রঙ্গিলা বাক্স, রঙ্গিলা নামটা শুনলেই মনের মধ্যে ভাল লাগা কাজ করে রং রং ভাব চারদিকে আর বাক্স নামটা শুনলেই কেমন জানি মনে হয় বাক্স! বাক্সে কি আছে? মেয়েরা ভাবে যদি এমন কোন বাক্স থাকত যেখানে শাড়ি থেকে গহনা, নকশী কাঁথা সব পাওয়া যাবে তাহলে খুব ভাল হত। হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন রঙ্গিলা বাক্সে আছে মেয়েদের প্রয়োজনীয় সব দেশি পণ্য।
খন্দকার ফাইরুজ নাওয়ার পড়াশোনা করেছেন ফিন্যান্স বিভাগে, ব্রাক ইউনিভার্সিটি থেকে। চাকরীও করছেন একটি কিন্তু মনে হল আসলে চাকরী করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে না, সিদ্ধান্ত নিজের মত করে নেওয়া যায় না। সেই জায়গা থেকে উদ্যোক্তার মনে হয়েছে নিজস্ব একটা স্বাধীনতা থাকা দরকার যেখানে তার আইডিয়া, এবং পছন্দের জিনিসগুলো থাকবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের মেয়েরা বিদেশি পণ্যের ওপর ঝুকে গেছে তারা হয়ত জানেনা আমাদের দেশে অনেক ঐতিহ্যবাহী, রুচিশীল পোশাক পাওয়া যায় বা তৈরী করা হয়। এই জায়গা থেকেই শুরু করেন এই উদ্যোক্তা দেশি পণ্য নিয়ে, দেশি পণ্য সবার কাছে পৌঁছিয়ে দেওয়ার জন্যই ২০১৮ সালে ১৪০০০ টাকা নিয়ে শুরু করলেন ব্যবসা।
দেশের আনাচে কানাচে গিয়ে প্রতি জেলার ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার এবং বিভিন্ন পণ্য ব্লক, প্রিন্ট, নকশী কাঁথা ইত্যাদি নিয়ে করছেন ব্যবসা।
ফাইরুজ বলেন, ব্যবসা করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছি অনেক। তার মধ্যে সব থেকে বড় বাধা বিদেশি পণ্যগুলো। কিন্তু বিদেশি পণ্যের থেকে দেশি পণ্যের গুণাগুণ, মান; বিদেশি পণ্যের থেকে অনেক ভাল। তারপরও কম দামের বিদেশি পণ্য বাজারে থাকার কারণে অনেক সময়,দেশি পণ্যগুলো সেইরকম বাজার মূল্য পায় না।
তিনি আরো বলেন, তিনি যেহেতু দেশের সব জেলার ঐতিহ্যবাহী পোশাক এবং বিভিন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন তখন তার সমস্যা হত মেয়ে হয়ে পণ্য গুলো সংগ্রহ করা। এই রকম অনেক বাধার সম্মুখীন হয়েছেন তারপরেও হেরে যান নাই বা থেমে থাকেন নি। উদ্দেশ্য ছিল সফল হবেন এবং হয়েছেন একজন সফল নারী উদ্যোক্তা।
রঙ্গিলা বাক্সতে পাওয়া যায় আমাদের দেশীয় সব পণ্য। সালোয়ার-কামিজ, শাড়ী, গহনা থেকে নকশী কাথা পর্যন্ত। যার সর্বনিম্ন মূল্য ২০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য ৫/৬ হাজার টাকা।
সব থেকে বেশি সহযোগিতা পেয়েছেন মায়ের কাছ থেকে এবং পরিবার থেকে; সাথে আরো সহযোগিতা পেয়েছেন বন্ধুদের কাছ থেকে। সেই সাথে দুই বন্ধু তারিক এবং শারিক হয়ে যায় পার্টনার। তিন জন মিলে মিশে কাজ করে ব্যবসাকে আরো প্রসার করার চিন্তাই এই তরুণ উদ্যোক্তার।
নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, যার যেই প্যাশন সে সেই জায়গা থেকে কাজ করলে ভাল ফলাফল পাবে। আর দেশি পণ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। সময় দিতে হবে এবং সব সময় পণ্যের মানের দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে।
অনুপ্রেরণা পেয়েছেন দেশের নামকরা কিছু ডিজাইনারদের দেখে তাদের গল্প পড়ে জেনেছেন শিখেছেন বলে জানান ফাইরুজ নাওয়ার।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না