মোঃ মানিক জন্মগ্রহণ করেছেন সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলার জটিবাড়ি গ্রামের হযরত আলী সরকার এবং জমিলা বেগম দম্পতির ঘরে। পঞ্চম শ্রেণির পর আর পড়াশোনা হয়নি। পরবর্তীতে চাকরির জন্য সিরাজগঞ্জ থেকে রাজশাহী শহরে চলে যান এবং দীর্ঘ আট থেকে দশ বছর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। কিন্তু অন্যের অধীনে থাকতে তার বরাবরই ভালো লাগতো না। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন নিজে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করবেন যেখানে তার স্বাধীনতা থাকবে। এই ইচ্ছাকে মাথায় রেখে চাকরিরত অবস্থা থেকে টাকা জমাতে থাকলেন মোঃ মানিক।
তিনি বিভিন্ন যায়গায় চাকরি করেছেন বিভিন্ন কাজ দেখেছেন কিছু কাজে নিজে পারদর্শী ছিলেন সবমিলিয়ে তিনি কাজের ক্ষেত্র হিসেবে বাছাই করলেন বেকারি আইটেম। ১৯৯০ সালে জমানো ৫০ হাজার টাকা এবং ৫ জন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করলেন। মোঃ মানিক তার ওস্তাদের কাছে বেকারির পণ্যগুলো তৈরি করতে শিখেছিলেন। সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে শুরুর দিকে পাউরুটি, বনরুটি, বিস্কুট ইত্যাদি তৈরি করতেন। প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন ‘রাতুল বেকারি’। এটি রাজশাহীর বিসিক শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত।
উদ্যোক্তা বার্তাকে মোঃ মানিক জানান, ‘১৯৯০ সালে যখন আমি শুরু করেছিলাম এই কাজ তখন আটা, ময়দা, চিনি, ডালডাসহ সকল উপকরণের দাম কম ছিল। যা বর্তমানে দ্বিগুনেরও বেশি। তবু্ও আমি কখনো ভীত হয়নি সকল সহযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে এগিয়ে চলেছি। শুরুতে মাত্র কয়েকটি পণ্য উৎপন্ন করতাম। বর্তমানে পণ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের বিস্কুট, সেমাই, পাউরুটি সহ অসংখ্য পণ্য যুক্ত হয়েছে। শুরুতে পাঁচজন কর্মী রাখলেও বর্তমানে ১০০ জন কর্মী রেখেছি। শুরুর দিকে হাতে গোনা কয়েকটি মেশিন ছিল কারখানায়। বর্তমানে অসংখ্য মেশিন রয়েছে। ৫০ হাজার পুঁজিকে লক্ষ লক্ষ টাকায় নিয়ে গেছি। নিজ ইচ্ছা, শ্রম এবং আমার সহযোদ্ধাদের সহোযোগিতায়’।
রাজশাহী জেলার প্রতিটি উপজেলায় রাতুল বেকারির পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় রাতুল বেকারির পণ্য যায়।
তরুণদের উদ্দেশ্যে মোঃ মানিক বলেন, ‘ইচ্ছা থাকলে সবকিছুই সম্ভব। আপনারা যারা নতুন, কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে চাচ্ছেন তারা শুরুতে সঠিক পরিকল্পনা করেন সে পরিকল্পনা মোতাবেক ইচ্ছাকে স্থির রেখে চলেন, সফলতা আসবেই’।
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা