উদ্যোক্তা নাঈমা ইসলাম

পরিবারের দায়িত্ব পালনের কারণে নারীরা শখের বসে গড়ে ওঠা নিজেদের কর্মব্যস্ততা ও আত্মনির্ভরশীল হবার প্রত্যয় থেকে সরে আসেন বললেই চলে। কিন্তু চাইলেই পরিবারের খেয়াল রেখেও নিজেই কিছু করবার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করা যায়। নাঈমা ইসলামের ব্যক্তিগত ও কর্ম জীবনের মাঝের ভারসাম্য আজ তার শখকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে।

১৯৮৫ সালে নাঈমা ইসলাম কর্মরত ছিলেন একটি আন্তর্জাতিক এনজিওতে, প্রজেক্ট ম্যানেজার পদে। পাশাপাশি শখ ছিলো নিজের জন্য নিজস্ব ডিজাইনে পোশাক তৈরির। তার পরনের পোশাক দেখে আশপাশের সকলেই বলতেন একইরকম পোশাক তৈরি করে দিতে।

নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি পণ্য

৫ বছর পর সন্তানদের সময় দেয়ার উদ্দেশ্যে চাকরি ছাড়েন নাঈমা। বেড়ে যায় অবসর সময়, কিন্তু তিনি ব্যস্ততা ভালোবাসেন, ভালোবাসেন কাজে ডুবে থাকতে। তাই অবসর সময়গুলোকে কাজে লাগিয়ে সারা বছর বিভিন্ন রকমের পোশাক তৈরি করতেন, কাঁথা সেলাই করতেন।

বছরে শুধু রমজান মাসজুড়ে ঘরে বসেই তিনি পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছে নিজের তৈরি পোশাক বিক্রয় করতেন। একসময় সিদ্ধান্ত নিলেন এই শখকে ব্যবসায় রূপ দিবেন।

মেলায় অংশগ্রহণকালীন উদ্যোক্তার পণ্যের স্টল

১৯৯৭ সালের শেষ দিকে ‘অয়ন ক্র্যাফটস’ নামে ব্যাবসায়ের যাত্রা শুরু করলেন। জমানো পুঁজি নিয়ে তৈরি করতে শুরু করলেন নিজস্ব ডিজাইনে বিভিন্ন রকম তাঁত ও পাট পণ্য, ন্যাচারাল ডাইং এ নারী-পুরুষের পোশাক।

২০০৩ সাল থেকে সুবিধাবঞ্চি  নারীদের স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে ন্যাচারাল ডাইং, তাঁত ও পাট পণ্য উৎপাদন  এবং কার্যপ্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।

উদ্যোক্তার ডিজাইনে তৈরি পাট পণ্য

বর্তমানে শ্যামলীতে উদ্যোক্তার একটি অফিস রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন কোম্পানী থেকে অর্ডার সংগ্রহ করে ফ্যাক্টরিতে নিয়মিতভাবে ৬ জন কর্মী কাজ করছেন।

ন্যাচারাল ডাইং এ কাজ করছেন  কর্মীগণ

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে সকলকে আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করতে চান। যেনো সকলেই নিজের পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে এবং হয়ে উঠতে পারে একজন স্বাবলম্বী নারী, একজন উদ্যোক্তা।

 

জেবুননেসা প্রীতি
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here