মাসে তিনি নয় থেকে দশ মণ আচার তৈরি করে থাকেন। তেঁতুল, চালতা, বরই, আম, আমড়া, কিসমিস, মরিচের আচার সহ আরো বিভিন্ন ধরনের আচার তিনি তৈরি করেন। তার মধ্যে বেশি চাহিদা তেঁতুল এবং বরই এর আচারের৷ এই যে ধুমধাম আয়োজনে প্রতি মাসে এতো আচার তৈরী হচ্ছে যা দিয়েই চলছে একটি প্রতিষ্ঠান সে প্রতিষ্ঠানের শুরুর গল্পটা ঠিক এমনটা ছিল না। গল্প ছিল ভিন্ন, প্রেক্ষাপট ছিল শূন্য থেকে শুরুর মত এক দারুন উদ্যোগের। আসুন জানা যাক সিরাজগঞ্জের সাজাদপুর উপোজেলার জামিরতা গ্রামে বেড়ে উঠা মো: ওমর ফারুক মন্ডলের গল্পটি।
নবম শ্রেণীতেই পড়াশোনার পাঠ শেষ করেছেন ওমর ফারুক। সিএনজি, পিকআপ সহ কয়েক ধরনের যানবাহন চালিয়েছেন বেশ কিছু বছর। যানবাহনগুলো চালানোর সুবাদে ছোট বেলা থেকেই মেলায় মেলায় ঘুরে বেড়াতেন তিনি। তার গাড়িতে করে মেলায় মালামাল নিয়ে যেতেন। তখন থেকেই মনের এক কোণে এক সুপ্ত বাসনা তৈরি হয়েছিল। তিনিও ভাবতেন এভাবে মেলায় মালামাল নিয়ে না এসে যদি আমি একটা স্টল দিতে পারতাম! সেই স্টলের ব্যবসা থেকে পাওয়া লাভে হয়তো আর এইসব যানবাহন চালাতে হতো না।
এই ইচ্ছা থেকেই আচার নিয়ে কাজের সূচনা। এবং পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে তিনি মেলায় মেলায় তার আচার নিয়ে যাবেন। সেই থেকে শুরু হলো পথচলা। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তিনি আচার নিয়ে কাজ করছেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজের প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। সেসময়ে ৬০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে তার পথচলা শুরু করেছিলেন ।শুরুর দিকে তিনি একাই সমস্ত দিক সামলাতেন। নিজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে আচারের ফল কিনে এনে নিজে আচার তৈরি করতেন।
এখন তার তিন জন কর্মী আছেন। নিজের পাশাপাশি তিন জন অসহায় মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করে দিয়েছেন মো:ওমর ফারুক মন্ডল ।
নুরুতজ্জামান নামে তার একটি অনলাইন পেজ রয়েছে। মেলার পাশাপাশি সেখান থেকেও তিনি আচার বিক্রি করে থাকেন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম সিরাজগঞ্জ আচার কর্ণার । মেলাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে তার আচার পৌঁছে দিয়ে থাকেন।।
কেউ যদি উদ্যোক্তা হতে চায় এমন কেউ যদি তার থেকে কোন সাহায্য চায় আচার তৈরি ব্যাপারে কেউ প্রশিক্ষণ চাইলেও তিনি সবার পাশে থাকবেন এমনটাই তার বক্তব্য। তিনি চান দেশে যেন বেকার না থাকে। দেশ যেন এগিয়ে যায়, উন্নয়নের পথে হাঁটে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সকল উদ্যোগ।
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা