ইউনেস্কোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল রিকশা ও রিকশাচিত্র

0

জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ‘রিকশা’ ও ‘রিকশা চিত্র’।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার কাসানে বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিষয়ক কনভেনশনের চলমান ১৮তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সভায় এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ফলে রিকশা ও রিকশাচিত্র বৈশ্বিক বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল।

এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বাউলগান (২০০৮), জামদানি বুননশিল্প (২০১৩), মঙ্গল শোভাযাত্রা (২০১৬) ও শীতলপাটি বুননশিল্পের (২০১৭) পর পঞ্চম বিমূর্ত ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেসকোর ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’ তালিকায় স্থান পেল রিকশা ও রিকশাচিত্র।

আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার কাসান শহরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন প্যারিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মুহম্মদ তালহা ও দূতাবাসের প্রথম সচিব ওয়ালিদ বিন কাশেম। এ অধিবেশন ইউনেস্কোর ইউটিউব অ্যাকাউন্টে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

এতে বাংলাদেশের রিকশা ও রিকশাশিল্প নিয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়। তাতে বলা হয়, ঢাকা শহরের তিন চাকার এই বাহনে থাকে নানা রঙের বৈচিত্র্য। বাহন হিসেবে শহরের মানুষের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে রিকশা। একই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়, রিকশাচিত্র শুধু একটি শিল্প নয়, এটি মানুষের সমকালীন জীবনের গল্প বলার চলমান ক্যানভাস। রিকশাচিত্রের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃতি থেকে শুরু করে নানা বিষয়ের মধ্যে চলচ্চিত্রের অভিনেতাদের মুখচ্ছবিও উঠে আসে।

‘বিমূর্ত ঐতিহ্যের সুরক্ষা’ স্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া ইউনেসকোর এ অধিবেশনে এবার আরও স্বীকৃতি পেয়েছে ভারতের গরবা, মধ্যপ্রাচ্যের হারিসসহ সাতটি ঐতিহ্য এবং কিউবা, মেক্সিকোর বলেরোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আরও বেশ কিছু বিমূর্ত ঐতিহ্য। সর্বশেষ ২০১৭ সালে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতলপাটি বুননকৌশলকে বিমূর্ত সংস্কৃতি ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেসকো।

ইউনেসকোর নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হয়ে বাংলা একাডেমি রিকশা ও রিকশাচিত্রের বিষয়টি পাঠিয়ে দেয়। তবে এর কাজ শুরু হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। ২০১৮ সালের ইউনেসকোর আন্তসরকার কমিটির ১৩তম অধিবেশনের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে তথ্য হালনাগাদ করার উদ্দেশ্যে এ–সংক্রান্ত ফাইলটি ফিরিয়ে আনা হয়। নানা পর্যায়ে সংশোধনের পর সেটি ইউনেসকোর স্বীকৃতির জন্য আবার পাঠানো হয়। ২০২২ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় নথি নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদেশের রিকশা চিত্র ইউনেস্কোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় সভায় উপস্থিত আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সদস্য, মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতসহ শতাধিক দেশের প্রতিনিধি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি এ চিত্রকর্মের বৈচিত্র্যপূর্ণ বহিঃপ্রকাশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

এ অর্জনের মাধ্যমে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সাফল্যের মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত হলো।

সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here