বাংলাদেশী ঔষধ ডেলিভারি স্টার্টআপ “আরোগ্য” দেশের ক্রেতা সাধারণের কাছে জেনুইন এবং সাশ্রয়ীমূল্যে ঔষধের সহজলভ্যতা ও সহজপ্রাপ্যতা বৃদ্ধি করতে সিড ফান্ডিং রাউন্ড নিশ্চিত করল।
স্টার্টআপটি সফলভাবে গত বছর সংগৃহীত ১.৫ মিলিয়ন ডলারের সাথে এ বছর ৪ মিলিয়ন ডলার মোট ৫.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পেল।
দ্য ব্লু কালেক্টিভ (ইউএস), ইটারেটিভ (সিঙ্গাপুর) স্টেলা মেরিস পার্টনারস (মেক্সিকো), রিটার্নিং বিনিয়োগকারী রেশিও ভেঞ্চারস (ইউকে) স্কেচনোট পার্টনারস (স্পেন) এবং এপিক অ্যাঞ্জেলস (সিঙ্গাপুর) সহ অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম দ্য ভেঞ্চার কালেক্টিভ (টিভিসি) এই বিনিয়োগের নেতৃত্ব দিয়েছে।
উল্লেখ্য, স্থানীয় বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী আইডিএলসি ফাইন্যান্স এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডও “আরোগ্য”র বিনিয়োগকারী।
প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকইনএশিয়া এই সংবাদ প্রকাশ করেছে।
দ্য ভেঞ্চার কালেক্টিভ (টিভিসি)’র পার্টনার ক্যাট মিডলটন বিনিয়োগের বিষয়ে বলেনঃ “বাংলাদেশ ২০৪০ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে। যা আরোগ্যর মতো সংস্থার জন্য ১ কোটি ১০ লক্ষ ওষুধ সরবরাহের প্রাথমিক সাফল্যের উপর ভিত্তি করে দেশের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা্র এক অভিনব প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠার উপযুক্ত সময় বলে আমি মনে করি।”
২০২০ সালের ডিসেম্বরে রোজিনা মজুমদার (সিইও) ফাহাদ হোসেন (সিওও) শামিম হাসান (সিটিও) এবং ইয়াওয়ার মেহবুব (সিএফও) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটি সমগ্র বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম আরও বেগবান করার জন্য নতুন এ বিনিয়োগ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে।
স্টার্টআপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও রোজিনা মজুমদার বলেন, “আমরা আমাদের ভিশন অর্জনের জন্য অবিরাম প্রচেষ্টায় নিয়োজিত। আসন্ন বছরে আমাদের মূল লক্ষ্য হল আরোগ্যকে একটি সুপার অ্যাপে পরিণত করা যা বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভাল স্বাস্থ্যসেবা পাবার প্রবেশদ্বার উন্মোচন করবে, অনলাইন ফার্মেসির বাইরেও ল্যাব টেস্টিং এবং ডাক্তারের পরামর্শের মতো স্বাস্থ্যসেবা অন্তর্ভুক্ত হবে। আমাদের অগ্রাধিকার থাকবে রাজধানী ঢাকায় আমাদের সেবার পরিসর আরও বৃদ্ধি করা এবং ২০২৪ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের মধ্যে আরও দুটি বড় শহরে আমাদের হাব সম্প্রসারণ করা।
এপিক অ্যাঞ্জেলসের প্রতিষ্ঠাতা মাইক ডোয়ার বলেন, “আমাদের প্রথম আলাপচারিতা থেকেই এপিক অ্যাঞ্জেলস, বিশ্বব্যাপী বৃহত্তম মহিলা বিনিয়োগকারী সংস্থা হিসেবে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিনিয়োগ করছে। নারী সিইও দ্বারা ভীষণ আত্মবিশ্বাসের সাথে পরিচালিত আরোগ্যর অতুলনীয় পরিচালনা, পথচলা এবং ভিশনকে স্বীকৃতি দিয়েছে এপিক এঞ্জেলস। এপিক অ্যাঞ্জেলসের সঙ্গে আরোগ্যর গল্প শুরু হয় ২০২১ সালে। আজ, আমাদের ফলো-অন বিনিয়োগের মাধ্যমে, আরোগ্যকে আমাদের বৃহত্তম বিনিয়োগ হিসাবে চালিত করেছে।
আরোগ্য অ্যাপ হল একটি সর্বাঙ্গীন স্বাস্থ্যসেবা প্ল্যাটফর্ম, যা জেনুইন ও নির্ভেজাল ওষুধ, হেলথকেয়ার ও পার্সোনালকেয়ার প্রোডাক্টস সরবরাহ করতে ডিজাইন করা হয়েছে।
এটি গ্রাহক-বান্ধব সার্চ ফিচার প্রদান করে যা প্রতিটি ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যসহ দ্রুত প্রয়োজনীয় পণ্য খুঁজে পেতে এবং সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
এছাড়াও, অ্যাপটিতে রয়েছে একটি “Compare” ফাংশন, যা বিভিন্ন কোম্পানির অনুরূপ ওষুধ এর সাথে তুলনা করতেও সহায়তা করে। যদি কারও কোনও প্রশ্ন থাকে বা সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তাহলে “চ্যাট” বাটনের মাধ্যমে কাস্টমার সার্ভিস টিমের সাথে তাত্ক্ষণিকভাবে সংযোগ স্থাপন করা যায়।
প্রেসক্রিপশনের ওষুধ “প্রেসক্রিপশন” বাটন দিয়ে অনায়াসে অর্ডার করে ফেলা যায়। কেবল প্রেসক্রিপশনের একটি ছবি তুলে, আপলোড করলেই অর্ডার নিশ্চিত করার জন্য কাস্টমারকে কল করা হয়।
তাদের ইনভেন্টরিতে এভেই্লেবল নয় এমন ওষুধের জন্য, “রিকোয়েস্ট মেডিসিন” ফিচারটি নির্দিষ্ট আইটেম স্টক করার জন্য অনুরোধ রাখে এবং তা এভেইলেবল হলে কাস্টমার অটো নোটিফকেশন পেয়ে যান।
আরোগ্য ৬,০০,০০০ এরও বেশি ব্যবহারকারীকে সেবা প্রদান করে এবং ২০২১ সাল থেকে তার আয়ের আটগুণ বৃদ্ধি অর্জন করে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
এই প্ল্যাটফর্মটি ৫০০ এরও বেশি ওষুধ ও হেলথকেয়ার পণ্য প্রস্তুতকারকের ৩২,০০০ এরও বেশি ওষুধ এবং হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস সরবরাহ করে।
আসছে নভেম্বরে আরোগ্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও রোগ নির্ণয়ের সুবিধাকে বাড়িয়ে তুলতে একটি হোম ল্যাব টেস্টিং সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে।
ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা