যে আমি বড় জায়গা খুঁজতে থাকি। কারণ এগ্রো প্রকল্পে অনেক বড় জায়গা দরকার। প্রাথমিক পর্যায়ে এতো জায়গা কেনা সম্ভব নয় বলে ভাড়া নেওয়ার জন্য জমি খুঁজতে থাকি। তখন আমাদের একজন আপার সহযোগিতায় সৌভাগ্যক্রমে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রায় ১,০০০ বিঘা জমি পেয়ে যাই। সেই থেকে আমাদের যাত্রা শুরু।’

পণ্য সম্পর্কে রিপন জানান: কাঠের ঘাণিতে ভাঙ্গা সরিষার তেল, গাওয়া ঘি, হাতে ভাজা মুড়ি, হাতে বানানো লাল চিনি, বিভিন্ন রকমের মাছ, সকল রকম শাক-সবজি নিয়ে কাজ করি। সবই ত্রিশাল প্রজেক্টে হয়।

লাল চিনি সম্পর্কে তিনি জানান, হাতে বানানো লাল চিনি উৎপাদনের পর অপরিশোধিত থাকে। তাই আখের সব গুণাগুণ যেমন ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, শর্করা, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, লৌহ, অ্যামাইনো অ্যাসিড, জিঙ্ক, থায়ামিন, রিবোফ্লবিন, ফলিক এসিড, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ঠিক থাকে। এজন্য সাদা চিনির চেয়ে লাল চিনির উপকারিতা বেশি। চিনি ছাড়াও ব্লেক রাইস, সবজি, বিভিন্ন ধরনের মশলাও সরবরাহ করে থাকেন তিনি।

ত্রিশালে তার একটি ফ্যাক্টরি আছে যেখানে ১০০ জন কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। উদ্যোক্তার একটি ফেসবুক পেজ আছে যার নাম “স্বস্তি”। তিনি প্রতি মাসে প্রয়োজন অনুযায়ী উৎপাদন করেন। ফেসবুক এবং আউটলেটের মাধ্যমে মাসে ৮-১০ লাখ টাকা বিক্রি করে থাকেন। ঢাকায় আওরঙ্গজেব রোড, মোহাম্মাদপুরে একটি আউটলেট আছে। হেড অফিস বনানী ডিওএইচএসে।

রিপন খান ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন: কিছুদিনের মধ্যেই আমাদের পণ্য সারা দেশে এবং দেশের বাইরে এক্সপোর্ট করতে চাই। কৃষির নব নব আবিষ্কার ও উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে নিজের মেধা খাটিয়ে শিক্ষিত প্রজন্ম আধুনিক কৃষি পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত করকে, সেই স্বপ্ন দেখি।

মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here