পঞ্চম এবং অষ্টম শ্রেণীতে বৃত্তি পাওয়া এবং পরবর্তী সব শ্রেনীতে দুর্দান্ত ফলাফল করা মেধাবী দেলোয়ারা সাঈদা কে ঘিরে মুক্তিযোদ্ধা বাবা আবুল কালাম আজাদের স্বপ্ন ছিল “আমার মেধাবী মেয়ে পড়ালেখা শেষ করে বড় চাকুরী করবে।” কিন্তু মেয়ের ভাবনা আলাদা। মেয়ে চেয়েছিল পড়াশোনা শেষ করে আমি এমন কিছু করবো যাতে নিজের পাশাপাশি আর পাঁচ টা মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
তেঁতুলিয়ার কন্যার জন্ম থেকে বেড়ে উঠা সব কিছুই তেঁতুলিয়াতে। পরবর্তিতে ভর্তি হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।পড়াশোনার পাঠ শেষ করে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন রাজশাহীতে।
ঐ যে অনেক আগে থেকে মনের এক কোনে সুপ্ত বাসনা ছিল পড়াশোনা শেষ করে আমি এমন কিছু করব যা দিয়ে নিজের এবং অপরদের ও সহোযোগিতা হয়।কিন্তু পুঁজি কোথায় পাব?পরিবারের কেউ তো পাশে দাড়াবে না আমার।এসকল চিন্তা করে নিজের বিয়ের কিছু গহনা বিক্রি করে দিলেন দেলোয়ারা সাঈদা।
শুরু করলেন কাজ।প্রথম দিকে তিনি হাতে তৈরি গহনা নিয়ে একটি প্রশিক্ষন নেন। কিছুদিন গহনা তৈরি করেন কিন্তু তার বেশি ঝোক ছিল পোশাক তৈরির দিকে। পরবর্তিতে তিনি বুটিকসের কাজ শুরু করেন।এসএমই, বিসিক, বিডা তে প্রশিক্ষণ নেন।তার হাতের কাজ এতই সুনিপুণ ছিল যে প্রথম মাসেই লাভ করলেন ৭০০০টাকা তাও আবার প্রতি পোশাকে মাত্র ১০০টাকা লাভ করে। শুরুতে তিনি থ্রিপিস তৈরি করতেন বর্তমান তিনি ওয়ানপিস, টুপিস, থ্রিপিস, শাড়িসহ বিভিন্ন বুটিক আইটেমে তার প্রতিষ্ঠান অঙ্গশ্রী কে সাজিয়েছেন।
প্রথম দিকে নিজের হাতে সব কিছু তৈরী করতেন।এবং বাসার ছাদে যখন পোশাক গুলো ধুয়ে রোদে শুকাতে দিতেন আশেপাশের বাসার ছাদ থেকে পোশাক গুলো দেখে দেলোয়ারা সাঈদার কাছে অর্ডার করে দিতেন সকলে।এইভাবে চলছিল প্রথম দিকে।বর্তমান তার হাতের যাদু ছরিয়ে পড়েছে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। আজ তার ৩৫০ জন কর্মি।
প্রথম দিকে যে পরিমান অর্ডার পেতেন বর্তমানে তা বহুগুণ বেড়ে গেছে এবং তিনি যে কর্মী গুলো বাছাই করেন সেগুলো অসহায় পরিবার দেখে নির্বাচন করেন।যা একটি মহৎ কাজ।তরুণ দের বলেন “ইচ্ছা এবং ধৈর্য কে পুঁজি করে সামনে এগিয়ে যাও নিশ্চই সফল হবে। “ভবিষ্যতে তিনি অঙ্গশ্রী কে একটি সনামধন্য ব্রান্ড এ পরিনত করার লক্ষ্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা