পৃথিবী যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। প্রতিদিন পরিবেশের পরিবর্তন আর আশপাশের উন্নতি এবং সঙ্গে নিজেদের মানোন্নয়নও করছেন। সবকিছুর এত উন্নতির মধ্য দিয়ে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে প্রতিনিয়ত অবহেলা করে যাচ্ছি সবাই। হ্যা বিয়ের কথা বলা হচ্ছে। সব মানুষই এখন শত ব্যস্ত। কেউ নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে আবার কেউ তার পরিবার নিয়ে, একটা সময় ছিলো যখন মানুষ শত ব্যস্ততার মধ্যে থাকার মাঝেও এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে প্রথম ধাপে রাখত। কিন্তু এখন ব্যস্ততা আর দায়িত্ববোধের স্থান থেকে এই বিষয়টিকে বয়স ৩০ এর পরে নিয়ে যাচ্ছে। আর তখন-ই সম্মুখীন হচ্ছে আসল সমস্যার। এই বয়সে গিয়ে ছেলে বা মেয়ে অনেকেই উদাসীন হয়ে যাচ্ছে।
আজকে যার কথা বলতে যাচ্ছি- তিনি এই বিয়ের প্রক্রিয়াকে কিভাবে মানুষের মাঝে সহজভাবে তুলে ধরা যায় এবং কেউ যেনো বিয়েকে কঠিন মনে করে এরিয়ে না যায়, তা নিয়ে কাজ করছে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে। তিনি একাধারে একজন মানবাধিকার কর্মী এবং সফল নারী উদ্যোক্তা। তার নাম তাসলিমা আক্তার।
যিনি দেশের সব থেকে বেশি বিবাহ সম্পন্নকারী প্রতিষ্ঠান তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়া ডট কম এর স্বত্ত্বাধিকারী। তার প্রতিষ্ঠান দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের থেকে শুরু করে এলিট শ্রেণি এবং দেশের বাহিরে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিয়ের সমন্বয় করে যাচ্ছেন তার প্রতিষ্ঠানের ২৫ জন কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়ে। তিনি ছিলেন গ্রামের সহজ সরল একজন গৃহিনী। স্বামীর হাত ধরে ঢাকায় পা রাখেন। এরপর তিনি দেখতে পান তার আশপাশের অসংখ্য মানুষ যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়া সত্বেও সমন্বয়ের অভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাসলিমা আক্তার ভাবতে থাকেন এ নিয়ে। তবে সাহস করতে পারছিলেন না সমাজের কারণে, মানুষ কি বলবে তা ভেবে।
তিনি ইতোমধ্যেই মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে সমাজে একটি স্ব-অবস্থান করে ফেলেছিলেন। ছুটে যেতেন মানুষের সুবিধা-অসুবিধায়, সমাজের বিভিন্ন সমস্যা বিষয় নিয়ে কাজ করে। তিনি উপলব্ধি করতে পারেন যে, সবাই বিয়েকে একটা ট্যাবু হিসেবে নিচ্ছে এবং সামাজিক অবক্ষয়ের একটি কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এটি। তখনি তিনি শুরু করে দেন বিয়েকে সবার মাঝে সহজলভ্য করে দেওয়া আর সমন্বয়ের ঘাটতি পূরণের কার্যক্রম। এই কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক রুপের নাম দেন তিনি ‘তাসলিমা ম্যারেজ মিডিয়া ডট কম’। যার কার্যক্রম ও কর্মপদ্ধতি ছিলো প্রচলিত অন্যান্য ম্যারেজ মিডিয়ার ব্যাতিক্রম।
শুরুটা তিনি একাই করেছিলেন। আশপাশের মানুষের হাজারো কটু কথা শুনেও তিনি কখনো থেমে যাননি। এভাবে হাজারো ঘাত-প্রতিঘাত পার করে তিনি সবার ঘরে ঘরে তার প্রতিষ্ঠানের বার্তা দিতে শুরু করেন। মানুষের চাহিদা থাকায় ভালো সারা পেতে শুরু করেন। এভাবে তিনি এই কার্যক্রমটাকে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢেলে সাজানো শুরু করেন তার প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে কাস্টমার রিলেশনশিপ ডিপার্টমেন্ট, ম্যাচ ম্যাকিং ডিপার্টমেন্ট, কাস্টমার সাপোর্ট ডিপার্টমেন্ট এবং এইচয়ার-এডমিন ডিপার্টমেন্ট নিয়ে অনেক তরুণের কর্মসংস্থানের স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে গোছালোভাবে মানুষের মাঝে সুনামের সঙ্গে বিয়ে বিষয়ক সেবা প্রদান করে আসছেন। তার প্রতিষ্ঠান বিবাহের সমন্বয় বা ম্যাট্রিমোনিয়াল সেবা ছাড়াও বিয়ের সকল ধরনের সেবা যেমন ওয়েডিং প্লান,ওয়েডিং ভিডিও, ওয়েডিং ড্রেস, মেকাপসহ সব ধরনের সেবা প্রদান করে থাকেন।
তাদের ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তিনি বকব্যের একপর্যায়ে বলেন, বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে যারা আছেন তাদের জন্য এই বিবাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে সহজলভ্য ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে সম্পন্ন করিয়ে দেয়ার জন্য যে ধরনেরই উদ্যোগ প্রয়োজন হোক না কেন তাই করবো। ব্যস্ততা আর ক্যারিয়ারের জন্য যারা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। তাদের জন্য এটাকে সহজকরণ করে যেন দেশের মানুষ।
তিনি চান দেশে মানুষের চাহিদা পূরণ করে অন্যান্য দেশের মানুষের জন্যও এই সেবাটাকে উন্মুক্ত করে দিতে। এ জন্য একটি বড় প্রজেক্টে হাত দিয়েছেন যা থেকে বিবাহ বিষয়ক সেবাগুলো একদম নিম্নবিত্ত মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তরাও খুব অল্প সময়ে সহজভাবে নিতে পারবে। এ বছরের শেষের দিকে এই মেগা প্রজেক্টটির কাজ শেষ হবে এবং শেষ হওয়ার পরেই খুব দ্রুত আনুষ্ঠানিকভাবে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার ইচ্ছা আছে।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা