লড়াই চলেছে অবিরাম। এ যেন কোনো যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে করোনা শত্রুপক্ষ হয়ে হানা দিয়েছে রাজপথ থেকে গৃহকোণে। তাকে রুখতে তাই মাঠে নেমেছেন তারা। প্রাথমিক পর্যায়ে ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ করেছে জেলা ও উপজেলায় ১১২ টি টিম। পথঘাট আর সংক্রমণ ছড়াতে পারে এমন সব জনসমাগমের এলাকায় ছিটানো হয়েছে জীবাণুনাশক।

পরিস্থিতি শঙ্কার দিকে গেলে উদ্যোগে এলো খানিক পরিবর্তন। এবারে ঘর থেকে বের হতে না পারা লকডাউনে থাকা মানুষগুলোর খোঁজ। দু’টো সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে দেশজুড়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তৈরী হলো তালিকা। খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষগুলো, যাদের রোজকার উপার্জনে মিলে প্রতিবেলার আহার কিংবা খানিক সংকটে পরেছে মধ্যবিত্ত পরিবার এই সময়ে মুখ ফুটে বলার উপায় নেই তাদের সকলের কাছেই পৌঁছে যাবে খাবার।

দায়িত্ব ভাগ করে বিত্তশালীরা একে একে নিলেন ৬০ হাজার পরিবারের তালিকা। সারা বাংলাদেশেই বিতরণ করা হবে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। ফান্ড সংগ্রহ করা হয়েছে সমাজের বিত্তবানদের কাছ থেকে। আর এখান থেকেই যোগান হবে প্রতি পরিবারের ৪ মাসের খাবার।

সমাজের বিত্তশালীদের সাথে সংযুক্ত হচ্ছে দুঃস্থ পরিবারগুলো। যারা সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে তাদের সাথে রয়েছে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা। ফলে ত্রাণ সঠিকভাবে পরিবারটি পাচ্ছে কিনা, আরো সহযোগিতার প্রয়োজন আছে কিনা, পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যগত সেবার প্রয়োজন আছে কিনা এই বিষয়গুলো একদিক থেকে যেমন শ্রেণী বৈষম্য ছাড়িয়ে গড়ছে হৃদ্যতার বন্ধন তেমনি ত্রাণসেবা নিশ্চিতকরণ হচ্ছে আরো সহজ।

“সবাই মিলে সবার ঢাকা” এবং বিডি ক্লিনের প্রথম কন্ট্রিবিউশনটি দেন ঢাকা উত্তরের মেয়র জনাব আতিকুল ইসলাম। তার দেওয়া ১০ লক্ষ টাকা অনুদানের পরেই কেউ এগিয়ে এসেছেন দুই টন চাল নিয়ে, কেউবা এক টন ডাল নিয়ে। আবার এমনও হয়েছে অনেকে এগিয়ে এসেছে ৪০ টন চাল-ডাল নিয়ে। সর্বনিম্ন দশ প্যাকেট খাবারও অনেকে পাঠিয়েছেন যা দশটি পরিবারের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য যথেষ্ট।

বিডি ক্লিন ও সবাই মিলে সবার ঢাকা প্রথমত দুঃস্থদের কাছে তাদের সেবা নিশ্চিত করছে। এবং সেই সাথে সামর্থ্যবানদের একটি সুন্দর প্লাটফর্মে এনে দ্রুততার সাথে দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় সকল সামগ্রী বিতরণ করছে চাহিদা থাকা মানুষের কাছে। বিনা পারিশ্রমিকে মাঠে আছে শত শত ভলান্টিয়ার। লক্ষ্য একটাই অভূক্ত থাকবেনা কেউ, খাবার থাকবে প্রতিটি ঘরে, ব্যক্ত করেন ঢাকা উত্তরের মেয়র জনাব আতিকুল ইসলাম।
সাদিয়া সূচনা