কম্বো কেক দিয়ে উদ্যোক্তা বৃষ্টির সফলতা

0

“ছোটো বেলা থেকে ইচ্ছে ছিলো ডাক্তার হবো, কিন্তু যখন বুঝতে শিখেছি কলেজে উঠলাম তখন থেকে মনে মনে ইচ্ছে ছিল বিজনেস উইমেন হবো। কিন্তু, পরিবারকে একথা জানালেই তারা একটা হাসি দিয়ে ইগনোর করতো। আলহামদুলিল্লাহ আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি। আমি অনেক খুশি।” এভাবেই নিজের উচ্ছ্বাসের কথা জানাচ্ছিলেন উদ্যোক্তা রজনী আক্তার বৃষ্টি।

কবি নজরুল সরকারি কলেজ এর রসায়ন বিভাগের অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী রজনী আক্তার বৃষ্টি। তার জন্মস্থান ঢাকার জুরাইনে। লকডাউনে প্রায় দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী গৃহবন্দী হয়ে পড়ে। লকডাউনের সেই অবসর সময়ে শখের বসে কেক বানাতেন বৃষ্টি। কখনো কেক বানাতেন ঘরের জন্য, কখনো বা বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজনদের খাওয়াতেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রোগ্রামে গিফট করতেন নিজের হাতে বানানো কেক। সবাই বেশ পছন্দ করতেন বৃষ্টির কেক। যেহেতু কাজটাকে তিনি খুব ভালোবাসেন তাই তিনি একদিন সিদ্ধান্ত নিলেন, নিজের তৈরি কেক দিয়ে বিজনেস শুরু করবেন। পরিবারকে জানালেন তার সিদ্ধান্তের কথা। পরিবার তাকে কোনো প্রকার বাধা দিলেন না৷

তারপর তিনি তার খুব ভোজনপ্রিয়দের জন্য কম্বো কেক বানিয়ে ‘উই’ নামক একটি গ্রুপে পোষ্ট করেন। অনেক দ্রুত সাড়া পান তিনি। প্রথম পোষ্টেই অর্ডার আসতে শুরু করে। শুরু হলো বৃষ্টির উদ্যোক্তা জীবনের পথ চলা।

মূলত, প্রথম দিকে মূলধন বলতে ঘরে থাকা উপকরণ দিয়েই কেক বানানোর উদ্যোগ নেন। এখন কেক এর পাশাপাশি চকলেট এবং বিভিন্ন ধরনের ডেজার্ট নিয়েও কাজ করছেন উদ্যোক্তা রজনী আক্তার বৃষ্টি।

খুব কম সময়ের মধ্যে গ্রাহকের অনেক সাড়া পেয়েছেন তিনি।অল্প কয়েকদিনের মধ্যে পেয়েছেন প্রচুর পরিমাণে রিপিট কাস্টমার। বর্তমানে কোনো কর্মী নেই,নিজের কাজ নিজেই করেন। সম্পূর্ণ সহযোগীতা পাচ্ছেন পরিবারের কাছ থেকে। সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করছেন তাঁর মা।

উদ্যোক্তা রজনী আক্তার বৃষ্টি TubeRose Food House নামে একটি অনলাইন প্লাটফর্মে তার পণ্য বিক্রি করে থাকেন। তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় কেক হলো মিক্স/কম্বো কেক। যেখানে একই সাথে আটটি ভিন্ন ফ্লেভারের কেক রয়েছে। এই কেকটি পুরো বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সাত মাসে উদ্যোক্তা রজনী এই কেক মোট ৯০০ এর অধিক অর্ডার সম্পন্ন করেন। গিফট হিসেবে অনেকেই কম্বো কেক পছন্দের তালিকাতে রাখছেন। “মিক্স কেক এর মাধ্যমেই সবাই আমাকে চিনেছে”- এমনটাই জানালেন, উদ্যোক্তা রজনী আক্তার বৃষ্টি।

উদ্যোক্তা বার্তার দীর্ঘ আলাপচারিতায় উদ্যোক্তা আরো বলেন, “বাঁধা বলতে আমার রোগ আই বি এস । যেটার কারণে শরীর খুব দূর্বল হয়ে যেত তখন কাজ করতে সমস্যা হতো এছাড়া বেশি বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়নি। তবে প্রথম অবস্থায় ডেলিভারি নিয়ে সমস্যা হয়েছিল কিন্তু এখন সেই সমস্যা নেই। ভবিষ্যতে নিজের একটা বেকারী করার ইচ্ছা আছে। যে কোনো কাজে সমস্যা থাকবেই সেটাকে মোকাবেলা করেই সামনে এগিয়ে যেতে হয়৷ তাই তরুণ উদ্যোক্তাদের বলবো সৎ চেষ্টা , ধৈর্য্য এবং পরিশ্রম নিয়ে কিছু করার চেষ্টা করতে। ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করতে করতে একসময় সফল হওয়া যাবে। “

সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here