ছোটবেলা থেকেই সৃষ্টিশীল কাজের প্রতি প্রচণ্ড ঝোঁক ছিলো আবিদা সুলতানার। চাকরি করতেন একটি বেসরকারী ব্যাংকে। কিন্তু বিয়ে, সংসার এবং সন্তান সামলানো সবকিছু মিলিয়ে চাকরি ছাড়তে হয় তাকে।

উদ্যোক্তা বার্তাকে আবিদা সুলতানা বলেন, “ভেবেছিলাম আমার মেয়েরা কিছুটা বড় হলে আবার চাকরি শুরু করবো। কিন্তু সংসার আর মেয়েদের সামলানো সবকিছু রেখে আমি আর চাকরির কথা চিন্তাও করতে পারিনি।”
একটি পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণ করে প্রথম হন তিনি। সেই প্রাপ্তিটাকেই পরবর্তীতে কাজে লাগান। ভাবলেন, ঘরে বসেই এমন কিছু করবেন যাতে তিনি তার পরিবারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে পারেন। তখন মাত্র ৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে অনলাইন পেইজের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে ‘পিঠার আড্ডা’।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাহারী রকমের পিঠা, হলুদের গহনা, শাড়ি ডিজাইন, ফুড কার্ভিং এসবের অর্ডার নিতেন অনলাইনে। তিনি আরও বলেন, “আমার বিয়ের সময়টাতে দিনাজপুরে কোনো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ছিলো না। তাই নিজের সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগালাম। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের যা কাজ সব নিজেই করেছি।”
কাজগুলো দেখে সকলেই তার প্রশংসা করেন। সেই অনুপ্রেরণায় দিনাজপুরে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ‘ব্রাইডাল ক্রিয়েশন ওয়েডিং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট এন্ড ক্যাটারিং সার্ভিস’ এর কার্যক্রম শুরু করেন তিনি।
নানারকমের মুখরোচক খাবারের পাশাপাশি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ দিয়ে অল্প সময়েই ব্যাপক সাড়া পান তিনি। প্রতিনিয়ত আসতে থাকে অর্ডার, দ্রুতই বাড়তে থাকলো কাজের পরিধি।

তিনি দিনাজপুরে ‘স্বপ্ন চূড়া মহিলা উন্নয়ন সংস্থা’ নামে একটি ট্রেনিং সেন্টারের কার্যক্রম শুরু করেন। ট্রেনিং সেন্টারটি ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। সেখান থেকে অনেক নারীরা বিভিন্ন স্কিল ট্রেনিং নিয়ে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে অনেক ভালো কাজ করছেন।
বর্তামানে স্থায়ীভাবে ১০ জন এবং অস্থায়ী ১৫ জন কর্মী কাজ করছেন উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠানে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে নিজের উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উদ্যোক্তা।
খুরশিদা পারভীন সুমী