২০১৬ সাল থেকেই অনলাইনে টুকিটাকি ব্যবসা করে আসছিলেন রিয়াজুর রহমান। ২-৩ বছর পূর্বে একদিন কেউ একজন তাকে একটা গ্রুপের লিংক দেন তিনি সেই গ্রুপে জয়েন করে রাখেন। প্রতিদিন পোস্টগুলো পড়তে থাকেন। গ্রুপের এডমিন মহোদয় অনুপ্রেরণা মূলক অসাধারণ পোস্ট লেখেন। গ্রুপটার নাম নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন। ইকবাল বাহার জাহিদের অনুপ্রেরণায় তিনি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু তেমন কোন সফলতার মুখ দেখা যাচ্ছে না।
হঠাৎ একদিন ইকবাল বাহার জাহিদ সেশন চর্চা পোস্ট করলেন : স্বপ্ন দেখুন, সাহস করুন, শুরু করুন, লেগে থাকুন সফলতা আসবে। সেই থেকে তিনি এক্টিভিটিস আরো বাড়িয়ে দিলেন। এত বছর অনেক পরিশ্রম করে লেগে আছেন তার ফলাফল আজ তিনি একজন উদ্যোক্তা।
কাজ করতে করতে তিনি এমন কিছু ভালো মানুষের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন যারা তাকে উদ্যোক্তা হতে সহযোগিতা করেন। আর তারাই তাকে টাকা ছাড়া প্রোডাক্ট দিয়েছেন, এভাবেই তিনি পুঁজি ছাড়া ব্যবসা দাঁড় করাতে সক্ষম হন।
বর্তমানে তিনি ট্যাং, গুড়ো দুধ, খেজুর, মধু, মিক্স ড্রাই ফ্রুটস, কালোজিরার তেল, লাল চিনি নিয়ে কাজ করছেন। তিনি অর্গানিক এবং ন্যাচারাল পণ্য নিয়ে কাজ করছেন। এই পণ্যগুলো নিয়ে কাজ করছেন কারণ তিনি দেখছেন বর্তমানে মানুষ খাদ্যের কারণে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য তিনি চিন্তা করলেন তাদের যদি পিওর খাবারগুলো সরবরাহ করা যায় তাহলে অনেক ভালো হবে।
তার প্রতিষ্ঠানের নাম-হালালপণ্য.কম। অনলাইনে এই নামে তার একটা পেইজ আছে। তিনি যেহেতু সুন্নাহভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনা করার পরিকল্পনা করেছেন এ জন্য এই পেইজের একটা ইসলামিক এবং আনকমন নাম দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
দেশের প্রায় সব জেলায় তারর পণ্য পোঁছেছে, যেমন: কুমিল্লা, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, গাইবান্ধাসহ প্রায় ৪৮টি জেলায় আমার পণ্য পৌঁছে গেছে। প্রতি মাসে তিনি ১মন মধু এবং ঘি, গড়ে-৫০ কেজি খেজুর সংগ্রহ করেন। মাসে প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেন।
নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে উদ্যোক্তা রিয়াজুর রহমান বলেন, ‘চেষ্টা করছি সমগ্র বিশ্বে আমার পণ্য পৌছাতে এবং একটি কম্পানি দাড় করাতে। আলহামদুলিল্লাহ মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি যে, তিনি আমাকে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি অত্যান্ত আনন্দিত উদ্যোক্তা হতে পেরে’।
উদ্যোক্তা রিয়াজুর রহমানের গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার জাফর নগর গ্রামে। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা গ্রামের বাড়ি জাফর নগরেই। তার শৈশব-কৈশরও কেটেছে এখানেই এবং তিনি বর্তমানে এখানেই বসবাস করছেন। বাবা ছিলেন একজন প্রবাসী কিন্তু ২০১৯ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মা গৃহিনী। ভাইদের মধ্যে তিনি সবার বড়। ভাটরা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করেন। নুনিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাশ করেন। বর্তমানে চাঁদপুর সরকারি কলেজে স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত আছেন।
সাইদ হাফিজ,
উদ্যোক্তা বার্তা