সব বাবা মায়ের আদুরে সন্তানের মতো তামান্না রশিদ টুম্পা ছিলেন আদুরে সন্তান। কিন্তু বড় হয়ে নানা প্রতিকূলতার মাঝে সংগ্রাম করে হতে হয়েছেন সফল। নিজের চেষ্টায় হয়ে উঠেছেন সফল উদ্যোক্তা। কোন ট্রেনিং বা কোর্স ছাড়াই হোমমেড খাবারের ব্যবসা করে সফলতার মুখ দেখেছেন।
২০১১ সালে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ার সময় টুম্পার বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু টুম্পা নিজে সাবলম্বী হতে চাইত। কারণ টুম্পা মেয়ে বলে কিছু করতে পারবে না এমন একটি চিন্তা কাজ করত তার মধ্যে তাই সে নিজের উদ্যোগে ২৭ই সেপ্টেম্বর ২০১৮ “আদিরাস হোমমেড ফুড” (Adiras homemade food) নামে একটা অনলাইন গ্রুপ খুলেন।
টুম্পা জানালেন, পুঁজি বলতে কিছুই ছিল না তখন। কি করবেন জানেন না, কোন পরিকল্পনা নেই। কখনো কোন কোর্স করেননি। কিন্তু গ্রুপ খোলার পর থেকে পরিচিতরা অর্ডার দিতে লাগলেন। নিজেরা যা রান্না করতেন সেই সব খাবারের ছবি তুলে ছবি পোস্ট করতে থাকেন গ্রুপে। প্রথম এ ফ্রোজেন দিয়ে শুরু করেন এরপর ক্যাটারিং।
২০১৮ সালের অক্টোবরের ৩ তারিখে প্রথম খাবার ডেলিভারি দেন টুম্পা। প্রথম ডেলিভারিটা স্বামী নাজমুল আলম রুপম দিয়ে আসেন। এভাবে চলতে থাকে টুম্পার হোমমেড খাবারের ব্যবসা।
টুম্পার সফলতার পেছনে আছে আরেক গল্প উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, বাবার অসুখ এবং চাকরি যাওয়ার পর হীনমন্যতায় ভুগতে শুরু করি। ভাবতে শুরু করি, আমি ছেলে না বলেই কি আজ এই অবস্থা! নিজ হাতে দাঁড় করানো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বিনা নোটিশে বাদ দেওয়া হয় বাবাকে। তখন যেন আকাশ ভেঙে পড়েছিল সবার মাথায়। তখনই টুম্পা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কিছু করবে। আর সেই সিদ্ধান্ত থেকেই আজ টুম্পার পথচলা।
টুম্পা বলেন, দিন রাত পরিশ্রম করে সফল হয়েছি। আমার সেই ছোট্ট গ্রুপ আদিরাস হোমমেড ফুডের সদস্য এখন ২২ হাজারের মতো। টুম্পা এখন বাবা-মা উভয়কেই দেখাশোনা করছেন।
আদিরাস হোমমেড ফুডে এখন সাহায্যকারী হিসেবে ৩ জন কাজ করছেন কখনো কখনো বাড়তি লোক ও লাগে এবং ডেলিভারির জন্য নিজস্ব লোক আছে ২ জন। টুম্পা এখন ৫ জনের কর্মসংস্থান করতে পেরেছে।
টুম্পা আরো বলেন, “আমি দরিদ্র অসহায় মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করতে চাই। আমার স্বপ্ন আমার একটি বড় রেস্তোরাঁ হবে যার কর্মচারী হবেন সব মহিলা”
টুম্পা পাশে পেয়েছেন স্বামী নাজমুল আলম রুপম এবং বাবা-মা মানসিক ভাবে সাহায্য করেছেন। তিনি বলেন, স্বামীর সহযোগিতা, বাবা-মা’র দোয়া এবং কঠোর পরিশ্রম না থাকলে কিছুই হতো না। পরিশ্রম এবং শিক্ষার কোন বিকল্প নাই।
সফল হওয়ার জন্য দরকার আত্মবিশ্বাস এবং কঠোর পরিশ্রম। যা করে আজকে সফল উদ্যোক্তা তামান্না রশিদ টুম্পা।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না