তৃতীয় জাতীয় চা দিবসে প্রথম বারের মতো ৮ ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
‘চা দিবসের সংকল্প, শ্রমিকবান্ধব চা শিল্প’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশে ৪ জুন তৃতীয়বারের মতো উদযাপিত হয়েছে জাতীয় চা দিবস। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চা বোর্ডের উদ্যোগে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
বরাবরের ধারা থেকে বের হয়ে চা রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘৩য় জাতীয় চা দিবস উদযাপন ও ১ম জাতীয় চা পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। শান্তির পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল ইসলাম এনডিসি বলেন: ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড়ে পরীক্ষা মূলকভাবে চা চাষের সিদ্ধান্ত নেন, আজ পঞ্চগড় চায়ের লীলাভূমিতে পরিনত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নজরদারি এবং নানামুখী উদ্যোগ ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দেশের চা খাত আজ টেকসই ও মজবুত অবস্থানে এসেছে।তারই ধারাবাহিকতায় ২০২১ বাংলাদেশে সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন করে ৯৬.৫ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদন হয়। ২০২৩ সালে ১০২ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আছে।
চা শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রথমবারের মতো চালু ‘জাতীয় চা পুরস্কার’-২০২৩ এক ব্যক্তি ও সাতটি প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তারা হলেন, একরপ্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী চা বাগান– ভাড়াউড়া চা বাগান, সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনকারী বাগান– মধুপুর চা বাগান, শ্রেষ্ঠ চা রপ্তানিকারক– আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রডাক্টস, শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রায়তন চা উৎপাদনকারী আনোয়ার সাদাত সম্রাট (পঞ্চগড়), শ্রমিক কল্যাণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা বাগান– জেরিন চা বাগান, বৈচিত্র্যময় চা পণ্য বাজারজাতকরণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট, দৃষ্টিনন্দন ও মানসম্পন্ন চা মোড়কের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রিন ফিল্ড টি ইন্ডাস্ট্রিজ এবং শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী (চা শ্রমিক)– উপলক্ষী ত্রিপুরা, নেপচুন চা বাগান।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, “চায়ের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি, বিপণন প্রক্রিয়ায় আধুনিকায়ন এবং সর্বোপরি অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি চায়ের নতুন বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার পথ তৈরি করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু ছিলেন শ্রমিকবান্ধব নেতা। গরীব দুঃখী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ে সারাজীবন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যেন উনার প্রতিচ্ছবি। চা শ্রমিকদের বেতন নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব নিয়ে নিজে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করেন যা শ্রমিকরা নির্দ্ধিধায় মেনেও নিয়েছেন”।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, “চা বর্তমান সময়ে ২য় সর্বোচ্চ পছন্দের পানীয়। সারা বিশ্বে গড়ে প্রায় ২ মিলিয়ন কাপ চা পান করা হয়। শুধু তাই নয় চা বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের কাজও করে থাকে। আমরা চায়ের উৎপাদন বাড়াতে পারলে। চা রপ্তানিতে বাংলাদেশর অর্থনিতে বিরাট ভুমিকা পালন করবে।”
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈনুদ্দিন হাসান এবং বাংলাদেশ চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান ও বাংলাদেশ চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নৃপেল পাল
হাবিবুর রহমান
উদ্যোক্তা বার্তা