‘সম্ভাবনা’ একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। পথ শিশুদের পূর্ণবাসন, শিশুদের শিক্ষা নিরাপত্তা নিশ্চিত আর দক্ষ জনসম্পদে পরিণত করাই এই সংগঠনের কাজ। একদল তরুণ-তরুণী ২০১১ সালে মিরপুর স্টেডিয়ামে প্রথম এর যাত্রা শুরু করে, তারপর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে ২০১২ সালে আয়োজন করে দ্বিতীয় পরিসরে।
যেহেতু সংগঠনের সবাই স্টুডেন্ট তাই সেই সময় পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করতে ওদের হিমশিম খেতে হয়েছে। বিষয়টি তখন জানতে পারেন উদ্যোক্তা হাসিনা মুক্তা। তিনি এ সম্পর্কে উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, “আমার তখন মনে হয়েছে এই তরুণ তরুণী গুলো আজেবাজে কাজে না গিয়ে আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট না করে ভালো একটা কাজের উদ্যোগ নিয়েছে। তাই ওদের পাশে শুধু আমি একা নই “আমার শুরুটা হয়েছে সাকি আপার আমন্ত্রনে, সাথে ছিলেন নাহিদ আপাও এবং পরবর্তীতে আরও বন্ধু।”
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2021/01/vgdftery.jpg)
উল্লেখ্য একটা সময় মুক্তার মনে হয়, তার উদ্যোক্তা বন্ধুদেরকে সম্পৃক্ত করা দরকার এবং তারাও সানন্দে সাড়া দিয়ে একেক সময়ে একেকজন এই শিশুদের অভিভাবক হয়ে নিজেদেরকে ধন্য মনে করেন। এদের মধ্যে ইসরাত জাহান সোনিয়া, রেশমা জাহান, জেসমিন ইসলাম, প্রীতি ইসলাম সহ আরো অনেকেই আছে।
প্রথমদিকে খোলা আকাশের নিচে ওরা বাচ্চাদের পড়াতো এখন ছাদের নিচে। স্কুলটির নাম পুস্পকলি স্কুল। এটা সম্ভব হয়েছে ওদের একান্ত প্রচেষ্টায়, পাশে থেকে কিছু স্বহৃদয় ব্যক্তি ওদের সাপোর্ট দিয়েছে। এখন অবশ্য পাশে অনেকেই দাঁড়িয়েছে ওদের ভালো কাজের উদ্যোগ দেখে।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2021/01/ub-mehnaz.jpg)
মুক্তা বলেন, আমরা ভাবলাম পুরোপুরি সম্ভব না হলেও যতটুকু সম্ভব পথশিশুর পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জন্য কোন উদ্যোগ নেয়া যায় কিনা। যে সমস্ত শিশুর বাবা-মা কাজ করে না তাদেরকে কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুললে তারা নিজেরাই নিজেদের সন্তান লালন পালন করতে পারবে। সেই তখন থেকে আমরা সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করি। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে তার নামকরণ করি ‘অনিন্দিত নারী’ এবং এ প্রতিষ্ঠানটি নারীদের জন্য এবং পুরুষের জন্য স্বনির্ভর।
বর্তমানে ‘সম্ভাবনা’র অভিভাবক হিসাবে রয়েছেন মুসলিম চৌধুরী, মহাহিসাব নিয়ন্ত্রক, মোঃ তোফাজ্জল, স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক, বদরুল আলম, এনএইএস এর এডিশন্যাল ডিরেক্টর, নুরুন্নবী তালুকদার, এনজিও ব্যুরোর সাবেক পরিচালক, উদয় হাকিম, ওয়াল্টনের নিবার্হী পরিচালকসহ আরো অনেক নিবেদিত প্রাণ।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2021/01/ucvdfret1.jpg)
করোনা কালীন সময়ে এই সংগঠনটি প্রায় ১৫শ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। ২০০ জনকে প্রতিদিনই ইফতার করিয়েছে। জীবানুনাশক স্প্রে- হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেছে। এই শীতে এ পর্যন্ত ১৫০০ কম্বল বিতরণ করেছে এবং এটি চলমান রয়েছে। সম্ভাবনা ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ এর ভোলান্টিয়ার এই কাজগুলো করে থাকে।
![](https://uddoktabarta.com/wp-content/uploads/2021/01/vxcfsdrwe.jpg)
মুক্তা আরও বলেন, করোনার প্রথম থেকে বিষয়টি আমাকে চিন্তিত করে তাই মার্চেই আমি তাদের জন্য পিপিই উপহার স্বরুপ দেই এবং করোনার ২য় ঢেউ প্রতিরোধে আবারো পিপিই উপহার দেই। করোনার লকডাউনের পর কর্মহারা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মায়েদের মাস্ক প্রশিক্ষণ দেই এবং ৩ দফায় কয়েক বস্তা কাপড় দেই যাতে এগুলো দিয়ে তারা কাজ শিখে এবং তা বিক্রি করে কর্মে ফিরে আসতে পারে। এরা বর্তমানে কাজ শিখে নিজেরাই কাপড় কিনে মাস্ক, বাচ্চাদের ড্রেস তৈরি করে সাবলম্বী হচ্ছে। অনিন্দীত নারীতে প্রতিদিনই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে যেটি পরিচালনা করছেন হাসিনা জান্নাত সাকি এবং হাসিনা মুক্তা প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন”।
গত কয়েকদিন আগে পুস্পকলি স্কুলের বাচ্চাদের কম্বল, মাস্ক এবং খাবার বিতরণ করা হয় সেই অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তা হাসিনা মুক্তাসহ আরো সম্ভাবনার অভিবাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা ঢাকা