দেশজুড়ে খ্যাতি কুড়াচ্ছে নরসিংদীর আনারস

0

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার রাবানে আনারস চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া এ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তারা আবাদি, অনাবাদি জমি এমনকি বাড়িতেও আনারসের চাষ করে থাকেন। রাবানের আনারসের স্বাদ ও গুণগত মানের কারণে আলাদা খ্যাতি রয়েছে। এ মৌসুমে ভাল ফলন পেতে কৃষকদের সব ধরণের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

রাবানের আনারস মানেই রসে ভরপুর আর স্বাদে যেনো অমৃত। শত শত বছর ধরে এই গ্রামে মৌসুমি ফলটির চাষ হচ্ছে। এসব আনারসকে ঘোড়াশাল জাতের বলা হলেও সবাই বলেন, অনবদ্য স্বাদের কারণ রাবান গ্রামের মাটির গুণ।

জানা যায়, আনারস নরসিংদীর চাষিদের প্রধান অর্থকরী ফসল। প্রায় ১৫০ বছর আগে ঘোড়াশালে দেশীয় জাতের আনারসের চাষ হতো, যার এরইমধ্যে বিলুপ্তি ঘটেছে। তারপর প্রায় ৫০ বছর আগে সিলেট থেকে পলাশের রাবানে আনারস আনা হয়। তখন থেকেই এখানে আনারসের চাষ করা হচ্ছে। বর্তমানে সফলতার সাথে এর ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। জলডুগি আনারস নামে পরিচিত হলেও এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘হ্যানিকুইন’। এর স্বাদ খুবই মিষ্টি। জৈষ্ঠ্য মাসের শুরুতেই এর ভরা মৌসুম। তখনই বাজারে পাকা আনরস পাওয়া যায়। আর যারা দেরি করে বাগান করেন তাদের আনারস পাকতে আরো বেশি সময় লাগে।

এ বছর সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় আনারসের ফলন ভালো। তাই লাভের আশা করছেন কৃষক ও পাইকারী বিক্রেতারা। বিভিন্ন এলাকার ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন রাবান এলাকায়।

উপজেলা কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, রাবান, কুড়াইতলী, বিলপাড়, কাটাবের, বরিবাড়িসহ ঘোড়াশাল পৌর এলাকার ভাগদী, রাজাব, খাওগাইর, চামড়াবসহ অনেক স্থানেই আনারসের চাষ করা হয়। চলতি বছর ১৪৫ হেক্টর জমিতে আনারসের আবাদ করা হয়েছে। আনারস উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫০০ মেট্রিক টন।

রাবানের আনারস চাষী সমিরন রায় বলেন, আমি ১০ বিঘা জমিতে আনারস চাষ করেছি। এবার নিয়ে প্রায় ৩২ বছর যাবত এর চাষ করছি। প্রতি বিঘা জমিতে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। ফলন ভাল হলে বিঘাপ্রতি প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকার আনারস বিক্রি হয়।

অন্য কৃষি উদ্যোক্তারা বলেন, এই ফলটি পচনশীল। এর সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে ভাল হতো। এছাড়াও এখনো এখানে সনাতন পদ্ধতিতে আনারসের চাষ করা হয়। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করলে আরো ফলন পাওয়া যেত। আধুনিকতার যুগেও যদি আনারস সংরক্ষণ করা না যায় তাহলে আর কখন হবে!

তারা একটি হিমাগার স্থাপনের জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।

পলাশ উপজেলা কৃষি অফিসার আয়েশা বলেন, চলতি বছর দাবদাহের কারণে সেচ ও বৃষ্টি হয়নি তাই আনারস বাজারজাত হতে দেরি হয়েছে। আমরা পোকামাকড়ের আক্রমণ ও বিভিন্ন রোগবালাই প্রতিরোধে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সহযোগিতা করছি।

সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here