বিবাহ একটি সামাজিক বন্ধন। বিবাহের মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য জীবন শুরু হয়। বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ভেদে বিবাহের সংজ্ঞার তারতম্য থাকলেও সাধারণ ভাবে বিবাহ বলতে বোঝায় দুটো মানুষের এক সাথে থাকার সামাজিক স্বীকৃতি। বিবাহত্তোর দুইজন মানুষ স্বপ্ন দেখে তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিয়ে। তাদের এই সুন্দর ভবিষ্যতকে শুভ কামনা জানাতে প্রায় বছর খানেক ধরে সুন্দর ও প্রাণবন্ত অনুষ্ঠান উপহার দিয়ে আসছেন “সাঁজঘর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট”। আসুন জেনে নেই তাদের সেই পথচলার গল্পটি:
সাঁজঘর এমন একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান যা সম্পূর্ণ পরিচালিত হয় ৭ জন শিক্ষার্থী দ্বারা! কথাটি শুনে হয়ত একটু অবাক হয়েছেন। কেউ হয়ত মানতেও চাইবেন না; তবে ঘটনাটি সত্য। এদের মধ্যে কেউ আছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের, কেউ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আবার কেউ আছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের, কিন্তু দিন শেষে তারা সাঁজঘর প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিতেই পছন্দ করেন। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন সালমান রহমান আর বাকি সম্মানিত সদস্যরা হচ্ছেন মোঃ মেহেদী হাসান , সোহেল রানা, সাজিদুর রহমান , এম এইচ মেহমুদ আহমেদ, তনিমা ইসলাম ও ফাহাদ হাওলাদার।
শুরুটা হয়েছিল ২০১৮ সালে সালমান রহমানের কথায়। সালমান রহমানের মাথায় প্রথম এই ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট করার চিন্তা আসে। তার এক বন্ধু ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্টের কাজ করতেন। ফলে তার কাছ থেকে পাওয়া নানা দিক নির্দেশনা আর সহায়তা নিয়ে শুরু করেছিলেন সাঁজঘর।
প্রত্যেকটা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের মত প্রথম দিকে এই প্রতিষ্ঠানেরও তেমন সফলতা দেখা দেয়নি। আর প্রতিষ্ঠানটি আর্থিত যোগান দাতা যেহেতু তারা নিজেই, ফলে কষ্টটা আরো বেশি ছিল। এত কষ্টের মাঝেও কিন্তু তারা হাল ছেড়ে দেয় নি, কেননা তাদের কাছে প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রাখাটায় ছিল প্রধান। আজ তারা সফলতা অর্জন করেছেন। প্রতিদিনই করছেন নানা অনুষ্ঠানের কাজ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানটি বয়স দেখতে দেখতে প্রায় ১ বছর হয়ে গিয়েছে। এই এক বছরে মধ্যে আমরা একটি চুড়ি মেলার আয়োজন করেছিলাম যা অন্য কোনো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সাধারণত করে না। ফলে বিভিন্ন মহল থেকে আমরা দারুণ ভাবে প্রশংসিত হই। এই মেলার মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু শিখেছি । তাই আমাদের ইচ্ছা আছে পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনার বটমূলের মত মিরপুরে একটি মেলার আয়োজন করার। কেননা এখান থেকে অনেকেরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনার বটমূলে যেতে কষ্ট করতে হয়। কষ্টটা বেশি আমাদের মা-বোনদের কারণ তাদেরকে নিয়ে এতদূর যাওয়াটা কষ্টসাধ্য। তাই আমরা আশা করি যে, এই মেলাটি আমরা সফলভাবে আয়োজন করতে পারব।
প্রতিষ্ঠানের প্রথম কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে সালমান রহমান হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলেন, আমাদের প্রথম কাজটি ছিল অনেক মজার আর ভয়ের। প্রথম কাজে সবাই আতঙ্কিত ছিলাম। আর আতঙ্কের মাত্রাটা বেড়ে যায় যখন আমরা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে জন্য ফুল পাচ্ছিলাম না। প্রথমত আমাদের ঐ অনুষ্ঠানটি ছিল ২১ শে ফেব্রুয়ারির আগের দিনে, তাই ফুলের সঙ্কট ছিল। তবুও আমরা অনেক চেষ্টা করে ফুল সংগ্রহ করি এবং অনুষ্ঠানটি খুব ভালভাবে সম্পন্ন করি। ভালভাবে কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য আমরা অনেকের প্রশংসা কুড়িয়েছিলাম।
বর্তমানে আমরা কিছুটা অস্বচ্ছল পরিবারের সহায়তার জন্য অনুষ্ঠানে কাজ করি। কারণ অনেক পরিবারের স্বপ্ন থাকে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ের অনুষ্ঠান করার। কিন্তু দেখা যায় আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য অনেক পরিবার তা করতে পারে না । তাই আমরা চাই ঐ পরিবারগুলোর স্বপ্ন পূরণ করতে। যেহেতু আমাদের প্রতিষ্ঠানের নাম সাঁজঘর সেহেতু আমরা চাই পৃথিবীর প্রত্যেকটা ঘরকে সুন্দরভাবে সাজাতে।
মো:হৃদয় সম্রাট