উদ্যোক্তা সামিরা পিনাশ

কাজী সামিরা পিনাশ গল্পের মাধ্যমে শোনালেন কিভাবে ইট-পাথরের ঢাকা শহরে ঘরের মধ্যেই সবুজকে নিয়ে এসেছেন। সৌন্দর্যময় করে তুলতে পরিবেশবান্ধব নানা সামগ্রীর মেলবন্ধনের নাম হলো ‘অন্দরে নন্দন’।

উদ্যোক্তা সামিরা নিজের সম্পর্কে বলেন, যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় পড়ালেখা করাকালীন সন্তানের মা হয়েছিলেন, তাই মা হওয়ার অনুভূতি খুব কাছের থেকে অনুভব করতে চাচ্ছিলেন। তাই সেই সময় চাকরি করে কর্মী হওয়ার ইচ্ছা জাগেনি। এর পর সন্তান যখন একটু বড় হতে লাগলো তখন তিনি চিন্তা করলেন, সন্তান লালন-পালন করার পাশাপাশি কী করা যায়? সেখান থেকেই মূলত উদ্যোক্তা হওয়ার ভাবনা আসে তার। একজন মা হিসেবে নিজের সন্তানের পাশাপাশি বৃক্ষকে সন্তানের মমতা দিয়ে বড় করার কর্তব্য পালন করছেন উদ্যোক্তা সামিরা।

উদ্যোক্তা সামিরা পিনাশ শখের বশেই গাছ ও নানা ঝুড়ি সংগ্রহ করে বাসা সাজাতেন। ছবি তুলে ছড়িয়ে দেন সোশ্যাল মিডিয়ার নানা গ্রুপে। জানালেন, ‘আমার গাছের যত্ন আর ঝুড়িগুলোর প্রতি সবার আগ্রহ দেখে নিজেরও উৎসাহ এসে গেলো, শখকে কাজ বানিয়ে ফেললাম।’

উদ্যোক্তা জানান, ‘এত পড়াশোনা করে গাছ-মাটি নিয়ে কাজ করবো!’ এ ধরনের কথা গায়ে না লাগানোর মানসিক প্রস্তুতি নিতে হয়েছিলো তাকে। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ ছিলো উৎস খুঁজে বের করা। এক ফ্যাক্টরি থেকে আরেক ফ্যাক্টরি ঘুরেছেন, কিন্তু এই সেক্টরটা শতভাগ রপ্তানি নির্ভর হওয়ায় কারো থেকেই তেমন সহযোগীতা পাননি। কেউবা রাজি হলেও অনেক বড় বিনিয়োগ আশা করেন, যা তার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। কিন্তু দমে না গিয়ে গ্রামে কারিগর খুঁজতে থাকেন। শেষমেশ নিজের বাসার কিছু ছবি দিয়ে ‘অন্দরে নন্দন’র যাত্রা শুরু করেন।

তিনি বলেন, প্রথম অর্ডারের টাকায় কারিগরের মজুরি দিয়েছিলেন। ২০২০ সালে ৭ই জুলাই শূন্য বিনিয়োগে শুরু করা উদ্যোগটির। প্রথমে গাছের সঙ্গে হোগলাপাতার তৈরি প্ল্যান্টার দিয়ে কাজ করলেও এখন পাট, ছন, সুপারি পাতা, কচুরিপানা, বাঁশ, বেত-সবকিছুই যোগ হয়েছে।

উদ্যোক্তা নিজের পণ্য সম্পর্কে বলেন, জুট কটন, ফ্লোরম্যাট, প্লেসমেট, প্লান্টার, লন্ড্রি বাস্কেট, অর্গানাইজার ট্রে, ইনডোর প্লান্টস এসব সহ উদ্যোক্তার পেজে সুবিধা হলো এখানে গ্রাহক একই সঙ্গে প্লানট এবং প্লানটার দুটোই পাচ্ছেন। ইট-পাথরের শহরে ঘরের এক চিলতে সবুজ ও নান্দনিক উপকরণগুলো ‘অন্দরে নন্দন’ দিয়ে প্রদর্শন করেন উদ্যোক্তা।

সামিরা আরো বলেন, প্রথমে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকলেও এখন বেশ আত্মবিশ্বাসী তিনি। অল্প কিছু দিনেই অন্দরে নন্দন গাছ, সেগুলোর পরিবেশবান্ধব প্ল্যান্টার আর সেবা দিয়ে অনেকের আস্থাভাজন হতে পেরেছে।

উদ্যোক্তা সামিরা পিনাশ বলেন, ‘এখন দায়িত্বটাও একটু বেশি, ইচ্ছে আছে পরিবেশবান্ধব পণ্যের প্লাটফর্ম হিসেবে ‘অন্দরে নন্দন’কে সবার কাছে পরিচিত করার আর উপহার হিসেবে গাছ দেয়ার প্রচলনকে জনপ্রিয় করার’।

মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা ঢাকা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here