ছাত্রজীবনেই উদ্যোক্তা নোশিন আতিয়া

0
উদ্যোক্তা নোশিন আতিয়ার

রায়া’র স্বত্ত্বাধিকারী নোশিন আতিয়া। কাজ করছেন হাতে তৈরি এবং রেডিমেড মেটালের গয়না নিয়ে। রাজশাহীসহ দেশের অনেক জেলা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রবাসী বাংলাদেশী ও উদ্যোক্তা নোশিন আতিয়ার ক্রেতা। চার বছরের ব্যবধানে রায়াতে ৮০ শতাংশই রিপিট কাস্টমার। রায়া’র মেটালের তৈরি গয়না আর চুড়ি যেন বাঙালি নারীর সাজ-সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ।

বান্ধবী নাবিলা নওরিনের কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১৮ সালে হাতখরচ থেকে ৩০০ টাকা জমিয়ে উদ্যোক্তা জীবনে আসেন নোশিন আতিয়া। সেসময় তার অনলাইনে পেজ ছিলো ‘শঙ্খনীল’ নামে। ২০২০ সালে নামটি পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানের নাম রাখেন ‘রায়া’। বিভিন্ন ধরনের মেটালের গয়না যেমন মালা, কানের দুল, নথ, চুড়ি, আঙটি রয়েছে রায়াতে। এছাড়াও রয়েছে  তাঁতের শাড়ি ও হাতির দাঁতের খোঁপার কাটা।

মেটালের তৈরি গয়নাগুলো মূলত তৈরি হয় দস্তা, পিতল, কপার দিয়ে। আর তাতে যোগ করা হয় পুঁতি, পাথর, বাঁশ, সুতা, পাট, কাপড়সহ বিভিন্ন উপাদান যা এই ধরনের গয়নার সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। শাড়ি, কামিজ, ফতুয়া এবং টপস-স্কার্টসহ সব ধরনের পোশাকের সঙ্গেই দারুণ মানায় বলে মেটালের নানা রঙ ও ডিজাইনের অলঙ্কারের চাহিদাও একটু বেশি। আর বিভিন্ন উৎসবের এসব গয়নার তুলনা নেই। এটি একদিকে বাহ্যিক সৌন্দর্য্য যেমন বাড়িয়ে দেয় তেমনি রুচির একটি বিশাল উদাহরণ হিসেবেও রেখে যায়।

উদ্যোক্তা বার্তাকে নোশিন আতিয়া বলেন, “বান্ধবী নাবিলা নওরিন আমাকে বলেছিল চল আমরা কোন কাজ শুরু করি। আমি সেসময় ওর কথায় সাড়া দেইনি। কিছুদিন পর দেখলাম ও কাঠের গয়না নিয়ে কাজ করছে। বেশ ভালো কাজ করছে। তখন আমার মনে হলো আমিও চেষ্টা করতে পারি। তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এভাবেই মেটালের গয়না নিয়ে আমার পথচলা শুরু।”

উদ্যোক্তা জীবনে পরিবারের সাপোর্ট বড় ভূমিকা রাখে। তার পরিবারের সদস্যরা চাকরিজীবী। তারা সবসময় চাইতেন পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করবেন। পড়াশোনার পাশাপাশি গয়না নিয়ে কাজ করায় পরিবারের সদস্যরা শুরুতে একটু ভয় পেতেন কারণ এতে যদি পড়াশোনার ক্ষতি হয়। সব বাবা-মা সন্তানের পড়াশোনা নিয়ে যেমন উদগ্রীব থাতেন, তারাও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। তবে তিনি সবকিছুতে ব্যালেন্স করে এগিয়ে গেছেন, পরিবারের সদস্যরাও সমর্থন যুগিয়েছেন।

সম্প্রতি বিসিক ক্রেতা-বিক্রেতা সম্মিলন ২০২২ এ অংশ নিয়েছিলেন নোশিন। প্রথমবার অংশ নেওয়া এই মেলার অভিজ্ঞতা বেশ ভালোই ছিল তার। প্রতিষ্ঠানে পণ্য তালিকা বাড়াতে বর্তমানে রাজশাহী মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ব্লক-বাটিক বিভাগে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তিনি। নিজেই এখন পর্যন্ত গহনা তৈরির সামগ্রী সংগ্রহ থেকে শুরু করে সবটা সামলান। তবে তার বোনেরাও তাকে সহযোগিতা করেন, পাশে থাকেন সবসময়ই।

উদ্যোক্তার জন্ম থেকে বেড়ে উঠা রাজশাহী নগরীতেই। অবশ্য বাবার চাকরির সুবাদে কিছু সময় রাজশাহীর বাইরে কাটাতে হয়েছে। বর্তমান দেশ সেরা রাজশাহী কলেজের বাংলা বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত রয়েছেন নোশিন আতিয়া। আগামীতে উদ্যোগের পরিসর বাড়িয়ে অনেক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান সিল্কসিটির তরুণ উদ্যোক্তা নোশিন আতিয়া।

তামান্না ইমাম
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here