আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধপক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশী কার্যক্রমের আওতায় অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে গৌরনদী উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা পেলেন মোসাঃ উম্মে হানী।
গত ৯ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে নগরীর সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে জেলা ও সদর উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সম্মাননা দেওয়া হয়। সেখানে তিনি সম্মাননা গ্রহণ করেন।
মোসাঃ উম্মে হানী সম্মাননা পেয়ে অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে একটু একটু করে শুরু করেছিলাম। কিন্তু শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত বলে পুরোপুরি কাজ করতে পারিনি। ২০২০ সালে করোনা কালীন সময় নতুন করে উদ্যোগ নিয়ে মেয়েদের প্রশিক্ষণ (ব্লক বাটিক হ্যান্ড পেইন্ট ও সুতার কাজ) দেওয়া শুরু করি এবং নিয়মিত প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে ব্লক, বাটিক, হ্যান্ড পেইন্ট ও সুতার কাজসহ যাবতীয় বস্ত্র কাস্টমাইজড করে বাংলাদেশসহ দেশের বাইরে বিক্রি করছি। আমার প্রতিটি মা ও বোন প্রশিক্ষণ নিয়ে খুব ভালো কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকে নিজে নিজে পণ্য তৈরি করছেন এবং উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন।’
মোসাঃ উম্মে হানীর মতে, ‘প্রতিটি নারীই একেকজন জয়িতা। পুরুস্কার হচ্ছে আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। সফলতার কোন সরল পথ নেই। কেউ যদি দূরদর্শী হন, ইচ্ছে শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সেটা বাস্তবায়নের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন, তাহলে সফলতা আসবে।
হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে বসে থাকলে কোন সমাধান নেই বরং হোঁচট খেয়েও পেছনে না ফিরে এগিয়ে যাওয়ার নামই সফলতা। আমি মনে করি, একজন নারীর সফলতা মানে একটি পরিবারের সফলতা তথা একটি সমাজ ও দেশের সফলতা।’
মফস্বল শহরে বসবাসকারী নরম কাঁদা মাটির সংস্পর্শে থাকা শিক্ষার্থীদের প্রিয় শিক্ষক মোসাঃ উম্মে হানী। তিনি বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা।
শিক্ষকতা পেশায় থাকার সুবাদে অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কাজ করার সুবাদে খুব সহজেই তিনি সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। প্রথমে গ্রাম বাংলার মেয়েদের নকশীকাঁথা ও বেবি নকশীকাঁথা করতে উৎসাহিত করেন। তারপর তৃণমুল পর্যায়ের নারীদের নিয়ে তিনি বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজের প্রশিক্ষণ দেন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম “বাংলার ঐতিহ্য”।
উদ্যোক্তা মোসাঃ হানী তৃনমুল পর্যায়ের প্রতিটি নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রতিটি নারীকে স্বাবলম্বী করে তুলতে চান। তিনি প্রায় ২৫ জন সহযোদ্ধা সাথে নিয়ে কাজ করছেন। পাশাপাশি সুতার কাজ, ব্লক ও বাটিক প্রিন্ট, দর্জি বিজ্ঞান, হ্যান্ড পেইন্টসহ নানাবিধ কাজের প্রশিক্ষণ দেন।
তিনি বলেন, ‘আমার উদ্যোক্তা হওয়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তৃনমুল পর্যায়ের নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। যাতে করে প্রতিটি নারী তার পরিবারকে অর্থনৈতিক সাপোর্ট দিতে পারে। বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়েই নিজেকে সকল পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত করার নামই হচ্ছে উদ্যোক্তা। ‘
মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা