“জয়িতা” । জয়িতা হচ্ছে সমাজের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল নারীর একটি প্রতিকী নাম।
বেগম রোকেয়া দিবস, আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস ও ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক কার্যক্রম উপলক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর “জয়িতা “ সম্মাননা প্রদান করে আসছে। পাঁচটি ক্যাটাগরিতে এ সম্মাননা প্রদান করা হয় দেশব্যাপী।
২০১৯ সালে পাবনা জেলায় অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে জয়িতা সম্মাননা অর্জন করলেন এসএমই ফাউন্ডেশন এর ২০১৯ সালে বর্ষসেরা উদ্যোক্তাদের অন্যতম উদ্যোক্তা সুমনা সুলতানা সাথী।
জয়িতা সাথী অনার্স পড়া অবস্থায় নিজের পছন্দে বিয়ে করে ফেলার পর ভীষণ অর্থনৈতিক কষ্টে পড়লেন সুমনা সুলতানা সাথী। স্বামী মনোয়ার হোসেন রানা অনেক কষ্ট করে সহধর্মিনীকে সহযোগিতা করেছেন লেখাপড়া চালিয়ে যেতে। দিনে অর্ধেক পথ হেঁটে, অর্ধেক পথ বাসে করে গিয়ে কলেজে পৌঁছাতেন প্রাণীবিদ্যা বিভাগে অনার্স এ পড়াশোনা করা তরুণী সুমনা সুলতানা সাথী। স্বামী মনোয়ার হোসেন কবুতর পালতেন। সেই কবুতর বিক্রি করা টাকা দিয়েছেন স্নেহভরে স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন। স্ত্রী পড়াশোনা যাতে সম্পন্ন করতে পারে।
ছোট ফুপু আর মা বাংলাদেশের স্বনামখ্যাত প্রতিষ্ঠান আড়ং এর সাথে ব্যবসা করতেন। মায়ের কাজ দেখে সাথীও কাজ শিখে ফেলেছিলেন বেশ ভালোভাবেই। পড়াশোনা আর সংসারের খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন সাথী। তখন মা আর ফুফুর কাছ থেকে কাপড় এবং সুতা নিয়ে বানালেন ৪টি কুশন। ভীষণ দৃঢ় মনোবল নিলেন, কাজ করবেন, হবেন উদ্যোক্তা। মাত্র দুজন কর্মী নিয়ে পাবনার ভাঙ্গুরায় ছোট্ট পরিসরে এস আর হ্যান্ডিক্রাফটস এর পথ চলা হলো শুরু। শুরুটা মোটেও সহজ ছিলো না। ভীষণ কষ্ট করে দিনরাত পরিশ্রম আর খাটুনি দিয়ে কাজের মান উন্নত করবার চেষ্টা করতে থাকলেন উদ্যোক্তা এবং সফল হলেন।
প্রত্যন্ত গ্রামে নিবন্ধিত ৬০০শ’রও বেশি নারীদের ট্রেনিং দিয়ে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলেছেন আজ উদ্যোক্তা সাথী। নিয়মিত তাদেরকে কাজ দিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির পথে।
এসএমই উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ জাতীয় আসরে ২০১৯ সালে হয়েছেন বর্ষসেরা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। জয়িতা সম্মাননা নারী উদ্যোক্তা সুমনা সুলতানা সাথীর কর্মভুবনকে আরও গতিশীলতা এনে দিলো।
ডেস্ক রিপোর্ট উদ্যোক্তা বার্তা