উদ্যোক্তা শ্যামলী আক্তার শিল্পী

বগুড়া জেলার কাহালু থানার জামগ্রামের কন্যা শ্যামলী আক্তার শিল্পী। সাইদ আলী সরকার এবং শিরিনা বেগম দম্পতির কন্যা শিল্পীর জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা সবই জামগ্রামে।

মাধ্যমিক না পেরোতেই পড়াশোনার গণ্ডি শেষ করে পা বাড়াতে হলো স্বামীর ঘরে। কিন্তু গল্পটা শুরু হলো সেখান থেকে, জীবনটা যেন নতুন এক রুপ পেলো। মাধ্যমিক শেষ করতে না পারা মেয়েটির ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিলো ‘নিজে কিছু করবো যার দ্বারা পুরো দেশ আমায় চিনবে। নিজের কাজ দিয়ে নিজের পরিচয় তৈরী করবো’। কিন্তু আমার তো পড়াশোনা বেশি নেই, কি করবো সেখান থেকে মনে এলো আমি কিছু একটা পণ্য নিয়ে কাজ করবো। কিন্তু আমি এমন কোনো পণ্য নিয়ে কাজ করবো না যা নিয়ে আশপাশের দশজন কাজ করে। এমন পণ্য বাছাই করবো যা হবে সবার থেকে আলাদা এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অনেক চিন্তা ভাবনা শেষে সমাধান বের হলো ‘মাশরুম’। যা শ্যামলী আক্তার শিল্পীর জীবন বদলাতে সহায়তা করলো।

বগুড়ার বনানীতে ছয় শতক জমিতে চাষ শুরু হলো মাশরুমের। প্রথম দিকে প্রতিবেশিদের ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপের শিকার হতে হয়েছে বার বার শুনতে হয়েছে ব্যাঙের ছাতা এটা দিয়ে আবার কি হবে। এসব কথা উপেক্ষা করে ঢাকার রংধনু প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হতে মাশরুম চাষের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে চাষ শুরু করেন। প্রথম দিকে মাসে একশত প্যাকেট মাশরুম চাষ হলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশ হাজার প্যাকেটে।

মাশরুমের বিস্কিট, চানাচুর, হেয়ার ওয়েল, শ্যাম্পু, সাবান, শুকনো মাশরুম, গুড়া মাশরুম, পেঁয়াজু, সমাচা তৈরি হচ্ছে শাহ সুলতান রহমতুল্লাহ মাশরুম ল্যাবে। যা পৌঁছে যাচ্ছে পুরো বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে। যেখানে বর্তমানে কাজ করছে পাঁচ জন নারী এবং ছয় জন পুরুষ কর্মী। শ্যামলী আক্তার শিল্পী শুধু নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেননি, এগারো জন অসহায় মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন।

পড়াশোনা শেষ না হওয়া মানেই যে জীবনে নিজের পরিচয় তৈরি করা যাবে না এটা ভুল প্রমাণ করেছেন শিল্পী। তিনি অসহায় নারী এবং তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘বসে না থেকে আশপাশের ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপে কান না দিয়ে পরিবেশ বান্ধব পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করুন’।

তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here