বান্দরবন জেলার একজন সফল উদ্যোক্তা অংশেথোয়াই মারমা। তিন বড় বোনের পরে পরিবারের বড় ছেলে তিনি। ছোট বেলা আত্মনির্ভরশীল হওয়ার তাগিদ থেকেই যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের তৎকালীন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের উৎসাহে ২০০১ সালে “মৎস্য চাষ” বিষয়ক একটি প্রশিক্ষণ নেন। এরপর ২০০৭ সালে সেই প্রশিক্ষণকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য কোমড় বেঁধে কাজে নামেন অংশেথোয়াই। কিন্তু তার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় পুঁজি সংকট। কিন্তু, উদ্যোক্তারা প্রতিটি বাঁধাকেই পার করে এগিয়ে যান। অংশেথোয়াই মারমাও জয় করলেন বাঁধাকে।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2021/11/2-10.jpg)
আলীকদম উপজেলায় পাহাড়ি জলাশয়ে বাঁধ নির্মাণ করে মৎস্য চাষ করতে লাগলেন আমাদের এই উদ্যেক্তা৷ মাছকে খাওয়াতেন ভুষি, ভাত সহ প্রাকৃতিক সব খাবার। মাছ চাষের পাশাপাশি তিনি গবাদি পশু পালন, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল চাষ এবং বৃক্ষ রোপনও করেন অংশেথোয়াই। যদিও প্রথম দুই বছর আশানুরূপ ফলাফল পাননি, পরবর্তী বছরগুলোতে প্রকল্পে লাভ হতে থাকে। তার এই বহুমুখী প্রকল্প থেকে ৫ বছরে লভ্যাংশ মুলধন সহ দাঁড়ায় ১০ লাখ টাকায়। বর্তমানে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলা, উপজেলায়ও সরবরাহ করা হয় তার মাছ।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2021/11/3-8.jpg)
ধীরে ধীরে উদ্যোক্তা আরও ভিন্নধর্মী কার্যক্রম হাতে নেন। আলীকদম উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে “দা দামতুয়া ইন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট” প্রতিষ্ঠিত করেন। উদ্যোক্তা তার কর্মভূবনে সৃষ্টি করেছেন অন্যদের জন্য কর্মসংস্থান তার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে ৪০ জন স্থায়ী, ২১ জন হাজিরা ভিত্তিক বেকার যুবক ও যুবনারী। তার সফলতার এই পুরো সময় জুড়ে পাশে পেয়েছেন তার পরিবারকে।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2021/11/4-4.jpg)
২৫ বছরের যুবক থাকাকালীন অংশেথোয়াই শুরু করেছিলেন তার উদ্যোগ। আজ ৪০ এর কোঠায় এসেও সেই একই রকম উদ্যোমে কাজ করে যাচ্ছেন অংশেথোয়াই। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি সংপৃক্ত রয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডেও। এলাকায় তৈরি করে দিয়েছেন একাধিক শিক্ষা, সামাজিক, ধর্মীয় ও ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও তার গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিসরূপ সফল আত্মকর্মী অংশে অংশেথোয়াই মারমা পান “জাতীয় যুব পুরস্কার ২০২১”। এই পুরস্কার যেমন তাকে এনে দিয়েছে অগাধ আত্মবিশ্বাস, সম্মান, তেমন বাড়িয়ে দিয়েছে তার দায়িত্ববোধও।
মার্জিয়া মৌ
উদ্যোক্তা বার্তা