উদ্যোক্তা- নাহিদা জাহান

নাহিদা জাহান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট এ ইনফরমেশন টেকনোলজিতে অধ্যয়নকালে স্কলারশিপ নিয়ে ২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। অস্ট্রেলিয়ায় থাকাকালীন সময় ছোঁয়া পান উন্নত প্রযুক্তির, জানতে পারেন আইটি সেক্টরে বিপুল সম্ভাবনার কথা। নিজের দেশের ডেভেলপমেন্টের কথা মাথায় রেখে মনস্থির করলেন, দেশে ফিরে আইটি সেক্টর নিয়েই কাজ করবেন।

২০০৬ সালে দেশে ফিরে এলেন। বাবার পরামর্শে অভিজ্ঞতা অর্জনের উদ্দ্যেশ্যে আইটি প্রতিষ্ঠানে ৬ বছর চাকরির পর সিদ্ধান্ত নিলেন নিজেই উদ্যোগী হবার। ২০১২ সালে ‘Creative Soft Technology’ এর যাত্রা শুরু করে একটি টিম তৈরী করে আউটসোর্সিং এর কাজ করতে থাকলেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলো পরিচিতি।

আইটি বিশেষজ্ঞদের কাজ তদারকি করছেন উদ্যোক্তা

২০১৬ সালে একটি আইটি প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে পেয়ে যান বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ১০০টি ব্রাঞ্চের অটোমেশনের কাজ। এরপর ধারাবাহিকভাবে কাজ করেছেন পাঠক সমাবেশ এবং বাংলা একাডেমির সাথে। চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সহায়ক সংস্থা-ইউএনডিপি’র একটি প্রকল্পে। এছাড়াও কাজ করছেন এসডিজি ট্র‍্যাকার নিয়ে। বর্তমানে উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে ৬ জন এবং অস্থায়ী ১০ জন আইটি বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন।

নেপালে ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ কনক্লেভ এ লাল সবুজের পতাকা হাতে বাংলাদেশী তরুণরা

সম্প্রতি উদ্যোক্তা নাহিদা জাহান সমন্বয়ক হয়ে ১২ সদস্যের একটি টিম নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন নেপালে অনুষ্ঠেয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ কনক্লেভ-২০১৮’ তে। এবিষয়ে নাহিদা জানান, “আজ ও আগামীর পরিবর্তনের দূত’ স্লোগান নিয়ে বিশ্বের ২৫টি দেশের ২০০ তরুণ এবারের আয়োজনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়। জলবায়ু পরিবর্তন, উদ্যোক্তা নির্মাণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সুশাসন- এ চারটি সেশনের মাধ্যমে একটি সুন্দর পৃথিবীর বাস্তব ধারনা প্রদানের লক্ষ্যে ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ কনক্লেভ একটি অসাধারণ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে। আমরা সেখানে প্যানেল ডিসকাশনে অংশগ্রহণ করে নিজ নিজ দেশের তরুণ উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ সম্পর্কিত নানান তথ্য তুলে ধরেছি, তুলে ধরেছি আমাদের ক্রমবর্ধমান আইটি সেক্টরের সমস্যা এবং সম্ভাবনার কথা। যার মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ, তাদের মনোভাব, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, ব্যবসায়ের ধরন এবং তাদের দেশে আমাদের দেশের উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ের সুযোগ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানার্জনে সক্ষম হয়েছি। আমি মনে করি, আমাদের দেশে এধরনের কনক্লেভ আয়োজন করা গেলে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যেতে এবং তরুণদের আরো বেশি উদ্যোগী হতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে”।

ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ কনক্লেভ এর প্যানেল ডিসকাশন

দেশের স্বাস্থ্যখাতে বিরাজমান জটিলতা নিরসন তথা ডাক্তার এবং রোগীদের ভোগান্তি লাঘবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবাকে সহজতর করার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানিয়ে তিনি বলেন, “সরকারের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং ব্যাংক লোনের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে বিদ্যমান জটিলতা নিরসন করা গেলে তরুণরা আরো বেশি উদ্যোগী হবে”।

তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “উদ্যোগ গ্রহণের আগে তরুণদের উচিৎ যেই বিষয়ে তারা উদ্যোগী হবেন সেই বিষয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করা”।

 

সামির হোসেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here