রাজশাহী ফটোগ্রাফি সোসাইটির এক সুপরিচিত নাম এম আই মুন্নার আরবান এক্সপোজার।
ছোটবেলা থেকেই ছবি তোলা ছিল মুন্নার একটি শখের কাজ। বাসায় থাকা বিভিন্ন রকম ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করার কাজটি সব সময় করতেন। ২০১০ সালে বড় ভাইয়ের দেওয়া ক্যামেরা দিয়ে ফটোগ্রাফির কাজ বেশ ভালোভাবেই শুরু করেন। একটা সময় রাজশাহী শহরে ফটোগ্রাফির জন্য বেশ পরিচিতি পান এম আই মুন্না। সেই জনপ্রিয়তা থেকেই অফিসিয়ালি ২০১৫ সালে শুরু হয় ব্রাইডাল ফটোগ্রাফি এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম ‘আরবান এক্সপোজার’।
রাজশাহীর বিনোদপুরের ছেলে মুন্না। নিউ গভঃ ডিগ্রি কলেজ থেকে অনার্স করেছেন। সেই ছোট্টবেলা থেকেই ফটোগ্রাফি ছিল তার ভালোবাসা। ছাত্রাবস্থায় মডেল ফটোগ্রাফির অনেক কাজ করেছেন। শুধু তাই নয়, ফটোগ্রাফির পাশাপাশি মিউজিক ভিডিও, শর্ট ফিল্ম তৈরি, বিভিন্ন বিয়ের প্রোগ্রামগুলোতে ভিডিও করতেন।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2022/10/mid-1-2.jpg)
পরিবার থেকে বরাবরই সমর্থন পেয়েছেন তিনি। বড় ভাইয়ের দেওয়া ক্যামেরা দিয়েই ফটোগ্রাফির কাজটা নিয়মিত শুরু করেন। প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করতেন মুন্না। সেই সময় তার সাথে অনেকেই মডেল ফটোগ্রাফি করতেন। তাই ভিন্ন কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন।
ফটোগ্রাফার এবং সিনেমাটোগ্রাফার প্রীত রেজার কাজগুলো বেশ ফলো করতেন মুন্না। তার কাজগুলো দেখেই শিখে নেন সিনেমাটোগ্রাফির নানান কৌশল। তখন পর্যন্ত রাজশাহী শহরে সিনেমাটোগ্রাফির প্রচলন শুরু হয়নি। ২০১২ সালে তার বড় ভাই তাকে আবার Cannon 600D এর একটি DSLR ক্যামেরা কিনে দেন, শুধুমাত্র তার ফটোগ্রাফির প্রতি ভালবাসা দেখে।
কাজের প্রতি ভালবাসা থেকে সবসময় চেষ্টা করেন কীভাবে নিজেকে আরও দক্ষ ফটোগ্রাফার হিসেবে তৈরি করা যায়– সেই চেষ্টা থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ এবং প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন। ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি এবং রাজশাহী ফটোগ্রাফি সোসাইটিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন এম আই মুন্না।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2022/10/mid-2-2.jpg)
তার ভাইয়ের দেওয়া ক্যামেরাকে পুঁজি করে ২০১৫ সালে অফিসিয়ালি শুরু করেন সিনেমাটোগ্রাফি। ব্রাইডাল ফটোগ্রাফি, সিনেমাটোগ্রাফিসহ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর যাবতীয় কাজ হয় একটি ফার্ম থেকে। রাজশাহী শহরে প্রথম সিনেমাটোগ্রাফির যাত্রা শুরু হয় এম আই মুন্নার Urban Exposure এর মাধ্যমেই।
প্রফেশনাল জার্নির শুরুতে মুন্না একাই ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে তার সাথে সাতজনের একটি টিম রয়েছে। একটি ক্যামেরা থেকে এখন রয়েছে চারটি সনি মিররল্যাস ক্যামেরা। বছরে প্রায় দেড়শ থেকে দুইশ কাপলকে ফ্রেমে বন্দি করে তার প্রতিষ্ঠান। রাজশাহী বিভাগের প্রায় প্রত্যেকটি শহর-উপশহর পেরিয়ে ঢাকা, যশোর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা এবং সিলেটসহ বিভিন্ন জায়গায় ছুটে চলেছে আরবান এক্সপোজার টিম। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার কাপলকে ফ্রেমে বন্দি করেছেন মুন্না।
তিনি বলেন, আরবান এক্সপোজার এখন সাতজনের একটি পরিবার। ভবিষ্যতে এই পরিবারে আরও সদস্য যুক্ত করতে চাই। নতুন যারা ফটোগ্রাফি শিখতে চান তাদের জন্য আমরা ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেছি। সেই সাথে তাদের কাজের ব্যবস্থাএমও করবো। কীভাবে এই সেক্টর আরও ডেভেলপ করা যায়– সে ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2022/10/extre.jpg)
তিনি বলেন: নতুন যারা এই সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা কাজ শিখে আসবেন। অনেক ফটোগ্রাফির ভিড়ে ভালো কাজের মান কমে যাচ্ছে। সেজন্য টিকে থাকতে হলে কাজ শেখাটা খুবই জরুরি।
এম আই মুন্নার ছাত্রাবস্থায় ফটোগ্রাফির বেশ পরিচিতি থাকায় অনেক বন্ধু বান্ধব এবং শুভাকাঙ্ক্ষী তার আরবান এক্সপোজারকে সানন্দে গ্রহন করেছেন। অনেক জুনিয়র রয়েছেন তার কাছ থেকে কাজ শিখে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। এমনকি অনেকে নিজস্ব টিম তৈরি করে ব্রাইডাল ফটোগ্রাফির কাজটি করছেন বেশ সুনামের সাথে।
সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা