গুণগত মানে বাংলাদেশের পাট অনন্য। ভালো পাট উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট অনুকূল পরিবেশ আছে দেশে। সেই পাটকে নতুন করে ব্র্যান্ডে পরিণত করতে কাজ করছেন গোল্ডেন জুট প্রডাক্ট এর স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ হাকিম আলী সরদার।
বাবা-মায়ের সপ্তম সন্তান তিনি। গ্রামের বাড়ি ভবদিয়া, রাজবাড়ি সদর। বড় হয়েছেন গ্রামের বাড়িতে। পড়াশোনা করেন ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে।
তিনি বলেন: উদ্যোক্তা জীবন শুরু ২০০৮ সালে। ভাবনাটা ছোট থেকেই এসেছে। অনেক শ্রম, নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আমি বর্তমানে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করার চেষ্টা করছি। প্রথমদিকে একটি চাকরি করেছি। কিন্তু চাকরি ছেড়ে স্বচ্ছল সমাজ গড়ার লক্ষ্যে এলাকার বেকার মানুষের কাজের ব্যবস্থা এবং অবহেলিত মহিলা ও প্রতিবন্ধিদের পাশে থাকার ইচ্ছা থেকে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। আর যেহেতু এই পণ্যের কাঁচামাল বাংলাদেশেই উৎপাদন হয় এবং সহজে পাওয়া যায় তাই এই পণ্য নিয়ে কাজ করা।

মাত্র পাঁচ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু তার। পাট, কাইশা, ডেডলিফ, কচুরিপানা, ধানের খড়, লেদার, ভুট্টা ও জলপাতা দিয়ে যাবতীয় হস্তশিল্পজাত পণ্য তৈরি করেন তিনি। এর মধ্যে আছে নার্সারি পট, বিভিন্ন রকমের বাস্কেট, টেবিল ম্যাট, টেবিল রানার, রাগস্, ডোর ম্যাট, কোস্টার, ফ্লোর রানার, লন্ড্রি বাস্কেট, স্টোরেজ বাস্কেটসহ নানা ধরনের পাট পণ্য।
বর্তমানে প্রায় তিন হাজার কর্মী কাজ করছেন। মোট তিনটি কারখানা ও ২৫টি সাব-সেন্টার আছে। একটি সাভারে আর বাদ-বাকি সবই রাজবাড়ী ও ফরিদপুরে। অনলাইনেও সক্রিয় তার প্রতিষ্ঠান।
দেশে বড় বাজারের পাশাপাশি তার পণ্য রপ্তানি হয় জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, গ্রিস, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, লন্ডন, আমেরিকা, কানাডা, সৌদি-আরব, কুয়েত, চায়না, দক্ষিণ কোরিয়া ও সুইজারল্যান্ডে। দেশের মধ্যে জেডিপিসির সেলস সেন্টার ও কিছু সুপার শপে তার পণ্য পাওয়া যায়। মাসে ৩-৪ লাখ পিস পণ্য উৎপাদন করে থাকেন যার বাজার মূল্য দুই থেকে সোয়া দুই কোটি টাকা।

ভবিষ্যতে মোঃ হাকিম আলী সরদার আরও মানসম্মত আরও বেশি পণ্য তৈরি করে দেশে ও বিদেশে বাজারজাতের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চান।
তরুন উদ্যোক্তাদের প্রতি তার পরামর্শ: তরুণরা যেন বুঝে-শুনে ও ব্যবসা সম্পর্কে প্রচুর পড়াশোনা করে উদ্যোগ শুরু করেন। মান বজায় রেখে এগিয়ে চললে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া সম্ভব।
মেহনাজ খান,
উদ্যোক্তা বার্তা