এসএমই খাতের উন্নয়নে ইউএনডিপির সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি

0

টেকসই প্রবৃদ্ধি ও নতুন বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে এসএমই খাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ইউএনডিপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো দুই সপ্তাহব্যাপী ‘ইনোভেশন ইন এসএমই এক্সপোর্ট রেডিনেস অ্যান্ড এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রাম’। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশানে ওয়েস্টিন হোটেলে সমাপনী অনুষ্ঠান হয়।

তিন ধাপে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে ছিল বিষয়টি ভালোভাবে বোঝার জন্য কর্মশালা ও রপ্তানি জন্য প্রস্তুতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ। সবশেষে ম্যাচ মেকিং ও প্যানেল আলোচনার মধ্য দিয়ে দুই সপ্তাহের বিশেষ আয়োজনটি শেষ হয়।

সমাপনীতে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ডঃ মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন: যেহেতু ২০২৬ সালের মধ্যে আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ঘটবে, সেজন্য আমি আমাদের এসএমই উদ্যোক্তাদের নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে আছি। এর কারণ তাদেরকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে কাজ করতে হবে।

রপ্তানি প্রভাবিত এরকম সময়ে এসএমই উদ্যোক্তাদের সহায়তা করার জন্য তিনি ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানান।

ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিস্ট এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের পলিসি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজরি ইউনিট প্রধান ডঃ নাজনীন আহমেদ বলেন, আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশের সামনে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। বৈশ্বিক বাজারে আমরা ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ট্যাগযুক্ত পণ্য দেখতে চাই যা খুবই আশাব্যঞ্জক।

তিনি বলেন: এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের এসএমই উদ্যোক্তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন এবং অদূর ভবিষ্যতে এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

এডিবি জিএফএ সেবা কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের জাতীয় জেন্ডার স্পেশালিস্ট পারভীন এস. হুদা বলেন, ‘আমরা সর্বদা অন্যদের কাছ থেকে সেরা অনুশীলন এবং উদাহরণ খুঁজি। অথচ আমাদের নিজস্ব পণ্যগুলোকে বিশ্ব বাজারে টেকসই করতে সৃজনশীল এবং উদ্ভাবনী হওয়ার দিকে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। আমরা মানসম্পন্ন রপ্তানি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সৃজনশীল এবং উদ্ভাবনী হওয়ার বিষয়ে ইউএনডিপি বাংলাদেশের আরও সহায়তা চাই।’

এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আয়োজকদের পক্ষ থেকে ম্যানেজিং ডিরেক্টর উইমেন ইন ডিজিটাল এবং ফাউন্ডার আছিয়া নীলা। তিনি বলেন, ‘আমাদের নারী উদ্যোক্তারা বরাবরই অনেক ইমোশনাল। তিনি সবাই কে আহ্বান করেন, নিজেদের সাফল্যের একমাত্র উত্তরাধিকারী তারা নিজেরাই, সেটাকে গ্রহণ করতে হবে। নিজের আলোর আগে নিজেকে আলোকিত করতে হবে।

চামড়া, পাট, বিশেষ পোশাক, খেলনা এবং প্যাকেজড ফুডের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাত থেকে আসা ৪০ জন এসএমই উদ্যোক্তা রপ্তানি পণ্য ও বাজার বিষয়ে এ কর্মসূচিতে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। রপ্তানির সামগ্রিক নীতি এবং ব্যবসায়িক রপ্তানি কৌশলগুলো তৈরি করার জন্য সাধারণ যে প্রক্রিয়া ও দক্ষতা দরকার, সেসব বিষয়ে তারা প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিয়েছেন।

একটি সেন্সমেকিং ওয়ার্কশপ দিয়ে শুরু হয়ে এই কর্মসূচিটি তিনটি ধাপে সম্পাদিত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ইউএনডিপি বাংলাদেশ পাট, চামড়া, খেলনা, পোশাক, আরএমজি এবং অন্যান্য খাতে এসএমই’র বর্তমান চাহিদা এবং চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে। দ্বিতীয় ধাপে উদ্যোক্তাদের রপ্তানি যাত্রা, রপ্তানির প্রস্তুতি এবং রপ্তানি পরিষেবা ও প্রভাব বোঝার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার ওপর ভিত্তি করে অভিজ্ঞতাগুলো নিজেদের মধ্যে বিনিময়ের জন্য একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও ছিল একটি ম্যাচ মেকিং সেশন।

এছাড়াও উইমেন ইন ডিজিটাল যেহেতু নারীদের প্রযুক্তিতে আনার জন্য কাজ করছে, তাই নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিনা মূল্যে একটি একাউন্টিং সফটওয়্যার (billto.io) ১ বছরের ফ্রি সাবক্রিপশন দেয় এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে।

ইউএনডিপি আশা করছে, দুই সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচিটি দেশের সীমান্তের বাইরে বাণিজ্য সম্পর্কে তথ্যের অভাব যেমন দূর করবে তেমনি প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রেও এসএমই উদ্যোক্তাদের সহায়তা করবে। তিনটি ধাপে সম্পাদিত প্রোগ্রামটি বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ, চাহিদা এবং আসন্ন এলডিসি উত্তরণের সময়টিতে এসএমই খাতের জন্য উদ্ভাবনী সমাধান তৈরির ক্ষেত্রে সমালোচনামূলক অন্তর্দৃষ্টি এবং নতুন শিক্ষা দিতে পেরেছে বলে মনে করছে ইউএনডিপি।

ডেস্ক রিপোর্ট,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here