কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হলো বিশ্ব কারি শিল্পের অস্কার পুরস্কার হিসেবে খ্যাত ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডের ১৬-তম আয়োজন।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাতে আয়োজনটি ব্রিটেনে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।
চিত্তাকর্ষক আয়োজনটির সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন বিশ্বসেরা ইমপ্রেশনিস্ট রোরি ব্রেমার।
এই প্রথমবারের মতো এ পুরস্কার কোনো একটি রেস্তোরাঁর খাদ্যমানের স্বাদ ও গুণাগুণ বিচার করে দেয়ার পরিবর্তে ১৩টি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয় বিজয়ীদের হাতে।
এতে বেস্ট লন্ডন রেস্টেুরেন্ট শাখায় বিজয়ী হন অতুল কোষার কনিষ্ক, আউটস্ট্যান্ডিং সার্ভিস টু লোকাল কম্যুনিটি ইন দ্য প্যানডেমিক শাখায় বিজয়ী হন জাকির খান জাইকা রেস্টুরেন্ট রিডিং, স্পেশাল রিকগনিশন ফর মিডিয়া কাভারেজ অব দ্য কারি ইন্ডাস্ট্রি শাখায় বিজয়ী হন চ্যানেল এস এর চিফ রিপোর্টার মোহাম্মদ জুবায়ের, বেস্ট টেকঅ্যাওয়ে অ্যাওয়ার্ড ডিউরিং দ্য প্যানডেমিক শাখায় বিজয়ী হন শাফওয়ান চৌধুরী, ব্রিটিশ রাজ টেকঅ্যাওয়ে, ইনসপারেশনাল পারসন শাখায় বিজয়ী হন দবিরুল ইসলাম চৌধুরী ওবিই, আউটস্ট্যান্ডিং সার্ভিস ডিউরিং দ্য প্যানডেমিক শাখায় বিজয়ী হন হাবিবুর খান রাধুনি স্কটল্যান্ড, লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ইন দ্য প্যানডেমিক শাখায় বিজয়ী হন ব্রিটিশ বাংলাদেশ ক্যাটারারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সেলিম চৌধুরী, এনট্রিপ্রিনিউর অ্যাওয়ার্ড শাখায় বিজয়ী হন জালফ আলি ডাব্বাওয়াল/খাই খাই নিউক্যাসল, আউটস্ট্যান্ডিং সার্ভিস ইন দ্য প্যানডেমিক শাখায় বিজয়ী হন নাজ ইসলাম স্যাফ্রন রেস্টুরেন্ট নর্দ্যাম্পটন, একই শাখায় আরেক বিজয়ী সুজিত ডি’আলমিডিয়া আরবান তন্দুর ব্রিস্টল, আনসাং শেফ অ্যাওয়ার্ড শাখায় বিজয়ী রহমান শাহ ইস্টলেহ, ইনসপারেশনাল উওমেন শাখায় বিজয়ী পারভিন তোড়িওয়ালা ক্যাফে স্পাইস নমস্তে এবং ফ্যামিলি রেস্টুরেন্ট টিম অব দ্য ইয়ার শাখায় বিজয়ী হন গুলু আনন্দ ব্রিলিয়ান্ট রেস্টুরেন্ট সাউথহল।
হার ম্যাজেস্টি ব্রিটিশ রানি এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি বিরোধীসহ শীর্ষস্তরের জাতীয় নেতৃবৃন্দের আশীর্বাদধন্য এ আয়োজনটি কোভিডকালের স্বাস্থ্যবিধির সাথে সঙ্গতি রেখে অনুষ্ঠিত হয় একটি সুবিশাল স্টুডিওতে, যদিও প্রতিবারের মতো বিখ্যাত তারকাখচিত জমকালো অতিথি-অভ্যাগতের পরিবর্তে এবারের আয়োজনটি ছিল দর্শকশূন্য।
সীমিত সংখ্যক উপস্থিতির মধ্যেও বজায় রাখা হয় কঠোর স্বাস্থ্যবিধি। যদিও সেবা ও আপ্যায়ন খাতের বৃহত্তম এ আয়োজনটি ইউটিউব, ফেসবুক, জুম, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ও লিনকডইন নেটওয়ার্কে লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমেই পৌঁছে যায় বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে শত কোটি মানুষের কাছে।
ব্রিটিশ কারি শিল্পের কারি কিং এবং ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডের প্রতিষ্ঠাতা এনাম আলি এমবিইর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি ইউটিউবে http://www.britishcurryaward.co.uk, এবং আয়োজনের নিজস্ব ওয়েবসাইট http://www.britishcurryaward.co.uk, এর মাধ্যমে উপভোগ করেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ।
এ ব্যাপারে এনাম আলি এমবিই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, কোভিডকালের এমন বড় একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যেও সহমর্মিতা ও মানবতার অন্য নজির তৈরি করা এমন মানুষগুলোকে স্বীকৃতি দেয়ার এ সুযোগ লাভ করে আমি প্রকৃতই সম্মানিত বোধ করছি।
২০০৫ সালে ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডের যাত্রা শুরু। এর উদ্যোক্তারা ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডে ১২ হাজারের বেশি রেস্তোরাঁর প্রতিনিধিত্ব করেন যার ৮৫ শতাংশের মালিক প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রতিবছর ব্রিটেনের রাষ্ট্রীয় কোষাগারে পাঁচ বিলিয়ন পাউন্ডের অবদান রাখার পাশাপাশি লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান ঘটছে এ শিল্পের মাধ্যমে।
ব্রিটিশ রসনার খ্যাতি আজ হয়তো বিশ্ব জুড়ে, যদিও খুব অল্প মানুষই জানে যে, আজকের এ অনন্য সাফল্যের যাত্রা শুরু হয় কিন্তু বিগত শতকের ৬০-৭০ দশকে বাংলাদেশ থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমানো অদম্য একঝাঁক উদ্যমী আর সাহসী মানুষের হাত ধরেই।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা