স্বল্পপ্রজ কবি হেলাল হাফিজ তার জনপ্রিয় কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’;- এ কবিতার দুটি পংক্তিতে লিখেছেন ‘‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’’।

বৈশ্বিক মহামারী করেনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশেও অন্যরকম এক যুদ্ধে নেমেছে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনা সদস্যসহ নানা সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠান।

ঠিক তেমনি করোনা ক্রান্তিলগ্নে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার তামাই গ্রামে মেহনতি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এলাকার তামাই ক্লাব লিমিটেডের একঝাঁক তরুণেরা।

করোনাভাইরাস সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে গেছে সিরাজগঞ্জ বেলকুচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার তাঁত কারখানা। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন মালিকেরা। বিপাকে পড়েছেন এই শিল্পের ওপর নির্ভর করা হাজারো মেহনতি মানুষ। কাজ না থাকায় টানাপোড়েনের সংসারে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটছে তাদের।

বেলকুচি থানার তামাই গ্রামে প্রায় ৩৫ হাজার লোকের বসবাস। আর বহিরাগত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজার। তাদের প্রত্যেকে তাঁতশিল্পের সঙ্গে জড়িত।

মেহনতি মানুষের অসহায়ত্ব ও দুর্দিনে তিন হাজার অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন তামাই ক্লাব লিমিটেডের একঝাঁক তরুণেরা। তারা পাঁচদিনের খাবার সু্বিধাবঞ্চিত মানুষের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন।

প্রতি প্যাকেটে রয়েছে- আট কেজি করে চাল, এক কেজি করে ডাল, এক লিটার করে তেল, এক কেজি করে পেঁয়াজ, এক কেজি লবণ ও একটি করে সাবান।

তরুণদের একটি দল বেশ কয়েকদিন ধরেই রাতে নিজেরাই প্যাকেট করে খাদ্য দ্রব্য পৌঁছে দিচ্ছেন অভুক্ত মানুষদের দরজায়। যেসব তরুণেরা নিজেরা একটু স্বাবলম্বী তারাই নিজস্ব অর্থায়নে তিন হাজার পরিবারের কাছে ইতিমধ্যে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় অনুপ্রাণিত হয়ে রিশাদ মোরর্শেদ, ইলিয়াস হোসেন ওয়াসিম, আরাফাত মুসুল্লী, এনামুল কবীর রিফাত মিলে তামাই ক্লাবের পক্ষ থেকে মেহনতি মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।

জানতে চাইলে তামাই ক্লাব লিমিটেডের আহবায়ক রিশাদ মোরর্শেদ উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, আমরা বন্ধুরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক অভুক্ত সু্বিধাবঞ্চিত ও মেহনতি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। সমাজে আরো অনেক বিত্তশালী সম্পদশালী লোক আছেন, তারাও যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে মানুষগুলো অন্তত ডাল, ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবেন। আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে যতটুক সম্ভব এ সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাব।

খাদ্য সামগ্রী বিতরণে একটু ভিন্নতা এনেছেন ওই ‍যুবকরা। সবাই যখন বিতরণের সময় ফটোসেশনে ব্যস্ত থাকেন, সেখানে এ যুবকরা যাদের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন, তাদের কারো ছবি তোলেননি। তাদের সম্মানের কথা চিন্তা করেই এই কাজটি করেন অদম্য তরুণেরা।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here