ধর্মীয় অনুপ্রেরণা থেকে ব্যবসায় শুরু করেছেন উদ্যোক্তা জুম্মান

1

‘হালাল ও নির্ভেজাল পণ্য আপনার দুয়ারে পৌঁছে দেয়ার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা’ এই স্লোগান নিয়ে উদ্যোগ শুরু করেছেন উদ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম জুম্মান। তার ইচ্ছা এই স্লোগানটিকে বাস্তবায়িত করা। তিনি চান তার পণ্যগুলো মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের নাগালে পৌঁছে যাক। যাতে খেটে যাওয়া মানুষগুলো নির্ভেজাল পণ্য গ্রহণ করে সুস্থ থাকতে পারে। তাই সুপার শপের আদলে ছিম ছাম কিছু শপ খোলার ইচ্ছাও আছে তার । যেখানে এই শ্রেণির মানুষগুলো নির্বিঘ্নে নির্ভেজাল পণ্য ক্রয় করতে পারে।

পড়াশুনা করা অবস্থায় জেএইচ অটোব্রিকস নামে একটি কোম্পানির গুলশানস্ত হেড অফিসে কিছু দিন জব করেন। নিজে কিছু করার স্বপ্ন ছিলো কিন্তু করতে পারছিলেন না। জবটাও কিছু দিন পর চলে যাওয়াতে ভেঙে পড়েন। এরমধ্যে বিবাহ সম্পন্ন করার পর আরো চাপে পড়ে যান। অতপর মায়ের দেয়া, সাহস ও সহযোগিতায় উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

প্রথমে তার এক বন্ধুর মাধ্যমে কেএন-৯৫ মাস্ক কেনার মাধ্যমে কাজ শুরু করেন। অতপর চা পাতা নিয়ে নিজে একাই শুরু করেন। কিন্তু বেশি দিন এগিয়ে যেতে পারেননি। তাই কাজ একটু বন্ধ রেখেছিলেন। অতপর আমের সিজনে আম আর রোজার সময় খেজুর-এর মাধ্যমে নতুন ভাবে আবার শুরু করেন। এখন মধু, ঘি, ড্রাই ফ্রুটস, ঘানিতে ভাঙানো সরিষার তেল, খেজুর, ত্বীন ফল নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে তার ক্ষুদে মৌমাছির মধু, গাওয়া ঘি, ঘানিতে ভাঙানো সরিষার তেল ও খেজুরের গুড়ের অর্ডার সম্পূর্ন করেছেন। এছাড়া দেশের ভিতর ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী, কুষ্টিয়া জেলায় তার পণ্য যাচ্ছে। বর্তমানে মাসে ৫০-৬০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন। এই পরিধি দিন দিন বাড়ছে।

পুঁজি বলতে মায়ের দেয়া বিশ হাজার টাকাই ছিলো তার পুঁজি। সেটা দিয়েই শুরু করা।
এখন তার আইটেম হলো প্রাকৃতিক চাকের মৌমাছির মধু, ঘানিতে ভাঙানো সরিষার তেল, গাওয়া ঘি, ভিটামিনের খনি ড্রাইফ্রুট, বিভিন্ন প্রকারের খেজুর, ত্বীন ফল, সিজনাল আইটেম হিসাবে খেজুরের ঝোলা গুড় ও পাটালি। কর্মী বলতে তিনি নিজেই। সাথে সহযোগী হিসেবে আছে পরিবারের সদস্যবৃন্দ। অনলাইনে ‘আমিন বাজার’ নামে তার একটি ফেসবুক পেইজ আছে।

দুই ভাইয়ের মধ্যে সংসারের বড় ছেলে জুম্মান।
বাবা রুহুল আমিন পেশায় মুদি ব্যবসায়ী, মা ঝর্না বেগম গৃহিনী। গ্রামের বাড়ী পটুয়াখালী হলেও সব কিছুই গাজীপুরে। জন্ম ঢাকার বাড্ডায়। সেখানেই শৈশব কৈশোর কেটেছে আর এখন গাজীপুরে। প্রথম বিদ্যালয় বাড্ডা বিদ্যানিকেত স্কুল সেখান থেকে সানরাইজ কিন্ডার গার্ডেন-এ কিছু দিন পড়েছিলেন। তারপর গাজীপুরে বাড়ি করে চলে আসলে টেকনগ পাড়া প্রাইমারি স্কুলে পড়া লেখা শুরু করেন। এরমধ্যে বাবা খুব অসুস্থ হয়ে যাওয়াতে আবার ঢাকা চলে যান। সেখানে জামিয়া দারুল উলূম নূরিয়া ও জামিয়া মিফতাহুল উলম মধ্য বাড্ডা মাদ্রাসায় কুরআন হিফজ এবং ফিকাহ বিষয় পড়ালেখা করেন। তারপর সালনা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল (বিজ্ঞান বিভাগ), গাজীপুর আইডিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি (বিজ্ঞান বিভাগ) ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটির ইসলামের ইতিহাস বিভাগ থেকে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।

নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে উদ্যোক্তা জুম্মান বলেন, ‘ব্যবসা আমাদের ধর্ম অনুযায়ী সুন্নাতি পেশা। এরমধ্যে আছে বারাকাহ, স্বাধীনতা, উপকারীতা, জনকল্যাণ তাই এটাকেই বেছে নিয়েছি। ভবিষ্যতে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই’।

সাইদ হাফিজ ,
উদ্যোক্তা বার্তা

1 COMMENT

Leave a Reply to Md akash Cancel reply

Please enter your comment!
Please enter your name here