‘রাজশাহী হয়ে উঠুক উদ্যোক্তাদের নগরী, এটাই চাওয়া’

0
উদ্যোক্তা রোকসানা পারভীন নাজু

রাজশাহীর ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছেন তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির নির্বাহী কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি। রোকসানা পারভীন নাজু। উদ্যোক্তার চাওয়া একদিন রাজশাহী হয়ে উঠবে উদ্যোক্তাদের নগরী।

এলাকার অসংখ্য নারী, তৃতীয় লিঙ্গ, প্রতিবন্ধী, দুঃস্থদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বিকশিত হবার সুযোগ দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও উদ্যোক্তাদের পণ্য নিয়ে নানান কর্মশালার মাধ্যমে পণ্য বিপণনের প্রক্রিয়া নিয়ে মতামত দিয়েছেন। হয়েছেন উদ্যোক্তাদের বন্ধু, হয়েছেন আশ্রয়স্থল ও পথপ্রদর্শক। কাজ করছেন তৃণমূলের নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে।

রাজশাহীর নাজু বুটিক হাউসের কর্ণধার নারী উদ্যোক্তা রোকসানা পারভীন নাজু।২০০৩ সালে তিনি এই বুটিকস হাউসটি গড়ে তুলেন।

ওভেন কাভার, আয়রন ব্যাগ, মশারি ব্যাগ, ট্র্যাভেল ব্যাগ, বড়-মাঝাড়ি ও ছোট সাইজের ঢাকনা ফুল ব্যাগ, হটপট ব্যাগ, টিফিন ব্যাগ, বোট ব্যাগ, লন্ড্রি ব্যাগ, ভ্যানিটি ব্যাগ, বড়-ছোট সাইজের হ্যান্ড পার্স, হাতের কাজে ওয়ান পিস, টুপিস, থ্রিপিস, ওড়না, পিলো কাভার, বেডশিট, নকশিকাঁথা, শাড়ি, হিজাব সহ অসংখ্য পণ্যের সমারোহে ভরপুর উদ্যোক্তার বুটিকস হাউজ।

সম্প্রতি উদ্যোক্তা বার্তার রাজশাহী প্রতিনিধির সঙ্গে একান্ত কথোপকথনে রোকসানা জানিয়েছেন অনেক না বলা কথা।

অসংখ্য উদ্যোক্তাদের বন্ধু এবং পথপ্রদর্শক আপনি, বিষয়টাকে কীভাবে দেখেন জানতে চাইলে রোকসানা পারভীন বললেন, ‘আমি চাই রাজশাহী হয়ে উঠুক উদ্যোক্তাদের নগরী। উদ্যোক্তা জীবনে সফল হতে যেয়ে কেউ যেন বাধা পেয়ে থেমে না যায়, সে কারণেই উদ্যোক্তাদের সাহস যুগিয়েছি, হয়ে উঠেছি তাদেরই আপনজন ও বন্ধু।’

তৃণমূলের উদ্যোক্তাদের করছেন বিকশিত কেমন ছিল সেই পথ-উদ্যোক্তা বললেন, ‘‘কাজ করতে গিয়ে দেখেছি অসংখ্য অসহায় নারীদের। যারা কাজ খুঁজছেন, তারা কাজ শিখতে চেয়েছেন, কিছুদূর এগিয়ে আবার পিছপা হয়েছেন কিংবা আবার উদ্যোমী হয়েছেন। আমি শুধু সাহস যুগিয়েছি, বলেছি: ‘তোমরা শুরু করো আমি তো আছি’।’’

অসংখ্য নারীদের তিনি হাতের কাজ দিতেন তার প্রতিষ্ঠানের জন্য। একসময় নারীরা এসে বলতে শুরু করলো আমরাও উদ্যোক্তা হবো কিন্তু আমাদের পণ্যগুলো কে নেবে তিনি তখন সকল কে সাহস যুগিয়ে বলতেন ‘তোমরা শুরু করো আমি তো আছি’।

এই কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে অসংখ্য অসহায় নারী উদ্যোক্তা হয়েছেন।

উদ্যোক্তা বললেন, অনেকে তাদের উদ্যোগকে বড় করতে লোন নিতে চায়। কিন্তু তারা জানে না উদ্যোক্তারা কোথায় গেলে লোন পাবে কি কি কাগজপত্র লাগবে আমি নিজ উদ্যোগে তাদের এই বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত করতাম। প্রয়োজনে উদ্যোক্তাদের বাড়িতেও দিনের পর দিন এই বিষয়গুলো তাদের জানাতে এবং বোঝাতে গিয়েছি।

উদ্যোক্তা রোকসানার এই মহৎ উদ্যোগে রাজশাহীর অসংখ্য নারী আজ উদ্যোক্তা হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে হাঁটছেন সফলতার পথে।

রাজশাহীর সাহেব বাজার এলাকায় রোকসানা পারভীন নাজুর বেড়ে ওঠা। সরকারি চাকরি করেছেন তিন বছর। কিন্তু বরাবরই তার মন চাইতো অন্যদের কাজ দিবেন। সে ইচ্ছে থেকেই চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা হয়েছেন। নিজের কর্মসংস্থান নাজু বুটিকসে দিয়েছেন ৫০ জন কর্মীকে চাকরি। যাদের বেশিরভাগই একসময় ছিল অবহেলিত।

কর্মীদের দক্ষতা, কর্মগুণ আর নিজের নিষ্ঠায় উদ্যোক্তা রোকসানার পণ্য সারাদেশেই সরবরাহ হচ্ছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন মেলাতে গিয়েছে উদ্যোক্তার পণ্য।

উদ্যোক্তা রোকসানার চলার পথে স্বামী এবং দুই মেয়ে সব সময় সাহস যুগিয়ে যাচ্ছেন। পরিবার ও অন্যান্যদের সহযোগিতায় রোকশানা নিজেকে গড়ে তুলছেন এক ‘অদম্য’ নারী উদ্যোক্তা হিসেবে।

তামান্না ইমাম
উদ্যোক্তা বার্তা, রাজশাহী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here