গ্রামের দীনহীন খেটে খাওয়া দরিদ্র বাবা শেষ সম্বল জমি টুকু বন্ধক রেখে, অনেকের সাহায্য নিয়ে বিয়ে দেন মেয়েকে। বছর না ঘুরতেই মেয়ে যৌতুকের অত্যাচারে ফেরত আসেন বাপের বাড়ি। এমন দৃশ্যপট আপনার সামনে ভেসে উঠবে খুব সহজেই।
সমাজের এমন অবহেলিত নারীদের এই বঞ্চনার হাত থেকে রক্ষার জন্য তাদের স্বাবলম্বী করতে, আইনগত ব্যবস্থাপনা, সামাজিক সচেতনতা, দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন, নারীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, নির্যাতনের শিকার নারীর সুরক্ষা সেবা, প্রতিকার এবং পুনর্বাসন এর ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন উদ্যোক্তা কোহিনূর ইয়াসমিন কাজ করছেন ইউএন উইমেন বা জাতিসংঘ লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতাবিষয়ক সংস্থার সাথে।
ইউএন উইমেন জাতিসংঘের অধীনে একটি সংস্থা যা নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে এই সংস্থাটি কাজ শুরু করে। ইউএন উইমেন জাতিসংঘ উন্নয়ন গ্রুপের একটি সদস্য।
আজ আন্তর্জাতিক নারী মানবাধিকার সুরক্ষা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ১৬ কর্মদিবসের ৪র্থ দিন পালন হয় মিরপুর মাজার রোড উদ্যোক্তা কোহিনুর ইয়াসমিনের ফ্যাক্টরি এবং অফিসে। যেখানে কাজ করেন শত শত অসহায় নারী।
ইউএন উইমেন প্রায় ২০০ নারী কর্মীর প্রশিক্ষণ এবং সেবা দিতে চায় উদ্যোক্তা কোহিনূরের সহায়তা নিয়ে। যেখানে কর্মীরা তার পছন্দ অনুযায়ী কাজের প্রশিক্ষণ পাবেন থাকা-খাওয়ার সুন্দর বন্দোবস্ত হবে এবং পরবর্তীতে তারা একটি কাজের সন্ধানও পাবেন।
সকাল দশটা থেকে শুরু হয় এই অনুষ্ঠান যেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউএন উইমেনের সম্মানিত প্রতিনিধিরা। এলাকার শিক্ষক, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ শত শত নারী কর্মী। দুই ভাগে সম্পূর্ণ হয় অনুষ্ঠানটি এবং সেখানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে নারী সচেতনতাকে ফুটিয়ে তোলা হয়।
উদ্যোক্তা কোহিনুর ইয়াসমিন বলেন, “প্রতিটি নারী হবে স্বাবলম্বী, তারা নিজের প্রাপ্যটুকু বুঝে নেবে, তার মাথা তুলে বাজারে সম্মানের সাথে চলবে। সেই লক্ষ্যেই আমার এই প্রচেষ্ঠা। জানিনা কতটুকু করতে পেরেছে বা পারছি তবে আমার এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে”।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই উদ্যোক্তা প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন চারবার। তিনি প্রায় দুই যুগ যাবত বাংলাদেশের সোনালী আঁশ পাট পণ্য নিয়ে কাজ করছেন।
বিপ্লব আহসান