মানুষের সফলতা নির্ভর করে তার পরিশ্রম এবং ধৈর্যের ওপর। তানিয়ার মধ্যে সফল হওয়ার সব গুণাবলী ছিল। চলুন জেনে নিই ধৈর্য এবং পরিশ্রম করে সফল হওয়ার গল্পঃ
তারমিহীম তানিয়া পড়াশোনা করেছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে বিবিএ বিভাগে। চাকরিও করেছেন ৫ বছর ট্রাস্ট ব্যাংকে। কিন্তু চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন পারিপার্শ্বিক কারণে। চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর হতাশায় পড়েছিলেন এই উদ্যোক্তা। কিন্তু না, বেশি দিন হতাশ হয়ে থাকতে হয়নি। মাত্র ১৫০০ টাকা পুঁজি নিয়ে ২০১৬ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে নিজের মেয়ের জন্য ড্রেস ডিজাইন করে বানিয়ে তার ছবি অনলাইন পেজ এবং কিছু গ্রুপে দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে অর্ডার আসে। এখান থেকেই শুরু এই উদ্যোক্তার পথ চলা।
শুরুতে ইউটিউব দেখে নিজে নিজে শেখার চেষ্টা করেছেন এবং জুয়েলারি মেকিং কোর্স, ফ্যাশন ডিজাইনিং এর কোর্স করেছেন এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে। বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করে অনেক কিছু শিখেছেন এবং নানান অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানান তানিয়া।
‘ব্র্যান্ড আই’ নামটা শুনলে মনে হয় চোখের কোনো পণ্য; কিন্তু না। তানিয়া চেয়েছিলেন নামটা একটু ভিন্ন হবে এবং সবাই এক নামে চিনবে তাই ব্র্যান্ড আই নামটা দেওয়া। ব্র্যান্ডিং করে অনেক বড় হবে একদিন ‘ব্র্যান্ড আই’ সেই সাথে দেশীয় পণ্য পৌঁছে যাবে দেশের বাইরে।
তানিয়া বলেন, ” প্রথম দিকে অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছি। বাধা অতিক্রম করেই সফলতার মুখ দেখেছি। প্রথমত, পুঁজির বাধাটা অনেক বড় বাধা ছিল। আর পরিবার থেকেও কিছু বাধা পেয়েছি। কিন্তু কোনো বাধায় আমাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।”
ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, ভবিষ্যতে শো-রুম এবং কারখানা করার ইচ্ছা আছে। সাথে সাথে ‘ব্র্যান্ড আই’ কে দেশের সেরা ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। যাতে এক নামে সবায় চেনে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও যাবে ‘ব্র্যান্ড আই’ এবং অনেক বেকারের কর্মসংস্থানের জায়গা হবে ‘ব্র্যান্ড আই’-এ।
‘ব্র্যান্ড আই’ তে পাওয়া যায় বাচ্চাদের পোশাক, সাথে সাথে কম্বো ড্রেস, শাড়ি, গহনাও আছে।
বাচ্চাদের ড্রেসের সর্বনিম্ন মূল্য ৩৫০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য ডিজাইন এবং অর্ডারের ওপর নির্ভর করে। ক্রেতাদের সাড়াও ভাল পান বলে জানান এই উদ্যোক্তা।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ” পরিশ্রম করার সাথে সাথে দক্ষতাও অর্জন করতে হবে যে কোনো পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য। সৎ ভাবে কাজ করে সামনে যেতে হবে।”
পুঁজির ১৫০০ টাকা এখন ৩/৪ লাখে দাঁড়িয়েছে তানিয়ার। তানিয়া পেরেছেন নিজেকে সফল ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে। হয়েছেন একজন সফল নারী উদ্যোক্তা।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না